ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বড় জয়ে শুরু বার্সার, হার পিএসজির

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ২২ অক্টোবর ২০২০

বড় জয়ে শুরু বার্সার, হার পিএসজির

জাহিদুল আলম জয় ॥ বড় জয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে নতুন মৌসুমে মিশন শুরু করেছে বার্সিলোনা। মঙ্গলবার রাতে ২০২০-২১ মৌসুমে গ্রুপ পর্বের প্রথম রাতে হাঙ্গেরিয়ান ক্লাব ফেরেঙ্কভারোসকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে কাতালানরা। ঘরের মাঠ ন্যুক্যাম্পে ‘জি’ গ্রুপের এই ম্যাচে বার্সার হয়ে পাঁচজন একটি করে গোল করেন। গ্রুপের আরেক ম্যাচে করোনা আক্রান্ত ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে ছাড়াই জুভেন্টাস ২-০ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিক ইউক্রেনের ক্লাব ডায়নামো কিয়েভকে। তুরিনের ওল্ডলেডিদের হয়ে জোড়া গোল করেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার আলভারো মোরাটা। শুরুটা যাচ্ছেতাই হয়েছে আসরের বর্তমান রানার্সআপ প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইনের (পিএসজি)। ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচে ঘরের মাঠ প্যারিসের পার্ক দ্য প্রিন্সেসে সফরকারী ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে ২-১ গোলে হেরেছেন নেইমাররা। ম্যাচের তিনটি গোলই করেছে রেড ডেভিলসরা। অর্থাৎ পিএসজির একমাত্র গোলটিও এসেছে ম্যানইউর এ্যান্থনিও মার্শালের আত্মঘাতীর সৌজন্যে। ‘ই’ গ্রুপে দুই ফেবারিট চেলসি ও সেভিয়ার মধ্যকার ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়েছে। অচেনা ফেরেঙ্কভারোসের বিরুদ্ধে অনুমিতভাবেই একতরফা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলে জয় পেয়েছে স্বাগতিক বার্সা। তবে প্রথম গোলের জন্য দলটিকে প্রায় আধাঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। তাও আবার পেনাল্টি থেকে। ২৭ মিনিটে স্পট কিক থেকে বার্সার হয়ে প্রথম গোল করেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। এ নিয়ে টানা ১৬ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে গোল করার অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়েছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। এরপর আক্রমণের পর আক্রমণ শাণিয়ে আরও চার গোল আদায় করে রোনাল্ড কোম্যানের দল। ৪২ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেন তরুণ তারকা আনসু ফাতি। বিরতির পর ৫২ মিনিটে তিন নম্বর গোল করেন ব্রাজিলের এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ফিলিপ কুটিনহো। ৮২ মিনিটে পেড্রো গঞ্জালেস করেন চার নম্বর গোল। আর ম্যাচ শেষের এক মিনিট আগে উসমান ডেম্বেলে করেন পঞ্চম গোল। এর আগে ৭০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ফেরেঙ্কভারোসের হয়ে একটি গোল পরিশোধ করেন ইউক্রেনের মিডফিল্ডার আইর খারাতিন। এই ম্যাচের আগে স্প্যানিশ লা লিগায় টানা তিন ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন মেসি। যে কারণে ম্যাচের আগে মেসির ওপর নিজের হতাশার কথা আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়েছিলেন বার্সা কোচ। তবে এক ম্যাচ পরই তার মন ভরিয়ে দিয়েছিলেন বার্সা অধিনায়ক। ম্যাচ শেষে মেসির প্রশংসায় পঞ্চমুখ বার্সা কোচ রোনাল্ড কোম্যান বলেন, মেসি যদি এভাবে খেলতে থাকে, তাহলে আমার তার প্রতি কোন অভিযোগ থাকবে না। তিনি আরও যোগ করেন, সে কঠোর পরিশ্রম করেছে। গোলটা হয়ত পেনাল্টি থেকে করেছে কিন্তু আমিও আমার খেলোয়াড়ি জীবনে পেনাল্টি থেকে অনেক গোল করেছি। সে যদি গোল নাও পায় কিন্তু ম্যাচে ২-৩টি এ্যাসিস্ট করে তাতেও হবে। আমরা এর চেয়ে বেশি কিছু চাইতে পারি না। একজন কোচের জন্য সবচেয়ে ভাল বিষয় হলো তার আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা দারুণ খেলছে। আমি মনে করি, আমরা দেখেছি যে আমাদের ফরোয়ার্ড লাইনের খেলোয়াড়রা ভাল করছে। দুর্দান্ত মেসির জোড়া এ্যাসিস্টের পর আমরা অনেক খুশি। মেসিকে আমরা বিভিন্ন পজিশনে খেলাতে পারি। কেননা আক্রমণভাগে অসাধারণ খেলোয়াড় আছে আমাদের। প্যারিসে পিএসজি ও ম্যানইউর ম্যাচটি ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। ঘটনাবহুল ম্যাচের ২৩ মিনিটে অধিনায়ক ব্রুনো ফার্নান্দেজের পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় অতিথি ম্যানইউ। ৫৫ মিনিটে ম্যানইউর মার্শাল নিজেদের জালেই বল জড়ালে সমতা ফেরায় পিএসজি। কিন্তু ম্যাচ শেষের তিন মিনিট আগে মার্কাস রাশফোর্ডের গোলে দুর্দান্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংলিশ জায়ান্টরা। ম্যাচ শেষে ইংলিশ এই স্ট্রাইকার বলেন, এই ম্যাচে দু’দলেরই জয়ের সুযোগ ছিল। একজন স্ট্রাইকার হিসেবে ম্যাচের শেষে যখন গোল আসে সেটা অনেকটাই নিজস্ব মানসিক শক্তির ব্যাপার। ওই মুহূর্তে সম্ভবত একটাই সুযোগ আসে এবং সেটা থেকেই নিজের সেরাটা দিয়ে সুযোগটি আদায় করে নিতে হবে। সুযোগ কাজ লাগাতে পেরে আমি খুশি। ২০১৯ সালের মার্চে ম্যানইউর কোচ হিসেবে স্থায়ী চুক্তির পর দারুণ এই জয় স্মরণীয় হয়ে থাকবে কোচ ওলে গানার সোলসজায়েরের। ম্যানইউ কোচ ম্যাচ শেষে বলেন, এটা অন্যরকম এক অনুভূতি। গ্রুপ পর্বের শুরুটা ভাল হয়েছে এটাই গুরুত্বপূর্ণ। দারুণ একটি দলের বিরুদ্ধে জয়টা আমাদের আত্মবিশ^াসী করে তুলবে। সর্বশেষ ম্যাচটা ছিল নকআউট পর্বের। তখনকার পরিস্থিতিও ভিন্ন ছিল। এখন এখানে কোন সমর্থক নেই, আমাদের সঙ্গে এই জয়ের আনন্দ ভাগাভাগি করার মতো কেউ নেই। তারপরও খেলোয়াড়রা অসাধারণ খেলেছে।
×