ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

নাটকের উদ্ভট নাম!

আনন্দকণ্ঠ রিপোর্ট 

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩

নাটকের উদ্ভট নাম!

নাটকপ্রেমীরা এখন ইউটিউবমুখী

নাটকপ্রেমীরা এখন ইউটিউবমুখী। স্মার্টফোনের কল্যাণে এখন সবাই কমবেশি ইউটিউব নির্ভর হয়ে পড়েছেন। টিভি চ্যানেল থেকেও এখন ইউটিউবের জন্য বেশি নাটক নির্মাণ হচ্ছে। গেল কয়েক বছর ধরে নির্মাতাদের বেশির ভাগ ইউটিউবের জন্যই নাটক নির্মাণ করছেন। টেলিভিশনে নাটক প্রচারের ক্ষেত্রে অনেক নীতিমালা মানা হলেও ইউটিউবের ক্ষেত্রে সেসবের বালাই নেই। ফলে ইউটিউব স্বাধীন একটি মাধ্যম বলে সবাই নিজের মতোই এর জন্য কনটেন্ট তৈরি করছেন।

দর্শকও নিজের সময়-সুযোগমতো পছন্দের নাটক দেখছেন। কিন্তু আজকাল নাটকের নামের বেহাল দশা দেখে অনেকে চমকে উঠছেন। একটা সময় বাংলা নাটকের নাম ছিল শ্রুতিমুধর। তবে এখন এসবের কোনো বালাই নেই। ২০২৩ সালের কয়েকটি নাটকের নাটক শুনলেই সেটি সহজে বোঝা যায়। নতুন বছরের কয়েকটি নাটকের নাম ‘বাটপার প্রেমিক’, ‘জামাই কেন চোর’, ‘বেয়াইন যেন কাঁচামরিচ’, ‘দুইজনের এক বউ’ ও ‘বিয়ে ছাড়া বাচ্চা’।

এছাড়া ইউটিউবে গেলেই চোখে পড়ে ‘কলাগাছ চ্যাম্পিয়ন’, ‘লুচ্চা প্রেমিক’, ‘বাবু খাইছো’, ‘এক্স’র বিয়ে’, ‘বলদ জামাই’, ‘হাবা আবুল’, ‘মুরগি ধর্ষণ’, ‘কিস্তিতে বউ নেওয়া’, ‘কচু দিমু’ ও ‘লুচ্চা ডাক্তার’সহ এমন অনেক নাটক। এসব নাটকে কমেডির নামে দর্শকদের সুড়সুড়ি দেওয়ার মতো অশ্লীল দৃশ্য ও সংলাপও যোগ করা হচ্ছে। বেশি ভিউ ও আয়ের প্রত্যাশায় মানসম্পন্ন নাটকের চেয়ে মানহীন নাটকই প্রাধান্য পাচ্ছে কিছু নির্মাতা ও প্রযোজকদের কাছে। বিশেষ করে কমেডি নাটকের নামে ভাড়ামো করা হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেক দিনের।

এসব মানহীন, অশ্লীল ও ভাড়ামো কমেডি নাটকে আবার জনপ্রিয় শিল্পীদেরও কেউ কেউ অভিনয় করছেন। অভিনেতা ও নির্মাতা আবুল হায়াৎ বলেন, এখন কিছু কিছু নাটকের নাম শুনলেই চমকে উঠি। এটি কিভাবে সম্ভব আমাদের নাটকে? কিন্তু কে শোনে কার কথা। সবাই নিজের মতোই কাজ করছেন। প্রযুক্তি আমাদের অনেক কিছু সহজ করে দিয়েছে। আমাদের উচিত প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করা। ইউটিউব কনটেন্টের নামে যা খুশি তা নির্মাণ করে প্রচার করলে আমাদেরই ক্ষতি।

দর্শকরা একটা সময় বলবে বাংলা নাটক মানেই ভাড়ামো করা। আমাদের এখন অনেক ভালো নাটকও নির্মাণ হচ্ছে। পাশের দেশেও আমাদের দর্শক তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এসব মানহীন কাজের ভিড়ে অনেক সময় ভালো কাজগুলো আড়ালে চলে যায়। কমেডির মধ্যেও অনেক ভালো কিছু দর্শকের সামনে তুলে ধরা যায়। সেটির উপস্থাপন অবশ্যই শৈল্পিক হতে হবে। নাটক সংশ্লিষ্টদের মতে, এসব মানহীন কিংবা অশ্লীল কমেডি নাটক মুক্তির অল্প কিছু দিনের মধ্যে লাখ-লাখ ভিউ হচ্ছে। এক শ্রেণির দর্শকও এগুলো দেখে বিনোদন নিচ্ছে। এসব নাটক বাণিজ্যিকভাবে সফল হলেও আমাদের বাংলা নাটকের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রুচিশীল দর্শকরা এসব নাটক দেখে বিরক্ত হচ্ছেন। একইসঙ্গে বিদেশী সিরিয়ালে আসক্ত হচ্ছেন তারা।

×