ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিআইবিএমের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

ই-ব্যাংকিং কার্যক্রম বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৯:২১, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯

ই-ব্যাংকিং কার্যক্রম বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, ব্যাংক ও ফিনটেক প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করলে গ্রাহক সেবার মান বাড়বে। গ্রাহকরা নতুন নতুন সেবা উপভোগ করতে পারবে। একই সঙ্গে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। তারা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বক্ষণিকভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে০র কার্যক্রম মনিটরিং করছে। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়ে গাইডলাইনও দিচ্ছে। ই-ব্যাংকিং কার্যক্রম আরও জোরদারভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সোমবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটরিয়ামে ‘ফিনটেক এ্যান্ড রেগটেক: পসিবল ইমপ্যাক্ট অন ব্যাংকিং সিস্টেম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন ও পরামর্শ এবং প্রশাসন ও হিসাব) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জী। তিনি তার বক্তব্যে ব্যাংকিং সিস্টেমে ফিনটেক-রেগটেক-এর প্রভাবের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করেন। গোলটেবিল বৈঠকে গবেষণা প্রতিবেদন যৌথভাবে উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ শিহাব উদ্দিন খান এবং বিআইবিএমের প্রভাষক মোঃ ফয়সাল হাসান। চার সদস্যের একটি গবেষণা দল এ গবেষণা সম্পন্ন করে। গবেষণা দলে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া; সাউথ বাংলা এ্যাগ্রিকালচার এ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ মিজানুর রহমান। গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন বিআইবিএমের নির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এসএম মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা; বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধূরী; আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম; বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট একেএম আব্দুল্লাহ। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ে ফিনটেক এবং রেগটেক বিষয়ে সচেতনতা জরুরী। কেননা ব্যাংকিং খাতে পরিবর্তিত প্রযুক্তির বিষয়ে ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে সচেতনতা থাকলে ব্যাংক বা আর্থিক খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব। বিআইবিএমের নির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বক্ষণিকভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম মনিটরিং করছে। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়ে গাইডলাইনও দিচ্ছে। সাম্প্রতিক বিট কয়েনের ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে সচেতনতাও বাড়ানো হয়েছে। ই-ব্যাংকিং কার্যক্রম আরও জোরদারভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, আইটি খাতে ব্যয় করলে এখান থেকে আয়ের পাশাপাশি চলমান খরচ আরও বেশি সাশ্রয় করা সম্ভব। এ কথা ব্যাংক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের বোঝাতে হবে। পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ফিনটেক এখন বাস্তবতা। বর্তমানে একটি প্রযুক্তি জ্ঞানসমৃদ্ধ একটি জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছি। তার জন্যে নতুন নতুন প্রযুক্তি আত্মস্থ করতে হবে। ব্যাংকিং অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। পুরানো ধ্যান-ধারণাকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে প্রযুক্তিনির্ভর সেবা নিয়ে আসতে হবে যুগের দাবির সঙ্গে তাল মিলিয়ে। ব্যাংক যত সত্ত্বর তা গ্রহণ করবে তত উত্তম। প্রযুক্তি ও ব্যাংকিং পরস্পর সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। প্রযুক্তিকে আরও বেশি অনুশীলনের মাধ্যমে আমাদের জনবলকে সমৃদ্ধ করতে হবে। আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম বলেন, আর্থিক খাতের অনেক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে ব্লক চেইন। এর মাধ্যমে ভূমি রেজিস্ট্রেশন, ভ্যাট ও কর আদায় এমনকি ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণও সহজ হবে। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট এ কেএম আব্দুল্লাহ বলেন, ব্যাংকিং খাতে অনেক ইস্যু আছে যেখানে সব ব্যাংক পারস্পরিক সংযোগ ও সহযোগিতা করে কাজ করতে পারে। এতে ব্যাংকগুলো মুনাফায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
×