ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বেসরকারী বিমান ভাড়া নিয়ে কেলেঙ্কারি ॥ ট্রাম্প ক্ষুব্ধ

অবশেষে টম প্রাইসের পদত্যাগ

প্রকাশিত: ০৩:২৫, ১ অক্টোবর ২০১৭

অবশেষে টম প্রাইসের পদত্যাগ

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী টম প্রাইস শুক্রবার পদত্যাগ করেছেন। সরকারী কাজে ব্যয়বহুল বেসরকারী বিমান ভাড়া ব্যবহার করার অভিযোগ ওঠার পর প্রাইস পদত্যাগ করলেন। জনগণের অর্থে বিলাসিতা দেখিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে অবশেষে পদত্যাগ করতে হলো তাকে। খবর বিবিসি অনলাইনের। সরকারী কাজে অনেক অর্থ খরচ করে বেসরকারী বিমান ভাড়া করে গিয়েছিলেন প্রাইস; যা ক্ষুব্ধ করেছিল তার নিয়োগকর্তা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ট্রাম্প তার অসন্তোষের কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমি খুশি হতে পারিনি। বুঝলেন, একদমই খুশি হতে পারিনি। এর পরপরই শুক্রবার প্রাইসের পদত্যাগের ঘোষণা আসে। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস জানায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বাস্থ্যমন্ত্রী টম প্রাইসের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন এবং ডন জে রাইটকে ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। ডন রাইট বর্তমানে ডেপুটি সহকারী স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য ও জনসেবা মন্ত্রী টমাস প্রাইস পদত্যাগের ইচ্ছা জানালে প্রেসিডেন্ট তা অনুমোদন করেন। কংগ্রেসের সাবেক সদস্য প্রাইস সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্বাস্থ্যনীতি (যা ওবামাকেয়ার নামে পরিচিত) বদলে দেয়ার মূল রূপকার ছিলেন। ব্যয়বহুল ফ্লাইটের সমালোচনা ওঠার পর প্রাইস বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, বিমান ভাড়া করে যাওয়ার জন্য সরকারের যে ৫২ হাজার ডলার খরচ হয়েছে, তা তিনি মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু তাতেও ট্রাম্প যে সন্তুষ্ট হতে পারেননি, তা স্পষ্ট। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন সেন্টারস ফর মেডিকেয়ার এ্যান্ড মেডিকেইড সার্ভিসের পরিচালক সীমা বার্মা, যিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত। ফুড এ্যান্ড ড্রাগ এ্যাডমিনস্ট্রেশনের কমিশনার ডাঃ স্কট গোটিলিয়েবের নামও আলোচনায় রয়েছে। তবে দুজনের মধ্যে গোটিলিয়েব এগিয়ে রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রের উদ্ধৃতিতে জানা গেছে। টম প্রাইসের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, গত মে মাস থেকে তিনি ২৬টি প্রাইভেট ফ্লাইটে ভ্রমণ করেন। যাতে অন্তত চার লাখ মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে পেশাগত কাজে সরকারী কর্মকর্তাদের বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ভ্রমণের নিয়ম রয়েছে। শুধু জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা এ নিয়মের বাইরে। অবশ্য প্রইস তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ ধরনের খরচে তিনি খুব অখুশি হয়েছেন বলে জানান। গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর ঝামেলা ট্রাম্পের পিছু ছাড়ছেই না। প্রাইসের কেলেঙ্কারি ও পদত্যাগ তার সরকারের ওপর নতুন আঘাত। এর আগে জাতীয় নিরাপত্তা দফতরের মন্ত্রী জন কেলিও পদত্যাগ করেন। ওই পদেও কাউকে এখনও স্থায়ীভাবে না নেয়ার আগেই আরেকটি দফতরের শীর্ষ ব্যক্তি খুঁজতে হচ্ছে ট্রাম্পকে। ট্রাম্প প্রশাসনের আরও তিন কর্মকর্তা সরকারী কাজে ভাড়া করা বিমান ব্যবহারের জন্য সমালোচিত। তাদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রায়ান জিনকে গত জুন মাসে লাস ভেগাস থেকে মন্টানায় যেতে সরকারী তহবিলের ১২ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয় করেছিলেন। অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মনুচিন গত মাসে সূর্যগ্রহণ দেখতে স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন বিমান ভাড়া করে। এছাড়া পরিবেশ দফতরের প্রধান স্কট প্রুইটের একটি সফরে ৫৮ হাজার ডলার খরচ গুনতে হয়েছে সরকারকে।
×