অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবারে দেশের উভয় শেয়ারবাজারে মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। দুই কোম্পানির দরবৃদ্ধি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন এবং ফ্লোর প্রাইস ওঠানোর গুঞ্জনেই সব ধরনের কোম্পানির দর কমেছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকল শেয়ারবাজার।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেকোন মুহূর্তে ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম) উঠে যেতে পারে-এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এছাড়া গত কয়েকদিনে শেয়ারবাজারে বড় বিনিয়োগকারী সক্রিয় হওয়ার পর যেসব কোম্পানির চাহিদা বেড়েছিল, সেই সব কোম্পানিরও আতঙ্কে দর কমেছে। গত বৃহস্পতিবারে পৃথক দুটি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ও বিনিয়োগকারীর সবমিলে ৮ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মূলত এই কারণে অনেকেই বাজার থেকে ফের হাত গুটিয়ে নিয়েছেন। ফলে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন ঘটেছে।
এ বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, শনিবার এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান বলেছেন, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব ফ্লোর প্রাইসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি হয়েছে শীঘ্রই ফ্লোর প্রাইস উঠে যাবে। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়েছে।
তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ারবাজার প্রকৃত চিত্র হারিয়েছে। এটা ঠিক আছে। তবে ফ্লোর প্রাইসের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। আস্তে আস্তে বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসছে। এই মুহূর্তে ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নিলে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই আপাতত ফ্লোর প্রাইস না উঠিয়ে আরও একটু সময় নেয়া উচিত। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসলে বাজারের গতি এমনিতেই বাড়বে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, রবিবার লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৫০ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ ৬ পয়েন্ট কমে ৯৩৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৪৯ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৮টির। আর ২০০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সূচকের এই পতনের দিনে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৩৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২২৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৯ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ১৫৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ২৮টির, কমেছে ৫০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮১টির।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: