উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু ধ্বংসযজ্ঞের হুমকি পাল্টা হুমকির পর দক্ষিণ কোরিয়ায় সোমবার থেকে অনুষ্ঠেয় সিউল ও ওয়াশিংটনের বার্ষিক যৌথ সামরিক মহড়া সকলের দৃষ্টি কাড়বে এবং উত্তেজনা আবারও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। বিশ্লেষকরা এ কথা বলেছেন। খবর এএফপির।
পিয়ংইয়ং গত মাসে দুটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) পরীক্ষা চালিয়েছে। এ ক্ষেপণাস্ত্র যুুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম বলে মনে করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এতে উত্তর কোরিয়ার ওপর সর্বাত্মক হামলা চালানো হতে পারে বলে সতর্কতা উচ্চারণ করেন। পিয়ংইয়ং এরপর মার্কিন ভূখ- গুয়াম লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার হুমকি দেয়। উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন এ সপ্তাহে তারা গুয়াম হামলা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করলেও সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, ওয়াশিংটনের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর তা নির্ভর করে। উলচি ফ্রিডম গার্ডিয়ান (ইউএফজি) নামে যে যৌথ সামরিক মহড়া সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সে বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার প্রতিক্রিয়া বেশ গুরুত্ব বহন করে পরবর্তী ঘটনা কী ঘটবে তার ওপর। চীনা আক্রমণকারীদের হাত থেকে প্রাচীন কোরীয় রাজ্য রক্ষাকারী এক জেনারেলের নাম অনুসারে রাখা এ বার্ষিক মহড়া ইউএফজিয়ে অংশ নেবে প্রায় ৫০ হাজার দক্ষিণ কোরীয় সৈন্য ও ২৫ হাজার মার্কিন সৈন্য। কিন্তু পিয়ংইয়ং মনে করছে তাদের নিজস্ব ভূখ-ে হামলা চালানোর জন্য এটা এক আক্রমণাত্মক মহড়া। উত্তর কোরিয়া বলেছে, ওয়াশিংটন অসংযত কর্মকা-ের আশ্রয় নিলে গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সম্ভাবনা রয়েছে এবং বিশ্লেষকরা বলেছেন, এ মহড়া বিপদাশঙ্কার একটা চরম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। কার্নেজি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের পরমাণু নীতি কর্মসূচীর সহপরিচালক জেমস এ্যাক্টন বলেছেন, আমি উদ্বিগ্ন যে, যৌথ মহড়া শুরু হলে পিয়ংইয়ংয়ের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হতে পারে। উত্তর কোরিয়া এর পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী বন্ধ করার বিনিময়ে সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে বড় ধরনের যৌথ সামরিক মহড়ার অবসানের জন্য আহ্বান জানিয়ে এসেছে বারবার। ম্যাসাচুসেট ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক বিপিন নারাং অন্য এক সন্দেহ পোষণ করে বলেছেন, মহড়া বাতিল করা হলে সহযোগীদের বিচ্ছিন্ন করার এবং দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কে প্রতিবন্ধক সৃষ্টির উত্তর কোরিয়ার উদ্দেশ্য ফলপ্রসূ হবে। এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি স্টাডিজের চৌহ ক্যাং বলেছেন, যুদ্ধ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য এ মহড়া অনুষ্ঠান অত্যাবশ্যক।