ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

নারী শেরপা হিসেবে নতুন উচ্চতায় ইয়াংজুম

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ২১ জানুয়ারি ২০১৮

নারী শেরপা হিসেবে নতুন উচ্চতায় ইয়াংজুম

সুইজারল্যান্ডের পর্বতারোহী গাইডদের আন্তর্জাতিক সংস্থা গতমাসে ২৭ বছরের এক নারী শেরপাকে সনদপত্র দিয়েছে। নেপালী এই নারী শেরপার নাম দাওয়া ইয়াংজুম। ইয়াংজুম সুইজারলান্ডে পর্বতারোহীদের জন্য প্রণীত কঠোর প্রশিক্ষণ কর্মসূচী সুচারুভাবে সম্পন্ন করায় এই সনদপত্রের অধিকারী হয়। পর্বতারোহণের ক্ষেত্রে এই সনদের গুরুত্ব এত বেশি যে এটি পর্বতারোহীদের ডক্টরেট ডিগ্রী (পিএইচডি) বলা হয়। খবর- এএফপি। সারা বিশ্বে প্রায় ছয় হাজার পর্বতারোহী এই সনদপত্র পেয়েছেন, কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে যে, নেপালের মাত্র ৫০-এই সনদের অধিকারী হয়েছে। অথচ দারিদ্র্যপীড়িত দেশটির রাজস্বের একটি বড় অংশ আসে পর্বতারোহণের খাত থেকে। এই দেশের শেরপারা ঐতিহ্যগতভাবে পর্বতারোহণের সঙ্গে জড়িত। পর্বতারোহণের গাইড হিসেবে শেরপাদের সুখ্যাতি বহুদিনের। প্রথম এভারেস্টশৃঙ্গ বিজয়ী এডমন্ড হিলারি শেরপা তেনজিংকে তার গাইড হিসেবে বেছে নেন। হিমালয়ের কোল ঘেঁষে বেঁচে থাকা এই শেরপা জনগোষ্ঠী প্রাকৃতিক ও পারিপার্শ্বিক কারণেই খুব কষ্টসহিষ্ণু এবং তারা পর্বতের অতি উচ্চ অবস্থানে থেকে অল্প অক্সিজেন গ্রহণ করে বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু এতদিন ধরে শেরপাদের মধ্যে কেবল পুরুষরাই পর্বতারোহণের গাইড বা পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করে আসছে। তাই একজন নারী হিসেবে ইয়াংজুম পর্বতারোহণকে নিজের পেশা বেছে নিতে চাইলে- তার আশপাশের মানুষই সংশয় প্রকাশ করে বলে যে, ‘এই কষ্টকর ও বিপদসঙ্কুল কাজ’ মেয়েদের জন্য নয়। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব মাউন্টেন গাইডের এই সনদপত্র পেয়ে ইয়াংজুম প্রমাণ করেছেন যে, প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে একজন নারীও অসাধ্য সাধনের ক্ষমতা রাখে। নিজের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে এই নারী শেরপা বলেন যে, আত্মীয়স্বজন বা পারিপার্শ্বিক অনেকে পর্বতারোহণের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করলেও- তার পরিবার কখনও তাকে নিরুৎসাহিত করেনি। প্রথম দিকে অপেক্ষাকৃত অল্প উচ্চতায় পাহাড়ী পথে তিনি পর্বতারোহীদের পথ দেখিয়ে নেয়ার কাজ করতেন। তার বয়স যখন ১৭ তখন থেকে তিনি এ কাজে জড়িয়ে পড়েন। তার পর থেকে পর্বতারোহণ তার রক্তে যেন নেশা ধরিয়ে দেয়। এর পর পর্বতের সুউচ্চ অবস্থানে পৌঁছার বাসনা তার মনে জেগে উঠে।
×