ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শাসনতান্ত্রিক শূন্যতা প্রভাব বিস্তারের সুযোগ এনে দিয়েছে জঙ্গীদের

ইয়েমেনে জঙ্গী উত্থান থামছে না

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ১৫ মার্চ ২০১৬

ইয়েমেনে জঙ্গী উত্থান থামছে না

ইয়েমেনে প্রতিদ্বন্দ্বী আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গীদের তৎপরতা বেড়ে চলেছে। দেশটিতে সরকারের অনুপস্থিতি ও সরকারপন্থী আরব জোট বাহিনী থেকে সামান্য বিরোধিতার জন্য জঙ্গীদের উত্থান হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। খবর এএফপির। এক বছর আগে ইরানের মদদপুষ্ট শিয়া বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে প্রথমবারের মতো প্রচারণা শুরু হয়েছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন সুন্নি জোট যুদ্ধবিমান থেকে এ সপ্তাহান্তে এডেনে জঙ্গীদের লক্ষ্য করে হামলা শুরু করেছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন এ ধরনের কার্যক্রম স্বল্পস্থায়ী হতে পারে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলে জঙ্গীদের উত্থান অপ্রতিরোধ্য হয়ে যেতে পারে। ইয়েমেনের দ্বিতীয় শহর ও অস্থায়ী রাজধানী এডেনে গত তিন মাসের সংঘর্ষে এক শ’ ৫০জন লোক নিহত হয়েছে। যেখানে জঙ্গীদের নিয়ন্ত্রিত কিছু এলাকায় কর্তৃপক্ষ ও জোট বাহিনীর প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে। সরকারের সমালোচকরা জঙ্গীদের উত্থানের জন্য কর্মকর্তাদের দায়ী করেছেন। তাদের মতে, কিছু কর্মকর্তা জঙ্গীদের সহযোগিতা করছে এবং কখনও কখনও তাদের অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে। তবে এক পশ্চিমা সামরিক বিশেষজ্ঞ বলেন, দক্ষিণ ইয়েমেনের জঙ্গী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্প্রতি পুনর্স্থাপিত রাষ্ট্রের মধ্যে কোন জোট নেই। সেখানে সহাবস্থানের কোন সুযোগ নেই। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে হুতি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানার ক্ষমতা দখল করার পর দেশের সকল ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। ইরানের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে সৌদি আরব। গত মার্চে সৌদি আরব বিমান হামলা চালানো শুরু করে হুতিরা দক্ষিণাঞ্চলে অগ্রসর হতে থাকলে। সেখানে প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর হাদি আশ্রয় নিয়েছিল। হাদির প্রশাসন এডেনসহ দক্ষিণাঞ্চলীয় পাঁচটি প্রদেশে পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে। গত গ্রীষ্মে এডেন শহরটি বিদ্রোহীদের থেকে পুর্নদখল করা হয়। বর্তমানে সেখানে আরব উপদ্বীপের আল কায়েদা (একিউএপি) ও আইএস তাদের প্রভাব বিস্তার করছে। গত মাসে একটি ইন্টরন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, একিউএপি ও আইএস যুদ্ধের প্রধান সুবিধাভোগী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। দু’টি সুন্নি জঙ্গী গোষ্ঠী আদর্শগতভাবে শত্রু শিয়া হুতিদের বিরুদ্ধে কাজ করছে। হুতিরা হাদি সরকারকে উৎখাত করেছে। দু’পক্ষই তাদের যোদ্ধাদের সেখানে নিয়োগ দিয়েছে। অস্ত্র ও সম্পদে সরাসরি কতৃত্ব বজায় রাখতে হুতিদের বিরুদ্ধে একিউএপি ও আইএস গতি সঞ্চার করেছে। যেজন্য হুতিরা প্রতিনিয়ত পিছু হটছে। এদিকে ইয়েমেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী এডেনে শনিবার রাতে পুলিশের সঙ্গে আল কায়েদার সংঘর্ষে ও জোট বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১২ জঙ্গী ও দুই পুলিশ নিহত হয়েছে। নিরাপত্তা সূত্রগুলো জানিয়েছে, তাদের সহায়তায় সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী জঙ্গী বিমান ও এ্যাপাচি হেলিকপ্টার থেকে চার দফা বিমান হামলা চালিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নতুন চেক পয়েন্ট বসানোর পর বন্দর নগরীর আবাসিক এলাকা মানসুরায় এ সংঘর্ষ ঘটে। আল কায়েদার পতাকাবাহী বেশ কয়েকজন বন্দুকধারী ওই পুলিশকে পিছু হটিয়ে ওই এলাকায় ঢুকতে চেষ্টা করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। হামলাকারীরা মুখোশ পরে ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, বিমান থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো একটি অফিস ও জিহাদীদের একটি অস্ত্রাগারে আঘাত করেছে। জিহাদীরা একটি এ্যাপাচি হেলিকপ্টারকে লক্ষ্য করে গুলি করার পরই বিমান হামলা চালানো হয়। নগরীর উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়েছে।
×