ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ফিটনেসহীন গাড়িতে অহরহ দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: ০০:০৭, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১

ফিটনেসহীন গাড়িতে অহরহ দুর্ঘটনা

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ উত্তরের জেলা নীলফামারী হয়ে যে সকল যাত্রীবাহী বাস নিয়মিত চলাচল করছে তার অধিকাংশের ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে অহরহ ছোটখাটো বা দুর্ঘটনা ঘটছে। ২০১৯ সালের নবেম্বর মাসে নতুন সড়ক আইন চালু করা হলে এ জেলার ফিটনেস বিহীন বাসগুলো বন্ধ ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে পুনরায় এই বাসগুলো রাস্তায় নেমে এখন নিয়মিত চলাচল করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যাত্রীদের অভিযোগ রংচং করে বাসগুলো চাঙ্গা দেখানো হয়। কিন্তু যখন রাস্তায় চলে তখন বোঝা যায় বাসের পরিস্থিতি ভাল না। চলতে চলতে স্টার্ট বন্ধ হওয়া, ইঞ্জিনে বিকট শব্দ নিয়ে চলাচল। বসার সিটগুলো ঠিক নেই। মাঝে মাঝে ব্রেক ফেল করে। আবার স্টোরিং এর সঙ্গে সামনের চাকার নিয়ন্ত্রণের হাতল অকেজো হয়ে পড়ে আবার চাকাও খুলে যায় ইত্যাদি। শনিবার এমন এক ফিটনেস বিহীন বাসের ৪০ যাত্রী ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানান, আন্তঃজেলা পরিবহন ভাই ভাই নামের একটি বাস নীলফামারী রামগঞ্জ থেকে সৈয়দপুর হয়ে যাত্রী নিয়ে রংপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বাসটি সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে রংপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়। এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে না দিতে কামারপুকুর মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের সামনে পৌঁছলে পেছনের চারটি চাকা বাসের বডি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পৃথক হয়ে বের হয়ে যায়। এ অবস্থায় পেছনের চাকা বিহীন সামনের চাকা দিয়ে বাসটি সামনে কিছু দূর পর্যন্ত এগিয়ে থেমে গেলেও বাসের ৪০ যাত্রী ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। বাসের যাত্রীদের আর্তচিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসে। বাসচালক রফিকুল ইসলাম জানান, চলন্ত অবস্থায় বাসটি যখন কামারপুকুর মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের সামনে তখন কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাসটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন দেখি বাসটির পেছনের অংশের চারটি চাকা রাস্তায় বের হয়ে গেছে আর বাসের পেছনের বডি রাস্তায় লেগে আছে। কোন যাত্রীর ক্ষতি হয়নি। এ ছাড়াও ডোমার, ডিমলা ও সৈয়দপুর সড়কে বহু দুর্ঘটনা ঘটছে এমন ফিটনেস বিহীন বাসের কারণে বলে অভিযোগ যাত্রী সাধারণের। সৈয়দপুর ট্রাফিকের টিআই (প্রশাসক) নাহিদ পারভেজ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পেছনের চাকা বের হওয়া বাসটি হাইওয়ে তারাগঞ্জ থানা পুলিশ জব্দ করেছে। সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান বলেন, ঘটনাটি জানার পর হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি আমরাও সেখানে গিয়েছি। যাত্রীদের কোন ক্ষতি হয়নি। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে দেশের বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী ৩৩ শতাংশ যাত্রীবাহী বাসের ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই বলে হাইকোর্টে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছিল বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামাল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে দাখিল করা ১৫০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ৫৬ শতাংশ বাসের গতি নিয়ন্ত্রক সার্টিফিকেট নেই বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই বিশেষজ্ঞ কমিটি ফিটনেসহীন পরিবহনের ওপর জরিপ চালিয়ে তিন মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলে এ নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
×