ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

জমে উঠল লা লিগা, আজ জিতলেই বার্সাকে ছুঁয়ে ফেলবে রিয়াল মাদ্রিদ, ধাক্কা মেরেও লাল কার্ড থেকে রক্ষা মেসির

বার্সিলোনাকে রুখে দিল সেভিয়া

প্রকাশিত: ২২:৩৩, ২১ জুন ২০২০

বার্সিলোনাকে রুখে দিল সেভিয়া

জিএম মোস্তফা ॥ স্প্যানিশ লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সিলোনা। এবারও শিরোপা ধরে রাখার সুযোগ রয়েছে কাতালান ক্লাবটির। তবে সেই পথটা যেন কঠিন করে দিল স্পেনের আরেক শক্তিশালী ক্লাব সেভিয়া। শুক্রবার নিজেদের মাঠে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সিলোনার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে তারা। যার ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়তে হয় মেসি-সুয়ারেজদের। বার্সিলোনা-সেভিয়ার ড্রয়ে লাভ হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের। দুই দলের পয়েন্ট ব্যবধান এখন মাত্র ৩। চলতি মৌসুমের ৩০ ম্যাচ থেকে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে অবস্থান করছে কিকে সেতিয়েনের দল। আর এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদের সংগ্রহে ৬২ পয়েন্ট। অর্থাৎ আরেক ম্যাচে জয় পেলেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ছুঁয়ে ফেলবে রিয়াল মাদ্রিদ। সেই কাজটা আজই করে ফেলার দারুণ সুযোগ জিনেদিন জিদানের শিষ্যদের। কেননা রাতেই যে মাঠে নামছে রিয়াল মাদ্রিদ। প্রতিপক্ষ রিয়াল সোসিয়েদাদ। নিজেদের মাঠে রিয়াল সোসিয়েদাদ আজ আতিথ্য দিবে বেনজেমা-রামোসদের। রিয়াল সোসিয়েদাদও লীগের অন্যতম শক্তিশালী দল। ২৯ ম্যাচ থেকে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে লীগ টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে। মাঝে তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে সেভিয়া, এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও গেটাফে। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৬৯৯টি গোল করেছেন লিওনেল মেসি। তার সামনে ছিল সাত শ’র মাইলফলক স্পর্শের হাতছানি। সমর্থকরা ধরে নিয়েছিলেন হয়তো সেভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচেই সেই কীতির উদযাপন করবেন এলএম টেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। নিজে তো গোলের দেখা পাননি দলও পয়েন্ট হারিয়ে মাঠ ছেড়েছে। ২০১১ সালের পর লা লিগায় এবারই প্রথম সেভিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে কাতালান জায়ান্টরা। যদিওবা ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই সেভিয়াকে চাপে রেখে খেলেছে মেসি-সুয়ারেজ-গ্রিজম্যানরা। বলের দখল কিংবা আক্রমণেও এগিয়ে থাকে সফরকারী দল। কিন্তু গোলের সুযোগ তৈরি হলেও সেগুলোকে কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ম্যাচের প্রথমার্ধে কয়েকটি ফ্রি-কিক পায় সেতিয়েনের শিষ্যরা। সেগুলোর একটিও কাজে লাগাতে পারেনি তারা। অন্যদিকে সেভিয়াও নিজেদের মাঠে দাপট দেখায় বেশ কয়েকবার। প্রথমার্ধের ১৩ মিনিটে সেভিয়ার ফরাসী ডিফেন্ডার কুন্দের শট ভয় দেখিয়ে দিয়েছিল কাতালান ক্লাবটিকে। কিন্তু তার শট পোস্টের পাশ দিয়ে চলে গেলে রক্ষা পায় সফরকারীরা। ম্যাচের ২৫ মিনিটে সুযোগ পায় বার্সা। সুয়ারেজের শট ঠেকাতে গিয়ে ব্যর্থ হন স্বাগতিক গোলরক্ষক। এরপর ভাল জায়গায় বল পেয়েও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি ব্রাথওয়েট। দ্বিতীয়ার্ধে আন্দ্রে টের স্টেগানকে বেশ কয়েকবার পরীক্ষায় ফেলে স্বাগতিক শিবির। ৫৫ মিনিটে ওকাম্পোসের শট আটকে দেন বার্সার গোলরক্ষক। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষে যোগ হওয়া সময়েও দারুণ কৌশলগত দক্ষতায় বার্সাকে রক্ষা করেন স্টেগান। ভুলটা অবশ্য করেছেন রিয়াল মাদ্রিদ থেকে খেলতে আসা সেভিয়ার রক্ষণসৈনিক সার্জিও রেগুইলোনই। কোন রকমের কৌশলী পথ বেছে না নিয়ে সরাসরি স্টেগানের দিকে শট দেন তিনি। তাতেই শেষ সুযোগটাও ব্যর্থ হয় সেভিয়ার। দ্বিতীয়ার্ধের ৭৬ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন এ্যান্থনি গ্রিজম্যান। কিন্তু মাঠে তার তেমন কোন প্রভাব দেখা যায়নি এই সময়ে। এই ম্যাচে অবশ্য মেজাজ হারিয়ে ফেলতে দেখা যায় বার্সিলোনার প্রাণভোমরা লিওনেল মেসিকে। শুধু তাই নয়, লালকার্ড দেখারও পরিবেশ তৈরি করে ফেলেছিলেন প্রায়। কিন্তু শেষমেষ রক্ষা এলএম টেনের। ঘটনাটা প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে। সেভিয়া বক্সের সামনে বল নিয়ে ছুটছিলেন মেসি। হাঁটুর চোট থেকে ফিরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা লুইস সুয়ারেজ ফাউলের শিকার হওয়ায় বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু সেভিয়ার ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ডিয়েগো কার্লোস ওই সময় ছুটে গিয়ে ট্যাকল করেন মেসিকে। আর্জেন্টাইন তারকা তখন আর মেজাজ ধরে রাখতে পারনেননি। ডিয়েগো কার্লোসের দিকে তেড়ে গিয়ে মুখে ধাক্কাও মারেন মেসি। তখন মাঠের মধ্যে দ্রুতই শুয়ে পড়েন ডিয়েগো। মেসি লালকার্ড দেখতে পারেন বলে মোটামুটি ধরেই নিয়েছিল সবাই। কিন্তু রেফারি লুইস গঞ্জালেস সেটি আর করেননি। মেসি ধাক্কা মারার পর জটলা লেগে যায় দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে। কথা কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি তখন চলতে থাকে। যে কারণে মেসি বেঁচে গেলেও সেভিয়ার ফার্নান্দো এবং বার্সার সার্জিও বুসকেটসকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। তবে মেসি কেন লালকার্ড দেখলেন না? এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
×