ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্র্রাম্পের ইম্পিচমেন্ট বিভক্ত কংগ্রেস ও মার্কিন জনগণ

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্র্রাম্পের ইম্পিচমেন্ট বিভক্ত কংগ্রেস ও মার্কিন জনগণ

দু’হাজার উনিশ সালের বছর শেষের ধূসর আলোয় সুপার পাওয়ারের দেশ আমেরিকার রাজনৈতিক নাট্যমঞ্চে ঘটে গেল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে বহুল আলোচিত ইম্পিচমেন্ট নিয়ে এক ঐতিহাসিক নাটক। ওয়াশিংটনের ‘ক্যাপিটল হিলের’ নিম্ন কক্ষ-প্রতিনিধি পরিষদের রাজনৈতিক মঞ্চে দেশের তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিশংসিত হলেন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড জে ট্র্রাম্প। কিন্তু এই অভিশংসন এখন পর্যন্ত তার জন্য শেষ কথা নয়। বরং বলতে হয় নাটকের শেষ পর্বের জন্য রাত এখনও বাকি। বলাবাহুল্য সমাপ্তি পর্বের স্থানটি হচ্ছে কংগ্রেসের সিনেট, যেটি হচ্ছে মার্কিন আইন সভার উচ্চ কক্ষ। এখন পর্যন্ত ক্যাপিটল হিলে বিষয়টির সামগ্রিক যবনিকাপাত না ঘটায় দেশ-বিদেশের মানুষ সাগ্রহে অপেক্ষা করছে চূড়ান্ত পর্বটির জন্য। যারা মার্কিন রাজনীতি সম্পর্কে খুব বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করেন না, তাদের স্মরণ করিয়ে দেই আমেরিকান কংগ্রেস একটি উচ্চ ও নিম্ন-দুই কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা নিয়ে গঠিত হয়েছে। নিম্ন কক্ষে রয়েছে ডেমোক্র্যাটিক দলের সংখ্যাধিক্য এবং অপরদিকে উচ্চ কক্ষে প্রেসিডেন্টের পার্টি রিপাবলিকান দলের সংখ্যাধিক্য। নিম্ন কক্ষে পাস হবার পর এবার এই আইন যাবে সিনেট বা উচ্চকক্ষে। ইতোপূর্বেই বলেছি সেখানে প্রেসিডেন্টের পার্টির সংখ্যাধিক্য। ডেমোক্র্যাট দল নিম্নকক্ষে ইম্পিচমেন্ট বিল পাস করার পর ভেসে যাচ্ছে হাসি আনন্দে। কিন্তু নাটক অন্তের শেষ হাসিটি কে হাসবে তার আগাম বার্তা সমীক্ষকরা এখনও দিতে পারছেন না। আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে এক সিনেট ট্রাইব্যুনালে এই শেষ পর্ব অনুষ্ঠিত হবে, এমনটি এখন পর্যন্ত বলা হচ্ছে। রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেট মেজরিটি পার্টির নেতা রিপাবলিকান মিচ ম্যাককোনাল ও মাইনরিটি দলের নেতা ডেমোক্র্যাট চাকসুমার আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সিনেট ট্রাইব্যুনালের দিনক্ষণ ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করবেন। কিন্তু ইতোমধ্যে এই প্রক্রিয়াটি নিয়ে এ ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব গেরোর সৃষ্টি হয়েছে। কি প্রক্রিয়ায় সিনেট ট্রাইব্যুনাল হতে যাচ্ছে তা না জানা পর্যন্ত স্পীকার ন্যান্সি পেলোসি ইম্পিচমেন্ট রেকর্ডসমূহ সিনেটে পাঠানো থেকে বিরত রয়েছেন। কিন্তু কেন এই অভিশংসনÑ সে প্রসঙ্গে পাঠকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা বাঞ্ছনীয়। ডেমোক্র্যাটরা বলছেন গণতান্ত্রিক আমেরিকার নির্বাহী প্রধান মার্কিন রাষ্ট্রপতি একজন রাজা নন এবং তিনি যাতে বল্গাহীনভাবে রাজকীয় কায়দায় তার ক্ষমতা ব্যবহার করতে না পারেন, সে কারণে শাসনতন্ত্র কর্তৃক আইন সভার সদস্যদের হাতে এই চেক এ্যান্ড ব্যালেন্সের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি যদি কোন ক্রিমিনাল অফেন্স করেন কিংবা অবস্ট্রাকশন অব জাস্টিসের মতো কোন ঘটনা ঘটান, সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস তাকে ইমপিচ করে পদ থেকে অপসারণ করতে পারবে। কিন্তু ব্যাপারটি বিতর্কের উর্ধে থাকার জন্য সেটা হবে বাইপার্টিসন, অর্থাৎ এই কর্মকা-ে ডেমোক্র্যাটরা শুধু নন শামিল হবেন রিপাবলিকানরাও। কিন্তু চলতি ইম্পিচমেন্ট বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও কংগ্রেসের কাজে বাধা সৃষ্টির যে দুই অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সেটা কেবল ডেমোক্র্যাট দলের সদস্যরাই সমর্থন করেছে। ডেমোক্র্যাটগণ বলেছেন ডোনাল্ড জে ট্রাম্প নিজের স্বার্থ রক্ষার কারণে প্রেসিডেনশিয়াল ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশের স্বার্থকে বিকিয়ে দিয়েছেন। তিনি আগামী ২০২০ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সুবিধা জনক অবস্থানে থাকার অভিপ্রায়ে তার ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত করার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে চাপ দিয়েছিলেন বিধায় কারণে তার সংবিধান লঙ্ঘন ও শপথ ভঙ্গ হয়েছে। এছাড়া ১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ায় হস্তক্ষেপের বিষয়ে গঠিত একটি একটি বিচার বিভাগীয় কমিটির কার্যক্রমে হস্তক্ষেপের অভিযোগ এখনো খাঁড়া হয়ে ঝুলছে তার বিরুদ্ধে। ডেমোক্র্যাটদের মতে বর্তমান রাষ্ট্রপতি নিজেকে আইনের উর্ধে মনে করেন, কিন্তু তিনি সেটি নন। ভোটাভুটির আগে প্রতিনিধি পরিষদে উভয় দলের সদস্যরা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা, আইনের শাসন, গণতন্ত্র সুরক্ষা ও কোনরকম হস্তক্ষেপ ব্যতীত সংবিধান রক্ষায় ইস্পাত কঠিন সংকল্প ব্যক্ত করেছিলেন। একই সঙ্গে তারা ঐসব প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের জন্য পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন। কিন্তু প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান সদস্যরা ডেমোক্র্যাট দলীয় সদস্যদের এই অভিযোগ কোনমতেই আমলে নেননি। তাদের মতে পরিষদে তারা যেভাবে এই ইম্পিচমেন্ট করেছে, তাকে রাজনৈতিক ড্রামা ছাড়া কিছুই বলা চলে না। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ দুটি নেহায়তই হাস্যকর বলা যায় এই কারণে যে, ট্রাম্প ইউক্রেন রাষ্ট্রপতিকে এ বিষয়ে কোনরকম চাপ দেননি। এর ভিন্ন ব্যাখ্যায় রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা বলেছেন, ইউক্রেন দুনিয়ায় তৃতীয় দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ বিধায় সেখানে প্রায় চারশ’ মিলিয়ন ডলার সহায়তা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছিলেন, অন্য কোন কারণে নয়। প্রকৃত কারণ প্রসঙ্গে তারা বলেন, ডেমোক্র্যাট দলের বর্তমান রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী জো বাইডেন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ক্ষমতাসীন থাকাকালে তার পুত্র হান্টার বাইডেনকে ইউক্রেনের তেল কোম্পানিতে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি দেয়া হয়। কিন্তু সেটি পাবার ক্ষেত্রে জোর কোনরকম ভূমিকা ছিল কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য ইউক্রেন প্রেসিডেন্টকে ফোনে তাকে পুনঃ পুনঃ অনুরোধ জানান। এমন একটি বিষয়কে ডেমোক্র্যাটরা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নিজের স্বার্থ রক্ষায় দেশের স্বার্থ বিলিয়ে দেয়ার অভিযোগ এনেছেন, তাদের এই অভিযোগ সম্পর্কে হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ একটি উল্লেখযোগ্য মন্তব্যে বলেছেন অন্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে এ ধরনের বাক্যালাপ নতুন কিছু নয়। আমাদের নানা সম্পর্কের ক্ষেত্রে এমনটি সবসময়েই ঘটে থাকে। তারা আরও বলেন, প্রকৃতপক্ষে ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ২৫ জুলাই কথিত ফোন কালের জন্য নয়, বরং ট্র্রাম্প যেদিন গণতান্ত্রিক ভাবে জনগণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন, সেদিন থেকেই তাকে সরাবার জন্য ডেমোক্র্যাটরা আদাজল খেয়ে উঠেপড়ে লেগেছিলেন। কারণ ঘটে যাওয়া ইম্পিচমেন্ট হবার বহু আগে থেকেই আর দুবার তাকে নিম্নকক্ষ থেকে অভিশংসিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। এর মধ্যে প্রথমবার ছিল এন এফ এল খেলোয়াড়দের জাতীয় সঙ্গীত গাইবার সময় নীল ডাউন হওয়ার সমালোচনা করার জন্য। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্র্রাম্পসহ আমেরিকার ইতিহাসে রাষ্ট্রপতির ইম্পিচমেন্টের সংখ্যা দাঁড়াল তৃতীয়। ইতোপূর্বে ১৮৫৯ সালে জ্যাকসন অভিশংসিত হন, কিন্তু সিনেটে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে এর থেকে রক্ষা পান। ১৯৭৪ সালে ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির কারণে রিচার্ড নিক্সনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে হেরে যান। এরপর জুডিশিয়ারি কমিটিতে ইম্পিচের সম্মুখীন হবার পূর্বেই তিনি পদত্যাগ করেন। ১৯৯৮ সালে বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়ে হোয়াইট হাউসের অফিসে কর্মরত এক ২২ বছরের যুবতী মনিকা লুইনস্কির সঙ্গে যৌন সম্ভোগে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। তৎকালীন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান সদস্যগণ এমন অভিযোগে দোষী সব্যস্ত করে তাকে ইম্পিচ করেছিল। কিন্তু তার দলের ডেমোক্র্যট সদস্যরা এর বিরুদ্ধে একাট্টা হন এই বলে যে ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্টের যৌনতা কোন ক্রিমিনাল অফেন্স যেমন নয়, তেমনি সেটা নয় রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার অপব্যবহার। ডেমোক্র্যাট সংখ্যাগরিষ্ট সিনেট ট্রাইব্যুনালে তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থেকে খালাস পান ও প্রেসিডেন্ট পদে বহাল থাকেন। মনিকা লুইনস্কির সঙ্গে যৌনতার ব্যাপারটি অস্বীকার করে বিল ক্লিনটন গ্র্যান্ড জুরির কাছে মিথ্যাচার করেছিলেন। রিপাবলিকানরা এর ওপর ভিত্তি করে নিম্ন কক্ষে তাকে ইমপিচ করলে ডেমোক্র্যাট সদস্যগণ সে অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তখন ওই ইমপিচ বিরোধিতাকারী ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রাট কংগ্রেস ওম্যান জো লফগ্রেন, যিনি প্রতিনিধি সভার নির্বাচিত সদস্য, চলতি ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে এক সাক্ষাতকারে বলেছেন যেটি তিনি বলেছিলেন তদানীন্তন প্রতিনিধি সভায় ‘শাসনতন্ত্র প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা অপব্যবহার করার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিয়েছে। কিন্তু শপথ গ্রহণ করার পর ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার স্খলনের বিষয়ে মিথ্যাচার করলে তাকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলা যাবে না।’ এবার ফিরে আসা যাক ট্র্রাম্প ইম্পিচ ট্রাইব্যুনালের পরবর্তী কার্যক্রম প্রসঙ্গে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোন যোগাযোগ বিষয়ে যে ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তার প্রকৃত পরিচয় গোপন রেখে শুরু থেকে হুইসেল ব্লোয়ার নাম অভিহিত করা হচ্ছে। এই ব্যক্তি এবং তার সঙ্গে অন্যান্য যারা রয়েছে তাদের পরিচয় সম্পর্কে জানার জন্য প্রেসিডেন্ট তাকে ট্র্রাইব্যুনালের সামনে উপস্থিত করার পক্ষে। এতে ট্র্রাইব্যুনাল দীর্ঘায়িত হলেও তার আপত্তি নেই। কিন্তু সিনেট মেজরিটি পার্টির নেতা সিনেটর মিচ মাককোনেল (রিপাবলিকান) সাফ জানিয়েছেন যে, ডেমোক্র্যাটদের ইম্পিচমেন্ট অভিযোগ যেহেতু সঠিক নয়, সেহেতু তিনি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এর সমাপ্তি ঘটানোর পক্ষপাতী। সে কারণে ঐসব ব্যক্তিদের ট্রাইব্যুনালে টেনে আনতে রাজি নন। আবার অন্যদিকে সিনেট মাইণোরিটি লিডার চাকসুমার, হোয়াইট হাউসের অস্থায়ী চিফ অব স্টাফ মিক মিলভানি ও ট্র্রাম্পের সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনসহ কিছু ব্যক্তিকে ট্র্রাইব্যুনালের সামনে শুধু হাজির করা নয়, বরং সিনেট সম্পূর্ণ ট্রাইব্যুনালটির লাইভ সম্প্রচার চান। মনে করিয়ে দেয়া ভাল, ক্লিনটনের সময় ঘটনাটির লাইভ প্রচার হয়নি। তবে মনিকা লিউনস্কির পূর্ব রেকর্ডকৃত বক্তব্যের অংশবিশেষ শোনানো হয়েছিল। বিশ্লেষকদের মতে, ডেমোক্র্যাটদের লক্ষ্য হচ্ছে আগামী ২০২০’র নির্বাচনে এই ইম্পিচমেন্টটি করে ভোটদানে ভোটারদের মতামত অনুকূলে নিয়ে আসা। নিঃসন্দেহে কৌশলটি যেন এক জুয়া খেলার মতোই রিস্কি। শেষ পর্যন্ত এই খেলা রিপাবলিকানদের পক্ষে শাপে বর হবে, নাকি ডেমোক্র্যাটদের জন্য বুমেরাং হয়ে ফিরে আসবে, ভবিতব্যই জানে। মার্কিন প্রধান প্রধান মিডিয়ায় ডেমোক্র্যাটদের ধারায় নেতিবাচক প্রচার সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে বই কমেনি। বরং তিনি অভিযুক্ত হয়েও নিম্ন কক্ষে ইম্পিচের আগের দিন ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ইউ এস এ টুডে এবং সাফোক ইউনিভার্সিটির জাতীয় পর্যায় এক যৌথ জনমত সমীক্ষার ফলাফলে ট্রাম্প জো বাইডেনের চেয়ে শতকরা ৩ পয়েন্ট, সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের চেয়ে পাঁচ পয়েন্ট ও এলিজাবেথ ওয়ারেনের চাইতে ৮ পয়েন্ট এগিয়ে থাকলেন। এর আগের দিন প্রকাশিত অপর এক সমীক্ষায়, শতকরা ৫১ ভাগ মানুষ চায় না সিনেট ক্ষমতা থেকে বর্তমান প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করুক। এই ইম্পিচমেন্ট নিয়ে ট্রাম্প এবং তার সমর্থকরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ভোটারদের মনোভাব কোন দিকে যাচ্ছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীরা নিশ্চিত নন বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। কারণ নির্বাচনী প্রচারণায় ইম্পিচ নামক বিষয়টি নিয়ে উচ্চকিত না থেকে যেন এড়িয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে মাঠ পর্যায়ের অবস্থা আঁচ করে নিউজার্সির এক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান নিজ দল ত্যাগ করেছেন। প্রসঙ্গত ইম্পিচের বিরুদ্ধে ভোট প্রদান করেছেন একই দলের দু’জন সদস্য। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে কমপক্ষে ২৮টি নির্বাচনী ডিস্ট্রিক্টে তারা রয়েছেন ঝুঁকিতে। কারন ১৬ সালে ঐসব এলাকার ভোটাররা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছিলেন। সবশেষে একটা কথা বলতেই হবে, ওয়াশিংটনের বর্তমান রাজনীতিতে হোয়াইট হাউস ও ‘ক্যাপিটল হিল’ উভয়ের মধ্যে যে চরম দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে, তার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে মার্কিন কংগ্রেস ও জনগণের মধ্যে। এই ক্ষমতার রাজনীতির খেলায় শেষতক আগামী ২০২০ নির্বাচনে আমেরিকানদের ব্যালট কোনপক্ষে যাবে, তার জন্য সামনের বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। লেখক : আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
×