ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ শীতের শুরুতেই বায়ুদূষণ

প্রকাশিত: ০৮:৫৫, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ শীতের শুরুতেই বায়ুদূষণ

মানুষের পৃথিবী সভ্যতার অগ্রগতির দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে মানুষের জন্মহারও বাড়ছে প্রতিনিয়ত। উন্নত হচ্ছে মানুষের জীবন ব্যবস্থা। যাতায়াতের ক্ষেত্রে জীবনাপনকে সহজ করেছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। চাকা আবিষ্কারের পূর্বে যা মানুষ ভাবতেও পারেনি। যেহেতু, মানুষ বাড়ছে, আর তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানবাহন। মানুষ যথেচ্ছভাবে প্রকৃতিকে ব্যবহার করছে, ব্যবহার করছে পরিবেশের নানা রকম উপাদান। মানুষের ব্যবহৃত অধিক যানবাহনের ধোঁয়া বিষাক্ত করে তুলছে চারপাশের বাতাসকে। এ ছাড়া আছে কলকারখানা আর ইটভাটার মতো বিভিন্ন বিষয়। আর এসব থেকে নির্গত ধোঁয়ায় বাসযোগ্য পৃথিবী এখন প্রতিকূলতার দিকে এগোচ্ছে। বাতাসের ভেতরে থাকা ক্ষতিকারক সীসা; মানুষের জন্য খুবই মারাত্মক এবং ক্ষতিকর; যা বায়ুদূষণেরই ফল। প্রতিনিয়ত মানুষ বিভিন্ন রোগব্যাধি দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। নানারকম জটিল ব্যাধি মানুষকে তার সম্ভাবনা থেকে বিচ্যুত করে ফেলছে। আর এসবের কারণ হিসেবে দায়ী; তীব্রাকারে বায়ুদূষণ। বায়ুদূষণ আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে একটি প্রকট সমস্যা। এসব মূলত অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনারই ফল, আর এটাই আমাদের অনিশ্চিত জীবনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আজকাল মানুষ নতুন নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আর এসবের মূল কারণ হিসেবে বলা যায়, চারদিকের ভয়াবহ বিভিন্ন প্রকার দূষণ, যার প্রভাবে এখন নানা প্রকার দূষণের ছড়াছড়ি। বায়ুদূষণ, মাটিদূষণ, পানিদূষণ এসবই প্রকৃতিতে বিরাজমান। আর এসবের জন্য মূলত মানুষই দায়ী। আর এই দায়ী হবার কারণে মানুষকেই হতে হচ্ছে নানারকম ভোগান্তির শিকার। এখন আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে, যানবাহনকে কিভাবে সীমিত পর্যায়ে এনে মানুষকে সে অনুযায়ী কিভাবে সেবা দেয়া যায় এ বিষয়ে অনেক ভাবনার অবকাশ রয়েছে। আর যদি এসব যানবাহন অপরিকল্পিতভাবে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তেই থাকে, তাহলে অনেক সঙ্কট অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। নগরায়ন করতে হবে পরিকল্পনামাফিক। সকল প্রকার অব্যবস্থাপনাকে দূর করে বাসযোগ্য করে তুলতে হবে আমাদের পরিবেশকে; হোক সে নগর কিংবা গ্রাম। আমরা আমাদের সীমিত সম্পদ নিয়েই সাজাতে চাই সবকিছু। তা না হলে ভীষণ বিপদের আশঙ্কা রয়েছে ভবিষ্যতে। রবীন্দ্রনাথ হয়তো নগরসভ্যতার ভয়াবহতা বিবেচনা করেই বলেছিলেন, দাও ফিরে সে অরণ্য। তাই আমাদের মুক্তির পথ এখনই খুঁজতে হবে। আর বায়ুদূষণের পাশাপাশি অন্যান্য দূষণ প্রতিরোধেও হতে হবে সজাগ ও সচেষ্ট। অত্যধিক বায়ুষণ জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাব ফেলে, যার কারণে পরিবেশ ও প্রতিবেশ জীবনবিনাশী হুমকির সম্মুখীন। আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে তা না হলে ভীষণ দুর্দিন অপেক্ষা করছে। আগামী যাতে সুন্দর ও নির্মল হয় তার জন্য আমাদের শহর-নগর-জনপদ নিরাপদ ও পরিকল্পনামাফিক গড়ে তুলতে হবে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখনই জরুরী। কারণ, আমাদের প্রয়োজন নির্মল বায়ু, সুস্থ জীবন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×