
ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের অবরোধে বিপর্যস্ত গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ খাদ্যসংকটের মধ্যে এবার ‘পরিকল্পিতভাবে অনাহারে রাখার নিষ্ঠুর কৌশল’ এর বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। এক আবেগঘন বিবৃতিতে সংগঠনটি গাজার শিশু ও সাধারণ মানুষের প্রতি চালানো মানবতাবিরোধী নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
হামাস বলেছে, মার্চ মাসের শুরু থেকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার গাজায় এমন এক অবরোধ আরোপ করেছে, যা পরিকল্পিতভাবে মানুষের খাবার ও ওষুধের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। নেতানিয়াহুকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যা দিয়ে হামাস বলেছে, যিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, তার নেতৃত্বেই গাজার লাখো মানুষের জীবনের সঙ্গে এমন নিষ্ঠুর খেলা চলছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজার শিশুদের ওপর চালানো এই ‘নৃশংস অপরাধ’ যেখানে অনাহারে মৃত্যু, নির্বিচারে বোমা হামলা এবং গণহত্যা নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে তা শুধু মানবিক নীতিমালার নয়, বরং গোটা সভ্যতার বিবেকের বিরুদ্ধে লঙ্ঘন।
হামাসের ভাষায়, ইসরায়েল এসব ভয়ংকর অপরাধ করছে জেনে-বুঝেই, কারণ তারা বিশ্বাস করে, কোনো আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে না।
এই অবস্থায় হামাস বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, এখন নীরব থাকার সময় নয়। গাজার শিশুদের কান্না, মায়েদের শোক আর অনাহারে জর্জর মানুষের অসহায়তা বিশ্বকে আর উপেক্ষা করা চলবে না। এই ‘চলমান অনাহারের অপরাধ’ রুখতে অবিলম্বে মানবিক, কূটনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
গাজায় চলমান মানবিক সংকটের বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘসহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও বাস্তবে পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন ঘটেনি। হামাসের এই বিবৃতি সেই চাপ আরও বাড়াল, যার মাধ্যমে বিশ্বকে আরেকবার চোখ মেলাতে বাধ্য করা হলো গাজার অসহায় বাস্তবতার দিকে।
সূত্র:আল-জাজিরা
আফরোজা