অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কুষ্টিয়ায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) বীজে কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বীজ ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা বেশি দিয়ে বিএডিসি’র ধান বীজ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা।
যার সরকারী মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে বস্তাপ্রতি (১০ কেজি) ৪০০ টাকা। কিন্তু সেগুলো বাজারে কিনতে গেলে কৃষকদের দিতে হচ্ছে ৬০০-৭৫০ টাকা। বীজের দাম বেশি হওয়ায় বিএডিসি’র মোড়কের ভেতরে অন্য বীজ দিয়ে বাজারে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। মিরপুর উপজেলার শাহাপুর গ্রামের কৃষক গনজের আলী বিএডিসির নির্ধারিত ৪০০ টাকার মূল্যে বীজ কিনতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু বীজের দোকানদার নির্ধারণ করেছেন ৬০০ টাকা। এতে বিপাকে পড়েন তিনি। অবশেষে বাধ্য হয়ে ৬০০ টাকায় বীজ কিনেছেন তিনি।
কৃষক গনজের আলী জানান, তারা সাধারণ কৃষক। সরকারের কাছে চান ন্যায্যমূল্যে সার ও বীজ কিনতে, আর ন্যায্যমূল্যে ফসল বিক্রি করতে। তিনি আক্ষেপ করে জানান, ৪০০ টাকার বীজ ৬০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে তাদের, সরকারের কর্মকর্তারা এগুলো দেখেন না?
কৃষক ইদবার আলী জানান, বাজারে বিএডিসির বীজের সঙ্কটের কথা বলে অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি টাকা নিচ্ছেন। আর বিএডিসির বীজের ওপরে তাদের আস্থা থাকায় সেই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি দামের পাশাপাশি ভেজাল বীজ দিচ্ছেন। ফলে তাদের ক্ষতি হচ্ছে।
আরেকজন কৃষক হাফিজুল ইসলাম জানান, গত দুই দিন আগেও যে বীজর দাম ছিল ৪০০-৪৫০ টাকা, সেই বীজ এখন ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দিনে দিনে লাগামহীনভাবে দাম বাড়ছে বীজের। খুরচা বীজ ব্যবসায়ীরা জানান, বীজের সঙ্কট আর চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে বীজের দাম বেড়েছে। বেশিরভাগ ডিলারই বলছেন, সরকারী দামে বীজ নেই। বেশি দাম দিলে পাওয়া যাবে। এ জন্য খুরচা বাজারে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিএডিসির ডিডি কামরুজ্জামান জানান, জেলায় বিএডিসির ধান বীজ (৪৯, ৬২, ৫২) ছাড়াও হাইব্রিড জাতের ধান বীজের সঙ্কট নেই। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এগুলো সঙ্কট দেখানোর চেষ্টা করছেন। তিনি আরও জানান, বিএডিসির ধান বীজের ডিলারদের ক্রয়মূল্য ৩৫০ টাকা এবং খুরচা বিক্রয়মূল্য ৪০০ টাকা। এর বেশি দাম নিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।