বয়স্ক ডায়বেটিক রোগীদের বেশিরভাগই কাঁধের ব্যথায় ভুগে থাকেন। যার মূল কারণ এ্যাডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিস যা পরবর্তীতে কাঁধের জয়েন্টকে শক্ত করে ফেলে যার ফলে ক্রমান্বয়ে রোগী হাত উপরে উঠাতে পারে না, পিঠের দিকে নিতে পারে না, জামা-কাপড় পরতে পারে না এমনকি মাথা আঁচড়াতেও পারে না। এই অবস্থাকে মেডিক্যাল পরিভাষায় ফ্রোজেন সোল্ডার বলা হয়।
কারণ-
এটি অনেকগুলো কারণে হতে পারে। যেমন-
(১) হাত দিয়ে ভারি কিছু উঠাতে যেয়ে একটু ব্যথা পেয়েছে কিন্তু অতটা গুরুত্ব দেয়া হয়নি পরবর্তীতে দেখা যাচ্ছে ক্রমান্বয়ে কাঁধের ব্যথা বাড়ছে পাশাপাশি কাঁধের মুভমেন্ট কমে যাচ্ছে।
(২) অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় রোগীর সারভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস বা ঘাড়ের ক্ষয় রোগ আছে যার ফলে ঘাড় থেকে হাতে ব্যথা চলে আসে এবং এই ব্যথার কারণে রোগী হাতের নড়াচড়া কমিয়ে দেয় এবং ক্রমান্বয়ে জয়েন্টটি শক্ত হয়ে যায়।
(৩) অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ভ্রমণের সময় বাসে কিংবা গাড়িতে যাত্রাকালীন এক বড় ধরনের ব্রেক করা হলে যাত্রী তার ব্যক্তিগত সাপোর্টের জন্য হাত দিয়ে শক্ত করে গাড়ির হাতল ধরে থাকে এবং ব্যথা পায় যা পরবর্তীতে কাঁধ ব্যথার কারণ হয়ে থাকে।
(৪) তাছাড়াও বয়স চল্লিশের উপরস্থলে যেমন আমাদের ডিজেনারেটিভ প্রবলেম শুরু হয় তেমনি জয়েন্টের অভ্যন্তরীণ সাইনোভিয়াল ফ্লুইড কমে যেতে থাকে। তার ফলে কাঁধে ব্যথা হতে পারে।
রোগ নির্ণয়-
এই ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে রোগীর ইতিহাস জানা খুবই জরুরী। পাশাপাশি আক্রান্ত কাঁধের এক্সরে করা প্রয়োজন পড়ে।
করণীয়-
এই রোগটি ডায়বেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশি হয়ে থাকে। সেহেতু ডায়বেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের ব্যথানাশক ওষুধ যথা সম্ভব পরিহার করা উচিত। তবে মাংসপেশি রিলাক্স করার জন্য মাসল রিলাক্সেন জাতীয় ওষুধের প্রয়োজন পড়ে। পাশাপাশি রোগীর সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন সঠিক ও সময়োপযোগী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। এই রোগটি সঠিকভাবে চিকিৎসা না হলে রোগীর কাঁধের মাংসপেশি ক্রমান্বয়ে শুকিয়ে যায়, দুর্বল হয়ে যায় এবং কিছু মাংসপেশি শক্ত হয়ে যায়, ফলে এমন সময় রোগী হাত উঠাতেই পারে না। এমতাবস্থায় রোগী ও রোগীর পরিবারের লোকজন খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এই রোগের চিকিৎসায় কিছু ইলেকট্রোথেরাপিউটিক এজেন্ট যেমন-আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথেরাপি ও ম্যানুয়াল থেরাপির মধ্যে স্লোল্ডার মোবিলাইজেশন এক্সারসাইজ ও ম্যানুপুলেশন থেরাপি খুবই উপকারী। পাশাপাশি রোগীকে কিছু এক্সারসাইজ করতে হয়। যেমন-
১। পেনডুলাম এক্সারসাইজ
২। ওয়াল ক্লাম্বিং এক্সারসাইজ
৩। স্লোডার রোটেশন এক্সারসাইজ ইত্যাদি
ডাঃ এম ইয়াছিন আলী
চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট
ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল
বাড়ী নং-১২/১, রোড নং-৪/এ
ধানম-ি, ঢাকা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: