ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সেন্ট্রাল ফার্মার মজুদ পণ্যের সত্যতা নেই

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ৫ জানুয়ারি ২০২০

সেন্ট্রাল ফার্মার মজুদ পণ্যের সত্যতা নেই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেরিতে নিয়োগ দেয়ায় সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মজুদ পণ্যের সত্যতা যাছাই করতে পারেনি নিরীক্ষক। এছাড়া মজুদ পণ্যের প্রমাণাদি না দেয়ায় অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক। কোম্পানিটির ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় এই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক। নিরীক্ষক জানিয়েছেন, আর্থিক হিসাব অনুযায়ী সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ক্রয়, উৎপাদন সক্ষমতা, উৎপাদন ব্যয় এবং বিক্রির তুলনায় অনেক বেশি মজুদ পণ্য রয়েছে। যা প্রতিবছর বেড়ে ২০১৯ সালের ৩০ জুন দাঁড়িয়েছে ৫৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। তবে মজুদ পণ্যের পরিমাণ ও মান নিয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ নিরীক্ষককে টেকনিক্যাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট দেয়নি। এছাড়া মজুদ পণ্যের সত্যতা যাছাই করা সম্ভব হয়নি। কারণ, ২০১৯ সালের ৩০ জুন অর্থবছর শেষ হলেও নিরীক্ষার জন্য নিরীক্ষককে ৫ অক্টোবর নিয়োগ দেয়া হয়। যাতে স্বাভাবিকভাবেই ৩ মাস আগের মজুদ পণ্যের পরিমাণ যাছাই করা সম্ভব হয়নি। এদিকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ মজুদ পণ্যের তথ্য সঠিকভাবে রেকর্ড করেনি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। এছাড়া এ সংশ্লিষ্ট কোন সঠিক প্রমাণাদি নিরীক্ষককে দেয়নি। যাতে অধিকাংশ মজুদ পণ্যের অস্তিত্ব এবং অবস্থা ও বিক্রি মূল্য সন্দেহজনক। আর্থিক হিসাব অনুযায়ী, গ্রাহকের কাছে সেন্ট্রাল ফার্মার পাওনা টাকার পরিমাণ নিয়মিত বেড়ে ২০১৯ সালের ৩০ জুন দাঁড়িয়েছে ৫৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। কিন্তু সর্বশেষ স্ট্যাটাস রিপোর্ট ও বিক্রির নিশ্চিতকরণ সনদ নিরীক্ষককে সরবরাহ করা হয়নি। এছাড়া কোম্পানির পাওনার বিস্তারিত তথ্য নেই। আর ওই পাওনা আদায় নিয়েও কোন পলিসি নেই। যে পাওনা টাকা আদায় নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তারপরও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের সঞ্চিতি গঠন করেনি। সেন্ট্রাল ফার্মার জনতা ব্যাংকে খোলা ৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করে রেখেছে রাজস্ব কর্তৃপক্ষ। ৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা কর প্রদান না করার জন্য এই ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। যা রাজস্ব কর্তৃপক্ষের পাঠানো ২০১৫ সালের ২৬ এপিল এক চিঠির মাধ্যমে জানা যায়। যা সমাধানে এখনও কোন উন্নতি হয়নি। এর ফলে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সব লেনদেন নগদে সম্পন্ন করছে। সেন্ট্রাল ফার্মা কর্তৃপক্ষ টেক্স এ্যাসেসমেন্ট নিয়ে নিরীক্ষককে লেটেস্ট তথ্য দেয়নি। তবে রাজস্ব কর্তৃপক্ষের ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিলের এক চিঠির মাধ্যমে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা কর প্রদানযোগ্য। এছাড়া কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা অগ্রিম কর প্রদানের দাবির বিপরীতে নিরীক্ষককে কোন সহায়ক ডকুমেন্টস দেয়নি। উল্লেখ্য, ১১৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের মাত্র ৬ কোটি ৯১ লাখ টাকার রিটেইন আর্নিংস রয়েছে। আর কোম্পানিটির শেয়ার দর রয়েছে ৯ টাকা।
×