ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গীতিকার ও সুরকার আলাউদ্দিন আলী আর নেই

প্রকাশিত: ১৯:৫৫, ৯ আগস্ট ২০২০

গীতিকার ও সুরকার আলাউদ্দিন আলী আর নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরেণ্য গীতিকার ও সুরকার আলাউদ্দিন আলী আর নেই (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। আজ রবিবার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আলাউদ্দিন আলীর মেয়ে আলিফ আলাউদ্দিন জনকণ্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে তাকে শনিবার (৮ আগস্ট) ভোরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় ও তীব্র শ্বাসকষ্ট থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক লাইফ সাপোর্টে রাখার পরামর্শ দেন। রবিবার দুপুরেও খোঁজ নিয়ে জানা যায় ঝুঁকি কাটেনি কিংবদন্তি এই সুরকারের। বরং প্র¯্রাব আটকে যাওয়াসহ বেশকিছু নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে। অনেক দিন ধরেই নানা অসুখে ভুগছিলেন আলাউদ্দিন আলী। ২০১৫ সালের ৩ জুলাই তাকে ব্যাংকক নেওয়া হলে সেখানে পরীক্ষার পর জানা যায়, তার ফুসফুসে একটি টিউমার রয়েছে। এরপর তার অন্যান্য শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি ক্যান্সারের চিকিৎসাও চলছিল। এর আগে বেশ কয়েক দফায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দেশ-বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে খানিকটা সুস্থ ছিলেন তিনি। ফিরেছিলেন গানেও। সব রোগ আর জটিলতাকে কাটিয়ে এবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই গীতিকার ও সুরকার। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সঙ্গীত-চলচ্চিত্রসহ বাংলাদেশের শোবিজে। আলাউদ্দীন আলী একাধারে একজন সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার, বেহালাবাদক ও গীতিকার। ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর তার জন্ম। তার বাবা ওস্তাদ জাদব আলী। আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলী দীর্ঘ মিউজিক ক্যারিয়ারে প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের গানে সুর দিয়েছেন। ১৯৬৮ সালে তিনি যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে আসেন এবং আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে যোগ দেন। এরপর তিনি প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজসহ বিভিন্ন সুরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৫ সালে সংগীত পরিচালনা কওে বেশ প্রশংসিত হন। ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’ ও ‘যোগাযোগ’ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ সালে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে। অসংখ্য কালজয়ী গানের সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন আলাউদ্দিন আলী। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য-একবার যদি কেউ ভালোবাসতো, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, ভালোবাসা যতো বড়ো জীবন তত বড় নয়, দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়, আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার, সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ, বন্ধু তিন দিন তোর বাড়িত গেলাম দেখা পাইলাম না, যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে, এমনও তো প্রেম হয়, চোখের জলে কথা কয়, কেউ কোনো দিন আমাওে তো কথা দিল না, জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো ইত্যাদি।
×