ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘এর থেকে বড় কিছু হতে পারে না’

প্রকাশিত: ১১:০৯, ২৩ এপ্রিল ২০২০

‘এর থেকে বড় কিছু হতে পারে না’

নুসরাত ফারিয়া, গত চব্বিশ দিন ধরে ঢাকার বাইরে আছেন, পরিবারের সঙ্গে, একেবারে পারিবারিক আবহে। তার ভাষ্য মতে ভীষণ উপভোগ্য সময় কাটছে তার। চলতি বছর তার অভিনীত ভারত-বাংলাদেশ মিলিয়ে চারটি সিনেমা মুক্তি পাবার কথা। পাশাপাশি বিভিন্ন চরিত্রের প্রয়োজনে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করারও কথা! কিন্তু, সবই আজ থমকে গেছে গোটা মনুষ্য জীবনের মতো। এরমধ্যে কোন কোন সিনেমা মুক্তি পাবার কথা কাছাকাছি সময়ের মধ্যে? এ নিয়ে ফারিয়া বলেন, আল্লাহর রহমতে এরমধ্যে ‘শাহেন শাহ্’ মুক্তি পেয়েছে। রোজার ঈদে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ আসার কথা, কোরবানির ঈদেও একটা সম্ভাবনা আছে, নাম মেনসন করতে পারব না। কারণ, কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কিছু বলেননি। এছাড়া ১১ মার্চ জি ফাইভের সিনেমা ‘যদি কিন্তু তবুও’ এর শূটিং শুরু হবার কথা ছিল এবং রোজার মধ্যেই রিলিজের পরিকল্পনাও ছিল। কিন্তু, জানেনই তো তার আগেই সব কিছু লকডাউন হয়ে যায়। এছাড়া পহেলা বৈশাখে রাজা চন্দের পরিচালনায় ‘ভয়’ মুক্তির কথা ছিল । সিনেমার পাশাপাশি একটি মিউজিক ভিডিও প্রকাশের কথা ছিল নুসরাতের। তাও আপাতত বন্ধ রয়েছে। মিউজিক ভিডিওটা বেশ বড় বাজেটের, প্রমোশনে না গিয়ে এটা রিলিজ করতে পারি না। কারণ, কোন প্রডাক্ট প্রমোন ছাড়া রিলিজ দেয়া ঠিক না। সময়টা এখন ঠিক মনে হচ্ছে না। শেষে যদি হিতে বিপরীত হয়ে যায়। আপাতত ওই মিউজিক ভিডিও নিয়েও ভাবছেন না নুসরাত। ২০১৫ সালে, প্রথম সিনেমা মুক্তির পর থেকে একে একে আলোচিত এবং দর্শক প্রিয় সিনেমা রিলিজের মধ্য দিয়ে নিজেকে একজন মেগাস্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নুসরাত ফারিয়া, আমি খুবই সৌভাগ্যবান আল্লাহতালা আমাকে এত অল্প সময়ে এখানে নিয়ে এসেছেন। গত পাঁচ বছর সিলেক্টিভ কাজ করে করে এখানে এসে পৌঁচ্ছেছি- আর এটাই উপলদ্ধি করছিলাম। এ জন্য জাজ মাল্টিমিডিয়াকে ধন্যবাদ। শুরুতে ওনারা আমার প্রপার টেক কেয়ার করেছিলেন। পরবর্তীতে ওখান থেকে বেরিয়ে সিলেক্ট করে কাজ করতে পেরেছিলাম। এতো অল্প সময়ে এই খ্যাতির কারণ কি? আমি খুব মনোযোগী এবং শৃঙ্খলবদ্ধ। আমি এও জানি এটা সবাই করে, কিন্তু আমি যখন কোন প্রজেক্ট শুরু করি, তখন চেষ্টা করি প্রথম থেকে একে বারে শেষ পর্যন্ত সম্পৃক্ত থেকে সব কাজে ২০০ভাগ এফোর্ড দিতে, এটাই আমার অন্যমত কোয়ালিটি। এটা কেবল সিনেমার ক্ষেত্রে তা কিন্তু নয়, বিজ্ঞাপন বলেন, আর উপস্থাপনা বলেনÑ সবক্ষেত্রেই। আপনার সাফল্যের টার্নিং পয়েন্ট সম্পর্কে বলেন, প্রথমত যদি বলি তাহলে, অঙ্কুশের সঙ্গে প্রথম সিনেমা ‘আশিকী’, এরপর জিৎ এর সঙ্গে ‘বাদশা দ্য ডন’ বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা ‘ প্রেমী ও প্রেমী’, ‘বস-২’ এর আয়শা চরিত্র, বিবাহ অভিযানের রাই চরিত্র আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট বা সাফল্যের সিড়ি বলতে পারেন। এছাড়া ‘অপারেশন সুন্দববন’ নিয়েও আমি ভীষণ আশাবাদী। একটা সিনেমায় একাধিক স্টার থাকা সত্ত্বেও অনায়াসে সেই সিনেমা যুক্ত হয়ে যান নুসরাত, ‘আমার কাছে চরিত্রই প্রধান।’ পাশাপাশি ক্যারিয়ারে তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে যদি জানতে চাই? যে কোন পেশাতেই কাজ করতে গেলে আমরা ভাল এবং খারাপের মুখোমুখি হবো। ভাল যেমন থাকবে খারাপও তেমন থাকবে। ফেইম এমন একটা নেশা একবার পেয়ে বসলে বার বার পেতে ইচ্ছা করে। এর ফল কিন্তু সব সময় ভাল হয় না। আমার কাছে যেটা মনে হয়, নিজে যদি ঠিক থাকা যায় কোন কিছুই আপনাকে প্রবাহিত করতে পারবে না। তার মনে এই নয় যে আমার চলার পথে কোন বাধা-বিপত্তি আসেনি, প্রচুর এসেছে... দু’একটা ঘটনা যদি জানতে চাই? নুসরাত; এটা বলা ঠিক হবে না। প্রত্যেকেরই একটা ব্যক্তিগত জীবন আছে। বর্তমান সময়ে ভয়াবহ করোনভাইরাস মোকাবেলায় একজন চলচ্চিত্র শিল্পী বা শিল্পীদের কি করা উচিত বলে মনে করেন? কারণ, এই বৈশ্বিক সমস্য মোকাবেলা কোন দেশের সরকারের একার পক্ষে সম্ভবন হচ্ছে না। এবার দৃঢ়তার সঙ্গে নুসরাত বলেন, তাতো অবশ্যই! সরকারের বাইরে গিয়ে আমরা কোনভাবেই সার্ভাইব করতে পারব না। দেখেন একটা কথা বলি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ কিংবা পৃথিবীর অনেক দেশের বড় বড় আর্টিস আছেন যারা বড় অঙ্কের আর্থিক সাহয্য করছেন। এ ক্ষেত্রে আমি যদি তুলনা করি তাহলে, সেই সব আর্টিস্ট যে পরিমাণ অর্থ আয় করেন তাদের ৪ ভাগের এক ভাগ আয় আমদের শিল্পীরা করেন বলে আমার মনে হয় না। একটা সময় যে শিল্পীটা প্রচুর সিনেমা করেছেন, নাটক করেছেন এদেরও কারও কারও পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গা থেকে সাহয্য নিয়ে জীবন চালাতে হয়। কাজেই এমন বাস্তবতায় কেউ যদি প্রশ্ন করেন, আপনি কি অবদান রাখছেন? সেক্ষেত্রে আমি মনে করি এমন প্রশ্ন করা আমাদের কাছে অযৌক্তিক। কারণ আমাদের দেশে যে মানুষটা অভিনয় শিল্প বা অন্যান্য শিল্পে ক্যারিয়ার গড়তে চায়, হয় সে প্রচ- সাহসী নয়তো প্রচ- শিল্পপ্রেমিক। আমরা যেটা করতে পারি মানুষদের বিভিন্নভাবে সচেতন করতে পারি, অবশ্য কেবল ঘরে থাকুন ঘরে এই বলে নয়। মনে রাখতে হবে আমরা একটা যুদ্ধ করছি হাতিয়ার ছাড়া। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমন এর বায়োপিক চলচ্চিত্র নির্মাণ হতে যাচ্ছে সেখানে আপনি তরুণ শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন, বিষয়টা কিভাবে উপলব্ধি করেন? প্রথমত এই চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করবেন তার একটা প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু কাউকে চূড়ান্ত করা হয়নি এবং তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যতক্ষণ পর্যন্ত কাউকে চূড়ান্ত করা না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ যেন কিছু না বলে। আর যদি ফাইনালি সুযোগ হয়ে যায় তাহলে বলব, এর থেকে বড় কিছু হতে পারে না। ব্যক্তিগত জীবনের প্রেম কিংবা বিয়ের কথা জানতে চাইলে, নুসরাত স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই জানান প্রেম-ভালবাসা সব সময়ই ছিল আছে এবং থাকবে। আর বিয়ে যখন করব অবশ্যই আপনারা জানবেন।
×