ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

এনামুল হক

ঘোড়া বুঝতে পারে মানুষের ভাবাবেগ

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ঘোড়া বুঝতে পারে মানুষের ভাবাবেগ

ঘোড়া মানুষের ভাবাবেগ বুঝতে পারে। এই প্রথম এক পরীক্ষায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যে ঘোড়া মানুষের মুখের অভিব্যক্তি দেখে সে ক্রুব্ধ না সুখী সেই পার্থক্য টানতে সক্ষম। মানুষের মুখাবয়বের ইতিবাচক বনাম নেতিবাচক অভিব্যক্তির ছবি দেখে ২৮ ঘোড়ার কেমন প্রতিক্রিয়া হয়েছে মনস্তত্ত্ব বিশারদরা সেগুলো নিয়ে গবেষণা করে দেখেছেন। তারা লক্ষ্য করেছেন যে ক্রুব্ধ চেহারা দেখতে পেলে ঘোড়ারা সেই ছবিগুলো বাঁ চোখেই বেশি করে দেখে। তাদের এই আচরণ নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ সময় ওদের হৃদস্পন্দনের হারও দ্রুত বেড়ে যেতে দেখা গেছে এবং অধিকতর স্ট্রেস সম্পর্কিত আচরণ পরিলক্ষিত হয়েছে। সম্প্রতি ‘বায়োলজি লেটার্স’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রের উপসংহারে বলা হয় যে ক্রুব্ধ চেহারা দেখলে সেটা বোঝার মতো ক্ষমতা ঘোড়াদের রয়েছে। চেহারার অভিব্যক্তির প্রতিক্রিয়া যে হৃদস্পন্দনের ওপর পড়ে মানুষ ও জীবজন্তুর মধ্যকার মিথস্ক্রিয়ায় এর আগে তা দেখা যায়নি। গবেষক দলের অন্যতম সদস্য এমি স্মিথ বলেন, এই গবেষণার সত্যিকারের কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার হলো এই যে এতে দেখা গেছে বিভিন্ন প্রজাতির ভাবাবেগ চেহারা দেখে পাঠ করার ক্ষমতা ঘোড়াদের রয়েছে। ঘোড়ারা যে সামাজিক দিক দিয়ে বিকশিত প্রাণী আমরা তা বেশ আগে থেকেই জানি। তবে এই প্রথমবারের মতো দেখা গেছে যে তারা মানুষের চেহারায় ইতিবাচক ও নেতিবাচক অভিব্যক্তির মধ্যে প্রার্থক্য টানতে পারে। চেহারায় ক্রুব্ধ অভিব্যক্তির প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া বিশেষভাবে স্পষ্ট। তাদের হৃদস্পন্দন বেড়েছে এবং ক্রুব্ধ চেহারাটা বাঁ চোখ দিয়ে দেখার জন্য ওরা ওদের মাথাটা ঘুরিয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে অনেক প্রজাতিই নেতিবাচক ঘটনা বা ব্যাপারগুলো বাঁ চোখ দিয়ে দেখে। কারণ কি? কারণ হলো মস্তিষ্কের ডান দিকটা নেতিবাচক বা হুমকি সৃষ্টিকারী উদ্দীপনাগুলো প্রক্রিয়াজাত করার ব্যাপারে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন। আর বাঁ চোখের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যগুলো মস্তিষ্কের ডান দিকে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। আরেক কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার হলো নেতিবাচক অভিব্যক্তির প্রতি ঘোড়াদের প্রতিক্রিয়া প্রবল হয়। কিন্তু ইতিবাচক অভিব্যক্তির প্রতি ওদের প্রতিক্রিয়া অত প্রবল হয় না। এর কারণ এই যে নিজেদের পরিবেশে ভয়ভীতি ও হুমকি চিনতে পারা প্রাণীদের জন্য সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এরই প্রেক্ষাপটে দেখলে ক্রুব্ধ চেহারা চিনতে পারা হয়ত একটা সতর্কীকরণ ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে যার ফলে ঘোড়ারা মানুষের নেতিবাচক আচরণ বা দুর্ব্যবহার আগে থেকে আঁচ করার সুযোগ পায়। মানুষের চেহারার নেতিবাচক অভিব্যক্তিগুলো সুনির্দিষ্টভাবে বাঁ চোখ দিয়ে দেখবার প্রবণতা কুকুরদের মধ্যেও লক্ষ্য করা গেছে। সূত্র : ন্যাচার সায়েন্স
×