‘শনিবার বিকেল’ চলচ্চিত্রের পোস্টার
সিনেমার মহড়া শুরু হয় ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে। মহড়া শেষে ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকার কোক স্টুডিওতে ‘শনিবার বিকেল’ ছবির শূটিং শুরু হয়। বরাবরের মতো মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার এ ছবির কাজ গোপনে শেষ করেন। ছবির শূটিংয়ের গোপনীয়তার কারণে সে সময় অনেকের মনে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়। অনেকের ধারণা, ছবিটি হোলি আর্টিজানের হামলার ঘটনা নিয়ে। তবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সে সময় বলেন, এটা ঠিক যে অনেকেই বলছেন ছবিটি হোলি আর্টিজান ঘটনা নিয়ে। আমি বলব, ছবিটি হোলি আর্টিজান ঘটনার অনুপ্রেরণায় নির্মিত। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশকিছু চলচ্চিত্র উৎসবে দারুণ প্রশংসিত ছবিটি। অনেকগুলো পুরস্কারও রয়েছে এর ঝুলিতে। কিন্তু নির্মাণের সাড়ে তিন বছরেও সিনেমাটি দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দিতে পারছেন না ফারুকী। ২০১৯ সালে ‘শনিবার বিকেল’ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে জমা দেয়ার পর অদৃশ্য কারণে সিনেমাটি ব্যান করা হয়। আর এ নিয়ে ক্ষোভের কথা প্রকাশ করেছেন ‘ডুব’ খ্যাত এ নির্মাতা।
রবিবার (৭ আগস্ট) সকালে দুই বছর আগে ইস্টার্নকিকে প্রকাশিত ‘শনিবার বিকেল’র রিভিউ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি। ফেসবুকে ফারুকী লেখেন, আজকে সকাল সকাল মনটা খারাপ হয়ে গেল। এ রকম কত সকাল যে আমার গেছে। আমি একটা ছবি বানিয়েছি ‘শনিবার বিকেল’ নামে। যেটা সেন্সর বোর্ড সদস্যরা দেখে বিভিন্ন পত্রিকায় ইন্টারভিউ দিয়ে বললেন, আমরা দ্রুতই সেন্সর সার্টিফিকেট দিয়ে দিচ্ছি। তারপর এক অদৃশ্য ইশারায় ছবিটার দ্বিতীয় শো করে তারা। এবং তারপর বলে দিল, ছবি ব্যান। আমরা আপীল করলাম। আজকে সাড়ে তিন বছর হলো আপীলের। কোন উত্তর নেই। এবং আমাদেরও বুঝি কিছু বলার নেই। কারণ তারাপদ রায়ের কবিতার মতো আমাদের কখন সর্বনাশ হয়ে গেছে আমরা টেরও পাইনি। রিভিউটি প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, আজকে ‘শনিবার বিকেল’র ওপর ইস্টার্নকিকের রিভিউটা হঠাৎ সাজেস্ট করল আমাকে এ্যালগোরিদম। এটা আমি আগে পড়িনি। পড়ে মনে হলো আমরা ফুল, পাখি, লতা, পাতা নিয়ে ছবি বানালে ‘ঠিক আছে’। এমন কিছু বানানো যাবে না, যেখানে আমাদের চেহারা দেখা যায়। কিন্তু আমি তো চিরকাল সেইসব গল্পই বলে আসছি, যেখানে আমাদের চেহারা দেখা যায়, সেটা প্রেমের গল্পই হোক আর রাজনীতির গল্পই হোক। আমি তো অন্য কিছু পারি না। তাহলে পাখি সব যে রব করবে, সেটা কি নতুন সুরে করতে হবে? নতুন সুর শিখতে হবে?
‘শনিবার বিকেল’র ইংরেজী নাম ‘স্যাটারডে আফটারনুন’। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন বিভিন্ন দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীরা। এতে রয়েছেন বাংলাদেশের জাহিদ হাসান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, মামুনুর রশিদ, ইরেশ যাকের, ইন্তেখাব দিনার, গাউসুল আলম শাওন, নাদের চৌধুরী, ভারতের পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, প্যালেস্টাইনের ইয়াদ হুরানিসহ অনেকে।