সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি দেশে বেশ কয়েকটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অন্যতম। ১৯৯৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এবিএম মফিজুল ইসলাম পাটোয়ারী প্রতিষ্ঠা করেন এ বিশ্ববিদ্যালয়। ড. পাটোয়ারী আইন শাস্ত্রের অধ্যাপক ও গ্রন্থ প্রণেতা তাই তার প্রতিষ্ঠিত আইন অনুষদ সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে। উল্লেখ্য যে, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে প্রথম আইন বিভাগ চালু করা হয় এই ইউনিভার্সিটিতে।
বর্তমানে আইন অনুষদে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীরা এখানে পড়ালেখা করার সুযোগ পায়। দিবা শাখার পাশাপাশি সান্ধ্যকালীন শাখাতেও এখানে পড়ালেখার সুযোগ রয়েছে। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদে যে কোর্সসমূহে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হচ্ছে সেগুলো হলোÑ চার বছর মেয়াদী এলএলবি (সম্মান) দিবা শাখা, চার বছর মেয়াদী এলএলবি (সম্মান) সান্ধ্যকালীন শাখা, দুই বছর মেয়াদী এলএলবি (পাস) প্রোগ্রাম, এক বছর মেয়াদী এলএলএম (মাস্টারস) প্রোগ্রাম, দুই বছর মেয়াদী এলএলএম (মাস্টারস) প্রোগ্রাম। এছাড়াও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অধীনে দুই বছর মেয়াদী মাস্টারস অব হিউম্যান রাইটস ‘ল’ প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। যা বাংলাদেশে আর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই।
আইন অনুষদে ২৫ জন পূর্ণকালীন শিক্ষক রয়েছেন। জ্ঞান ও বেধা বৃদ্ধি এবং আইন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের বাস্তব ধারণা প্রদানের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা আইনের অধ্যাপক, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও বিখ্যাত আইনজীবী সমন্বয়ে আইন অনুষদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যায় পাঠদান সীমাবদ্ধ না রেখে নিয়মিতভাবে এখানে বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
সম্প্রতি এখানে শিশু অধিকার, নারী অধিকার, কনভেনশন বা টর্চার সংক্রান্ত উত্তরাধিকার, জুডিশিয়াল রিভিউ, সিভিল জাস্টিস সিস্টেম ইত্যাদি বিষয়ে সেমিনার, সিস্পোজিয়াম ও ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়েছে। এ সব সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আইনের বিভিন্ন তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক দিক সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারে।
একজন সফল আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে ছাত্রছাত্রীরা যাতে আইনের জটিল বিষয় মোকাবেলা করতে পারে সে জন্য এখানে ‘বার প্রাকটিশনারস ট্রেনিং প্রোগ্রাম (বিপিটিসি)’ নামে একটি কোর্স চালু রয়েছে। এ কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আদালতের কার্যধারা, বিভিন্ন ধরনের ড্রাফটিং, এ্যাডভোকেসি ইত্যাদি বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সম্প্রতি এ কোর্সটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ডিগ্রী গ্রহণ করে এবং আদালতে প্রাকটিশনার আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করতে পারে তার জন্য এ ব্যবস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় সাফল্য হচ্ছে, আইন বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা বার কাউন্সিল পরীক্ষায় প্রায় শতভাগ পাস করে আসছে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাসকৃত প্রায় সহস্রাধিক আইনজীবী দেশে বিভিন্ন আদালতে পেশাভুক্ত হয়েছেন। বিচার ও প্রশাসন বিভাগে বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী কর্মরত আছেন।
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পুরো ক্যাম্পাস ওয়াই ফাই হওয়ায় এবং ইন্টারনেট সুবিধা থাকায় শিক্ষার্থীরা গবেষণা কাজে বিশেষ সুবিধা ভোগ করে থাকেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতর্ক চর্চার জন্য নিয়মিত বিতর্ক কর্মশালা, উপস্থিত বক্তৃতা ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
শিক্ষার্থীদের ইংরেজী ভাষার ওপর দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল ল্যাংগুয়েজ ইনস্টিটিউট, ঢাকা এর সঙ্গে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এমওইউ. স্বাক্ষর করেছে। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সকল শিক্ষার্থীর ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্সকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বেসিক ইংলিশ, ফাংশনাল ইংলিশ, প্রিলিমিনারি ইংলিশ ও এ্যাডভান্স ইংলিশ কোর্সও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এডুকেশন সেল : ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির নিজস্ব একটি ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এডুকেশন সেল (আইকিউএসি) রয়েছে। এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অধীনে ‘হায়্যার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্ট (হেকেপ)’ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মধ্যে সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ৭টি সেলফ এ্যাসেসমেন্ট কমিটি ১ জুলাই ২০১৫ থেকে যথারীতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
স্থায়ী ক্যাম্পাস : ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস বাড্ডার সাঁতারকুলে স্থাপন করা হয়েছে। ৩টি সুরম্য ভবন নির্মিত হয়েছে। সবুজে ঘেরা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা স্থায়ী ক্যাম্পাসটি পরিবেশ মনোমুগ্ধকর। স্থায়ী ক্যাম্পাসে ব্যায়ামাগার ও আধুনিক অডিটোরিয়াম রয়েছে। স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়াও বনানী ও গ্রিন রোডে দুটি ক্যাস্পাস রয়েছে।
যোগাযোগ : বাড়ি-০৪, সড়ক-০১, ব্লক-এফ, বনানী, ঢাকা-১২১৩। মোবাইল: ০১৯৩৯৮৫১০৬১-৪।
ফারুক হোসেন