ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

গাজীপুরে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় কলেজ ছাত্রসহ গ্রেফতার ৬

প্রকাশিত: ১৫:১৬, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

গাজীপুরে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় কলেজ ছাত্রসহ গ্রেফতার ৬

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুর শহরে আধিপত্য বিস্তার করতে তুচ্ছ ঘটনার জেরে স্যানেটারী মিস্ত্রি সাদেক আলীকে কুপিয়ে খুন করেছে কয়েক যুবক। এ ঘটনায় প্রধান আসামি ও কলেজ ছাত্রসহ ৬ যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) মোঃ জাকির হাসান সদর থানা ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেফতারকৃতরা হলো- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পশ্চিম ভুরুলিয়া এলাকার মোঃ শফিকুল ইসলামের ছেলে কাওসার আহমেদ আকাশ (২৩), শহরের মধ্য ছায়াবিথী এলাকার মোঃ আমজাদ হোসেন মুকুলের ছেলে মোঃ মেহেদী হাসান বিজয় (১৮), মারিয়ালী কলাবাগান এলাকার মোঃ নুরুজ্জামানে ছেলে মোঃ শামীম (১৮), কালীগঞ্জ উপজেলার কলাপাটুয়া এলাকার মোঃ রেজাউল করিমের ছেলে ইমন আহমেদ (২০), সদর উপজেলার কুমুন এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে মোবারক হোসনে ওরফে মোবা (১৯) ও মধ্য ছায়াবিথী এলাকার বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে নিলয় চন্দ্র বিশ্বাস (১৮)। এদের মধ্যে কাওসার শহরের কাজী আজিম উদ্দীন কলেজ থেকে এবছর এইচএসসি উত্তীর্ণ হয়েছে, নিলয় একই কলেজের একাদশ শ্রেণীর, বিজয় রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ও ইমন স্থানীয় লিংকন প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমার ছাত্র। অপর আসামি মোবারক শহরের জজ আদালত এলাকার একটি হোটেলের বয় এর কাজ করে। পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, গাজীপুর শহরের মধ্য ছায়াবিথী এলাকার ভাড়া বাসায় থেকে সেনেটারী মিস্ত্রির কাজ করতেন সাদেক আলী (৩২)। তিনি শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার বাঁকাকোড়া এলাকার শাহ আলমের ছেলে। বৃহষ্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাদেক আলী তার ছেলের জন্য বিস্কুট কিনতে বাসা সংলগ্ন জনৈক গোপালের দোকানে যান। এসময় সেখানে সালাম না দেওয়া ও সিনিয়রটি জুনিয়রটি নিয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র অভিযুক্ত যুবকদের সঙ্গে সাদেক আলীর সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের সরিয়ে দিলে সাদেক বাসায় চলে যান। এরপর আসামিরা সাদেককে বাসা থেকে ফের রাস্তায় ডেকে আনে এবং সাদেককে এলোপাথারি মারধর করে। একপর্যায়ে তারা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সাদেকের গলার ডান পাশে সজোরে কোপ দেয়। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সাদেক। তার মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বড়হরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি কাওসারসহ বিজয়, শামীম ও ইমনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী ঘটনার সঙ্গে জড়িত মোবারক ও নিলয়কে শহরের দক্ষিণ ছায়াবিথী এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ গ্রেফতারকৃত কাওসারের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঘটনাস্থলের পাশর্^বর্তী পার্কের ময়লার স্তুপ হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করে। তিনি আরো জানান, মামলার দুই নম্বর আসামি মেহেদী হাসান বিজয় মধ্যছায়াবিথী এলাকার একটি প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও তা ধরে রাখার জন্য তার নেতৃত্বে অপর আসামিরাসহ সমবয়সী কয়েকজনের একটি বখাটে গ্রুপ পরিচালনা করে। ওই গ্রুপের সদস্যদের অংশগ্রহণে তারা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃত্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় মামলার তদন্ত কাজ অব্যাহত আছে। প্রেসব্রিফিং কালে জিএমপি’র সহকারি কমিশনার থুয়াই অং প্রু মারমা ও সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
×