ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টানা ৫ দিন উর্ধমুখী শেয়ারবাজার

প্রকাশিত: ০৯:১০, ৩ জানুয়ারি ২০২০

টানা ৫ দিন উর্ধমুখী শেয়ারবাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। নতুন বছরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপ নেই। সেইসঙ্গে বিনিয়োগকারীদের পত্রকোষ নতুন করে সাজানো শুরু করায় শেয়ার কেনার চাহিদা বেড়েছে। যার কারণে গত কয়েকমাস ধরে অব্যাহতভাবে দর হারানো কোম্পানিগুলোর লোভনীয় পর্যায়ে দাম চলে আসায় ক্রেতা বেড়েছে। সবমিলে সার্বিক বাজারে ইতিবাচক প্রবণতা ফিরে এসেছে। বিগত ২০১৯ সালের শেষ তিন কার্যদিবস এবং নতুন বছর ২০২০ সালের প্রথম দুই কার্যদিবস টানা উর্ধমুখী থাকল শেয়ারবাজার। টানা পাঁচ কার্যদিবস শেয়ারবাজার উর্ধমুখী থাকায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও আশার সঞ্চার হয়েছে। এদিকে শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৯ সালে বাজারে যে ধরনের পতন হয়েছে তাতে নতুন বছরে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোটা স্বাভাবিক। পতনের কারণে বর্তমানে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কেনার উপযোগী রয়েছে। এই বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিশেষ করে ব্যাংকের সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বেশ ছাড় দেয়া হয়েছে। কিন্তু শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সেভাবে আসেনি। এখন ব্যাংকগুলোর ২০১৯ সালের হিসাব শেষ হয়েছে। তাই আশা করা যায় নতুন বছরে শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়বে। ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বর্তমান বাজার কেনার জন্য বেশ উপযোগী। আশা করি সামনে বাজার আরও ভাল হবে। বাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। আমাদের ধারণা নতুন বছরে শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়তে পারে। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৪৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবসের উর্ধমুখীতায় সূচকটি ৬৯ পয়েন্ট বাড়ল। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক বৃহস্পতিবার ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৫০৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এর মাধ্যমে শেষ পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২৪ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট বাড়ল। সবকটি সূচকের উত্থানের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। দিনভর বাজারে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৬৭টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৩৭টির। আর ৪৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দুই শ’ কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করে লেনদেনের পরিমাণ তিন শ’ কোটি টাকার ঘরে উঠেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৮৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৯৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৯০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে খুলনা পাওয়ারের শেয়ার। কোম্পানিটির ২০ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকার। ১০ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, লাফার্জ হোলসিম, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, গ্রামীণফোন এবং ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৫৪৪ পয়েন্টে। বাজারে লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৪৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩৮টির, কমেছে ৮৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির।
×