ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিজয়ের নেপথ্যে বঙ্গবন্ধু

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০

বিজয়ের নেপথ্যে বঙ্গবন্ধু

ব্রিটিশ শাসিত একটি অবহেলিত মহকুমার নাম গোপালগঞ্জ। সেখানেই জন্মগ্রহণ করেন বাঙালীর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান। যিনি পরবর্তীতে স্বীয় যোগ্যতা, প্রতিভা ও নেতৃত্বের গুণে শিশু মুজিব হতে ধীরে ধীরে মুজিব ভাই, বঙ্গবন্ধু, সর্বোপরি জাতির জনকে পরিণত হন। তিনি শুধু বাঙালী জাতির জনকই নন বরং তৃতীয় বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের মুক্তির অগ্রদূত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা। শৈশব থেকে বঙ্গবন্ধুর মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার বীজ নিহিত ছিল। সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে তিনি ছিলেন সোচ্চার, সচেতন। এক কথায় বাঙালী জাতিই যেন শেখ মুজিব আর শেখ মুজিবের অপর নাম বাঙালী জাতি। এমনি করেই তিনি জাতিসত্তায় অস্তিত্বে একাকার হয়ে গেছেন। স্বৈরাচারী পাকিস্তানীগণ ক্ষমতা হস্তান্তরের নামে টালবাহানা শুরু করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতিকে কি সঞ্জীবনী সুধা পান করিয়েছিলেন তা ৭ মার্চের ঐতিহাসিক জনসভা যে না দেখেছে সে বুঝতে পারবে না। এটা ছিল তৎকালীন বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংগ্রামী গণসমাবেশ, স্বাধীনতাকামী মানুষের বাঁধভাঙ্গা ঢল। আকারের বিশালতায়, অভিনবত্বের অনন্ত মহিমায়, সংগ্রামী চেতনার অতুল বৈভাবে ওই জনসমুদ্র ছিল নজিরবিহীন। বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে বাঙালীর স্বাধীকার আন্দোলনের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। মুজিবের নির্দেশে মুজিবের আদর্শে মুজিবের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠল বাঙালী জাতি। এদিকে আলোচনার নামে অযথা সময়ক্ষেপণ করে হানাদার পাকিস্তানী নেতৃবৃন্দ পশ্চিম পাকিস্তান হতে অস্ত্রশস্ত্র ও সৈন্য আনতে শুরু করল। পশ্চিম পাকিস্তান হতে ভুট্টো এসে মুজিবকে নানা প্রলোভনের টোপ দিলেন। বঙ্গবন্ধু দৃঢ়কণ্ঠে জানালেন, ‘বাংলার জনগণ ৬ দফা ও ১১ দফার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তার সঙ্গে আমি বেঈমানি করতে পারি না। আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, বাংলার মানুষের স্বাধীনতা ও মুক্তি চাই।’ স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার সংগ্রাম সবই পরিচালনা করেছেন বঙ্গবন্ধুর অসীম দক্ষতা ও যোগ্যতায়। তার ছিল মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার অসাধারণ বজ্রকণ্ঠ। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে তার ছিল দারুণ খ্যাতি। অকৃত্রিম দেশপ্রেম, সাধারণ জনগণের প্রতি গভীর ভালবাসা, অমায়িক ব্যক্তিত্ব, উপস্থিত বুদ্ধি তাকে বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত করেছে। বাঙালী জাতি হাজার বছর পর একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পেল, জাতীয় পতাকা ও সঙ্গীত পেল কিন্তু তার স্বপ্নদ্রষ্টাকে পেল না। কারণ, বঙ্গবন্ধু মুজিব তখন পাকিস্তানীদের কারাগারে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে দিনাতিপাত করছেন, মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। বহু চড়াই-উৎরাইয়ের পর পাকিস্তানী সামরিক জান্তা বিশ্ববাসীর চাপের মুখে বাঙালীর নয়ন মনি বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×