ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সফিউল্লাহ আনসারী

আতঙ্ক নয়

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ১৯ মার্চ ২০২০

আতঙ্ক নয়

আতঙ্ক নয় চাই সচেতনতা- এটি শুধু একটি স্লোগান নয়, নিজে বাঁচতে অন্যদের জীবন ঝুঁকিমুক্ত রাখতে অতীব জরুরী বিষয়। করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ বর্তমান সময়ে বিশ্বজুড়ে এক আতঙ্ক, মহামারী তথা মানবজাতির জন্য চরম দুর্যোগ। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে মানুষ অনেক এগিয়েছে, কিন্তু অচেনা এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে মানুষ এই সময়ে অসহায়। চিনের উহান প্রদেশ থেকে এর বিস্তার হয়ে বর্তমানে শতাধিক দেশে এর আক্রমণ মানবজাতির জন্য সবচেয়ে আতঙ্ক আর মৃত্যু ভয়ের নাম। ইতোমধ্যে আমাদের জনবহুল অসচেতনতা গাফিলতির অঞ্চল বাংলাদেশেও ইতালি ফেরতদের মাধ্যমে প্রবেশ করেছে এই করোনা ভাইরাস নামক ব্যাধি যার কার্যকরী চিকিৎসা বা প্রতিষেধক এখনও পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা যায়নি। তাই ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই শ্রেয়’ যে বিষয়টি আমরা বই পুস্তকে পড়ে এসেছি তা কঠিনভাবে মানার সময় এসেছে। আতঙ্কিত না হয়ে গুজবে কান না দিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের দিকনির্দেশনা মোতাবেক সচতেন হয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা ফরজ। ‘ফরজ’ এই কারণে যে, আমরা বাঙালী অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গাফিলতি করে সময় ক্ষেপণ করে বিপদে পড়ি আর গুজবে কান দিয়ে অযথা বিষয়ে ‘চিলে কান না নিলেও’ কানে হাত দেয়ার আগেই দৌড়াই। আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগ, সরকারী-বেসরকারী চিকিৎসাকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এনজিওগুলো করোনা প্রতিরোধ সচেতনতায় সর্বক্ষণিক কাজ করার পাশাপাশি মসজিদ-মাদ্রাসাগুলোতে সচেতনতার বিষয়গুলো ক্রমিক সংখ্যাতে জনগণের সামনে তুলে ধরে মানা ‘ফরজ’ শব্দটি ব্যবহার করলে বেশি কাজে দেবে। কারণ দেশের মানুষ ধার্মিক। মসজিদ-মাদ্রাসার পাশাপাশি মন্দির-গির্জা তথা উপসনালয়গুলোতে জোর দিয়ে মানুষকে সচেতন করা জরুরী। ইতোমধ্যেই সরকারী ঘোষণা এসেছে- গণজমায়েত না করা, জনবহুল স্থানে না যাওয়া। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখাও জরুরী হয়ে পড়ায় ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। শিক্ষা ব্যবস্থাকে সচল রাখতে অনলাইন বা মোবাইলে প্রতিদিনকার রুটিনমাফিক ক্লাসের পড়া বাসায় বসে শিক্ষার ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। আর বিদেশ ফেরতদের ইতোমধ্যেই কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এটি আরও আগে শুরু করলে হয়ত দেশে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারত না বলা যায়। এখন থেকে অন্যান্য দেশের মতো সময়োপযোগী ব্যবস্থা নেয়া হোক, করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে লোক আসায় অনুৎসাহিত করা, এলেও স্বেচ্ছায় গৃহবন্দী থাকার বিষয়ে উৎসাহী করা। মানুষের সাময়িক সমস্যা হলেও, কারণ করোনা এখন বৈশ্বিক সমস্যা নির্দিষ্ট কোন দেশ বা অঞ্চলের নয়। স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রয়োজনে বাধ্য করতে হবে। এটি এমন এক রোগ যা একজন আক্রান্ত হলো আর সবাই বেঁচে যাবে তা নয়, তাই নিজে আক্রান্ত হয়ে নিজেকেই লুকিয়ে ফেলে চিকিৎসা নিতে হবে যাতে পরিবার তথা সমাজের কেউ আক্রান্ত না হয়। ভালুকা, ময়মনসিংহ থেকে
×