ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাইবার স্পেসের নিরাপত্তায় ‘প্যারিস কল’ ঘোষণাপত্র

প্রকাশিত: ০৮:৫৩, ১৯ আগস্ট ২০১৯

 সাইবার স্পেসের নিরাপত্তায় ‘প্যারিস কল’ ঘোষণাপত্র

জনকণ্ঠ রিপোর্টার ॥ সাইবার স্পেসের নিরাপত্তা ও আস্থা নিশ্চিত করতে সম্প্রতি ‘প্যারিস কল’ নামে চারদিনের সম্মেলনে একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বিশ্বের সব প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তারা নিরাপদ সাইবার স্পেস প্রতিষ্ঠার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করারও অঙ্গীকার করেছে। এই সম্মেলনে যোগ দিয়ে হুয়াওয়ে তাদের কার্যক্রম তুলে ধরেছে। হুয়াওয়ে বলেছে, বিশ্বজুড়েই সাইবার নিরাপত্তা চরম হুমকির মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি আরও বেশি। প্যারিস কলে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। অস্ত্র যুদ্ধের চেয়ে এখন সাইবার যুদ্ধ বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। এই যুদ্ধে যাতে কোন দেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য বিশ্বের সব প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এক জোট হয়েছে। হুয়াওয়ে জানিয়েছে, প্যারিস কলের সদস্য হওয়ার জন্য আরও ৫৬৪ সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এই ৫৬৪টি সংস্থাই ডিজিটাল পণ্য ও ডিজিটাল সিস্টেমগুলোর সুরক্ষা জোরদার করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সদস্যদের মধ্যে রয়েছে ৬৭টি স্টেট, ১৩৯টি আন্তর্জাতিক ও সামাজিক সংস্থা এবং ৩৫৮টি বেসরকারী কোম্পানি। ২০১৮ সালের নবেম্বর মাসে ফরাসী সরকার প্যারিস কলের প্রবর্তন করে। এই সংস্থার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং ইস্যুগুলো সমাধানের লক্ষ্যে সমন্বিতভাবে কাজ করা হচ্ছে। ডিজিটাল পণ্যগুলোকে আরও নিরাপদ, সাইবার ক্রাইমের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা ও সীমানার বাইরে থাকা অংশীদারদের সাহায্য করার প্রয়াস নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে চুক্তিবদ্ধ সব সদস্য। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক পণ্যের সরবরাহকারী হিসাবে হুয়াওয়ে তাদের তৈরিকৃত পণ্যের সল্যুশনসগুলোকে যতটা সম্ভব সুরক্ষিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করে যাচ্ছে। এ খাতে তাদের বিনিয়োগ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১৭০টি দেশে হুয়াওয়ের কার্যক্রম চলছে। প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন প্রায় ১ লাখ ৮৮ হাজার কর্মী। এই কর্মীরা প্রতিনিয়ত সেবা দিয়ে যাচ্ছে তিন বিলিয়নেরও বেশি গ্রাহককে। ২০১৮ সাল শেষে হুয়াওয়ের আয় প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। যা আগের বছরের চেয়ে ১৯ দশমিক ৫ ভাগ বেশি। এছাড়া গবেষণা ও উন্নয়নে (আরএন্ডডি) হুয়াওয়ের বিনিয়োগ মোট বার্ষিক রাজস্বের ১৪ দশমিক ১ ভাগ। এই সেক্টরে কাজ করছে ৮০ হাজারের বেশি কর্মী। ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্যও হুয়াওয়ে সব সময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। হুয়াওয়ের গ্লোবাল সাইবার সিকিউরিটি এ্যান্ড প্রাইভেসি অফিসার জন সাফল্ক বলেন, আমাদের অস্তিত্বের মূল ভিত্তি হচ্ছে উন্নতর সুরক্ষা দেয়া। সরকার ও গ্রাহকদের জন্য পণ্য এবং পরিষেবাগুলো নিশ্চিত করা। সুরক্ষা বৃদ্ধি করতে পারে এমন যে কোন প্রচেষ্টা, ধারণা বা পরামর্শকে আমরা সমর্থন করি। এছাড়াও আমরা ওপেননেস, ট্রান্সপারেন্সি ও আন্তর্জাতিকভাবে মানদ- মেনে চলাসহ সাইবার ক্রাইম থামানোর ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপগুলোকে সমর্থন করি। প্যারিস কলের সদস্য হিসেবে, হুয়াওয়ে সব প্রযুক্তি পণ্যের সরবরাহকারীদের উদ্দেশ্যগত পরীক্ষা ও মান যাচাইকরণের ক্ষেত্রে পরামর্শ দিচ্ছে। যে কোন ভেন্ডরের তৈরিকৃত প্রযুক্তিপণ্যের নিরাপত্তা নিরীক্ষণে তৃতীয় পক্ষ নিয়োগ করার ফলে এটা নিশ্চিত করা যাবে যে, নিরাপত্তা বিষয়ে দেয়া সিদ্ধান্তগুলো পুরোটাই তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে নেয়া হয়েছে। কোন আবেগ বা রাজনৈতিক প্রভাব দিয়ে হুয়াওয়ে কাজ করে না। ডিজিটাল বিশ্বকে আরও সুরক্ষিত করার জন্য হুয়াওয়ে সরকার, বেসরকারী সংস্থা ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, হুয়াওয়ে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিতকরণ ও উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি উন্নত ও সংযুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলাই প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য। নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে হুয়াওয়ে একটি পরিপূর্ণ আইসিটি সল্যুশন পোর্টফোলিও প্রতিষ্ঠা করেছে যা গ্রাহকদের টেলিকম ও এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক, ডিভাইস এবং ক্লাউড কম্পিউটিংর সুবিধাসমূহ দিয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলেন সেবা দিচ্ছে। হুয়াওয়ে সূত্র জানিয়েছে, সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে এখন পৃথিবীর সব দেশ চিন্তিত। অস্ত্র যুদ্ধের চেয়ে সাইবার যুদ্ধ অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বর্তমান বিশ্বে। এই যুদ্ধে কেউ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। বিশ্বজুড়েই কাজটি করা হচ্ছে সতর্কতার সঙ্গে। যাতে কোনভাবেই সাইবার অপরাধ ঘটতে না পারে।
×