অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ টেলিনর রিসার্চের বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী ২০১৮ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), বিগ ডাটা, ক্রিপ্টো-কারেন্সি এবং স্বচালিত বাহনের মত প্রযুক্তিগুলো বিশ্ববাজারে চলে আসবে। আশা করা হচ্ছে, ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারাবাহিক যাত্রায় এসব প্রযুক্তি এদেশেরও চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ নিয়ে হেড অব টেলিনর রিসার্চ বিয়র্ন টালে স্যান্ডবার্গ বলেন, ‘নীতিমালা, গ্রাহকের পছন্দ এবং প্রযুক্তির সর্বব্যাপী বিস্তারের কারণেই সাধারণত বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। এক্ষেত্রে, মোবাইল টেলিফোন ও গাড়ি অন্যতম দু’টি উদাহরণ। ২০১৮ সালে এ তিন ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসবে। ভবিষ্যত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা এ প্রবণতাগুলোকে বেছে নিয়েছি কারণ আমরা মনেকরি প্রযুক্তির এ প্রবণতাগুলোর নতুন বছরে শীর্ষে থাকার উজ্জ্বল সম্ভাবনা ও গুরুত্ব রয়েছে।
আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে প্রযুক্তিখাতের সম্ভাবনাময় সাতটি প্রবণতার কথাই আগে থেকে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন টেলিনর গ্রুপের গবেষণা প্রতিষ্ঠান টেলিনর রিসার্চ। ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, সোশ্যাল মিডিয়া বিহেভিয়ার (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আচরণ), কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিস্তৃত ব্যবহার, ব্যবসায় ডিপ লার্নিং, এআই ও আইওটি ভিত্তিক আর্থিক সেবা এবং অগমেন্টেড রিয়ালিটিতে অগ্রগতির ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসবে।
টেলিনরের গবেষণা অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের পোস্ট কমে যাচ্ছে এবং ফেসবুক নিউজফিডে আসা প্রাসঙ্গিক তথ্যও হ্রাস পাচ্ছে, যা বিভিন্ন ধরনের প্রফেশনাল ও পেইড কন্টেন্টের সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে। সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ব্যবহারকারীরা তাদের নিউজফিডে ‘ফেক নিউজ’র ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বিয়র্ন টালে স্যান্ডবার্গ বলেন, ‘ বোধহয় প্রাসঙ্গিকতার অভাবেই সংবাদ পেতে, ডিজিটাল উপস্থিতির জন্য এবং বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের হালনাগাদ তথ্য পেতে ব্যবহারকারীরা বিকল্প প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা শুরু করবে।’ ক্ষুদ্র ও সুক্ষ্ম যোগাযোগ পরিচালনার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে নিজেদের জনপ্রিয় কমিউনিকেশন প্ল্যাটফর্ম বিশেষ করে ম্যাসেঞ্জার ও ফেসবুক গ্রুপ উন্নত করতে ফেসবুক পদক্ষেপ নেবে।
টেলিনর গবেষকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী, ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করা গেলে আগামী ২০১৮ সাল হবে ডিপ লার্নিং-এর বছর এবং এ বছরেই ইন্টারনেট জায়ান্টদের থেকে বেরিয়ে এসে নতুন বাজার খুঁজে নিবে ডিপ লার্নিং। গবেষণা অনুযায়ী, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও শক্তি, যানবাহন এবং টেলিযোগাযোগসহ বিস্তৃতখাতে প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার হবে। ডিপ লার্নিং-এর ভুল ব্যবহার, অব্যবস্থাপনা, অনভিজ্ঞ তথ্য পরিচালনার ফলে সে সব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, যারা মনে করেন ডিপ লার্নিং একটি যাদুকরি প্রযুক্তি যা শিখে নিলেই হবে এবং যা নিজ আগ্রহে না জানলেও হবে।
আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহার্য ডিভাইসগুলো একেকটি পেমেন্ট ডিভাইসে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব ডিভাইসগুলোর মধ্যে রয়েছে গাড়ির চাবি, ভেন্ডিং মেশিন, স্মার্টফোন, কানেক্টেড গাড়ি, স্পোর্টস ওয়াচ ইত্যাদি।