ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এসএমই লিংকেজ নীতিমালা চায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ২৩ জুলাই ২০২০

এসএমই লিংকেজ নীতিমালা চায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সারাদেশেই ব্যবস্থা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে এবং এমএসএমই খাতের উদ্যোক্তারা এখনও প্রণোদনা প্যাকেজ হতে আশাব্যঞ্জক পরিমাণে ঋণ সহায়তা পাননি। এ অবস্থা মোকাবেলায় এসএমই লিংকেজ নীতিমালা প্রণয়ন এবং দেশের অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের দ্রুততার সঙ্গে প্রণোদনার প্যাকেজ হতে ঋণ সহায়তা নিশ্চিতকরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন ডিসিসিআই আয়োজিত ওয়েবিনারে পুরনো ঢাকার এ খাতের উদ্যোক্তাবৃন্দ। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) বুধবার ‘পুরনো ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের অবদান বজায়ে রাখার লক্ষ্যে চলমান পরিস্থিতিতে সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের জন্য করণীয় নির্ধারণে এলাকাভিত্তিক এবং বিশেষায়িত ব্যবসায়ী সমিতিসমূহের সঙ্গে মতবিনিময়’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করে। এতে ঢাকা চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ও আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসেন খালেদ সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই’র সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা রয়েছেন প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। জিডিপিতে যাদের অবদান ২৫ শতাংশ এবং এ খাতে মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৩৫.৫ শতাংশ লোক জড়িত। তিনি জানান, বাংলাদেশের মোট রফতানিতে এসএমই উদ্যোক্তাদের অবদান প্রায় ৭৫-৮০ শতাংশ। অথচ কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাবৃন্দ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং সরকারের ঘোষিত প্রণোদনার প্যাকেজ হতে এ খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ সহায়তা প্রদানের ব্যাংকসমূহও তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না তিনি এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় এমএসএমই লিংকেজ নীতিমালা প্রণয়ন এবং এ খাতের উদ্যোক্তাদের ট্যাক্স, ভ্যাট এবং বিদ্যুত, গ্যাস ও পানির প্রভৃতির বিল ১ বছর স্থগিত রেখে পরবর্তী বছরের কিস্তিতে প্রদানের সুযোগ দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে হোসেন খালেদ বলেন, দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেকাংশেই এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ওপর নির্ভরশীল, তাই আমাদের এসএমই উদ্যোক্তাদের আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর ফলে উদ্যোক্তাদের বিক্রয়ের পরিমাণ ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এর ফলে উদ্যোক্তারা নিজের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। এ অবস্থা উন্নয়নে তিনি পাশর্^বর্তীসহ অন্যান্য দেশ কি করছে, তা থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়ার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ পোশাক প্রস্তুতকারক সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন মালিক বলেন, ঢাকা শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি হোসেন এ সিকদার, বাংলাদেশ লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ ব্রেড, বিস্কুট ও কনফেকশনারি প্রস্তুতকারী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন এবং বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মওলা অংশগ্রহণ করেন। আলাউদ্দিন মালিক বলেন, পহেলা বৈশাখ ও ঈদ-উল-ফিতর সময়ে লকডাউন থাকার কারণে বন্ধ ছিল, ফলে এ খাতের উদ্যোক্তাবৃন্দ উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারেনি, যার কারণে এ খাতের উদ্যোক্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে শপিংমল ও দোকানসমূহ সন্ধ্যা ৭টার পরিবর্তে ১ ঘণ্টা বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের উদ্যোক্তারা ইতোমধ্যে উৎপাদিত পণ্য ও সেবা এখন বিক্রি করতে পারছে না। প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা করা হলেও এ বিষয়ক নির্দেশনা এখনও স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাংক কর্মকর্তাবৃন্দ অবগত না হওয়ার ফলে এ প্যাকেজ হতে উদ্যোক্তারা ঋণ সহায়তা পাচ্ছে না। মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন বলেন, সারাদেশে প্রায় ৫ হাজার বেকারি রয়েছে তার মধ্যে বর্তমানে মাত্র ২৭০টি বেকারি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ খাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা একান্ত আবশ্যক বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন। গোলাম মওলা বলেন, এ খাতের উদ্যোক্তাবৃন্দ প্রণোদনার প্যাকেজ হতে এখনও ঋণ সুবিধা পায়নি এবং বছরের শুরুতে সরকারের পক্ষ হতে সিঙ্গেল ডিজিট ঋণ সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হলেও উদ্যোক্তারা সেটা পেতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
×