
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমানে সন্তান জন্মদানে সমস্যার জন্য অনেক দম্পতি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন। চিকিৎসকদের মতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে মেয়েদের দোষারোপ করা হলেও, বাস্তবে পুরুষদের সমস্যাই অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
একজন চিকিৎসক জানান, তাঁর চেম্বারে প্রতিদিনই বহু রোগী আসেন সন্তান জন্মদানে সমস্যা নিয়ে। তিনি বলেন, “অনেক দম্পতি আছেন যারা ১০-১২ বছর ধরে বিবাহিত, কিন্তু সন্তান হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে আমরা দেখি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমস্যাটি পুরুষদের শরীরেই নিহিত থাকে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পুরুষের সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো – মানসিক চাপ, অনিয়মিত জীবনযাপন এবং শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশের কর্মজীবনে নিয়মিত চাপ থাকে, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ডিউটি, এর মধ্যে বিশ্রাম নেই। দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ পুরুষের হরমোন ভারসাম্যে প্রভাব ফেলে।”
শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির কথাও গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেন তিনি। “আজকাল অনেকেই ফরমাল পোশাক পরে বাইরে বের হন। জুতা, মোজা, ফুল প্যান্ট পরে থাকায় শরীরের বিশেষ করে গোড়ালির অংশে রোদ লাগে না। অথচ ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকেও রোদে গোড়ালি খোলা রাখা উপকারী বলা হয়েছে। সূর্যের আলো না পেলে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয় না, যা প্রজনন সক্ষমতার জন্য জরুরি।”
তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণকেও তিনি একটি বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। ধূমপান পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপন পদ্ধতিও গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই না জেনে গরমে বা শীতে পুদিনা পাতার জুস খান। অথচ পুদিনা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
তিনি জানান, কিছু খাবার আছে যা টেস্টোস্টেরন বাড়াতে সহায়ক। এর মধ্যে রয়েছে ডিম, দুধ, বিভিন্ন প্রকার প্রোটিন, আনার (বেদানা), তরমুজ (বিচিসহ), বাদাম, আখরোট এবং সামুদ্রিক মাছ।
তিনি আরও বলেন, “মানসিকভাবে চাপমুক্ত থাকা, হাসিখুশি থাকা, এবং প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করাও পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কোনো কিছু অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণ হলে, সেটা অবশ্যই কাউকে জানিয়ে শেয়ার করা উচিত।”
সন্তান জন্মদানে সমস্যার সমাধানে শরীরচর্চা, পুষ্টিকর খাবার, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস এবং মানসিক প্রশান্তিই হতে পারে মূল চাবিকাঠি।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/vdbMX0hNS4I?si=vzqL70PR0cVNalAV
এম.কে.