ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

সিনেমার গান বনাম আইটেম সং..

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ২৮ নভেম্বর ২০১৯

  সিনেমার গান বনাম আইটেম সং..

চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের কথা- গান থাকত মানুষের মুখে মুখে। ভাললাগা তৈরি করা গানই টেনে নিত সিনেমা হলের মিলনায়তনে.. সে সময় এখন অতীত হয়েছে। ভাল গান বা শ্রোতা পাগল করা গান এখন আর হয় না বললেই চলে! বর্তমান সময়ে সস্তা-নকল, দরদহীন কথা এবং সুরের অকালে হারিয়েছে বাংলা সিনেমার গানের আবেদন। হালে গানের নামে চলছে নব তরঙ্গেও অশ্লীলতা। অনেকেই মনে করছেন কাটপিসের বিকল্প আইটেম সং! কথা নেই বর্তবানেই এক আইটেম সং বানিয়ে জোর প্রচারণা। এদিকে বেশিরভাগ সিনেমায় একটা ওয়ান টাইম আইটেম সং ঢুকিয়েও একই অবস্থা..অথচ নব্বই দশকের গানের সুর ধরেই অনেক তরুণ-তরুণী নিষ্পাপ প্রেম নিবেদন করতেন। সিনেমার গান থাকত মানুষের মুখে মুখে। গানের কদর শুধু সিনেমা হলের পর্দাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। রেডিওতে চিঠি লিখে প্রিয় গান শোনার অনুরোধ ছিল বাংলার সিনেপ্রেমী দর্শকদের.. প্রিয় শিল্পীর গান শুনতে শুনতে স্বপ্নে বিভোর হতেন অগুন্তী শ্রোতা। সে সময়ে গান লিখত দেশবরণ্য কবি-গীতিকাররা, সুর-সঙ্গীত আয়োজনে ছিলেন গুণীজনেরা। চলচ্চিত্রের গান এবং আইটেম সং প্রসঙ্গে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ও জনপ্রিয় খল-অভিনেতা মিশা সওদাগর বলেন, ‘সিনেমার গান শেষ হয়ে গেছে। এখন আর আগের মতো গান হচ্ছে না। সিনেমার কল্যাণে সবার ভাল গান করার চেষ্টা থাকতে হবে।’ সস্তা-নকল কথা-সুরে, হারিয়েছে বাংলা সিনেমার গানের আবেদন। চিত্রায়নেও অশ্লীলতা আর হাস্যকর নাচ ব্যবহার। এখনকার বেশির ভাগ সিনেমার গান বিদেশী গানের নকল অথবা রিমেক। সাম্প্রতিক ধারার বাণিজ্যিক সিনেমা মানেই আইটেম সং। কোন কোন ক্ষেত্রে ওই আইটেম সংয়ের খবর সিনেমার খবরের থেকে বড় করে দেখানোর চেষ্টা দেখছি। বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, ছবি মানেই একটা আইটেম সং থাকতেই হবে। এ জন্য বিশাল সেট ও বিস্তার খরচেও কার্পণ্য করেন না প্রযোজকরা। বাংলা সিনেমার নতুন সংযোজন আইটেম সং। আধুনিক নাচে গানে ভরপুর এই উপাদান পুরোপুরি দর্শকের বিনোদনের জন্য-এমনটা বলছেন পরিচালকরা। যে কারণে গানের চিত্রায়নের মাধ্যমে সুযোগ খোঁজা হয় অশ্লীলতার.. এক রকম হাস্যকর নাচ গানে অসুস্থ বিনোদন! মজার ব্যাপার হচ্ছে এক সময় যারা এসব করতেন তারাই আবার এসব বন্ধ করতে বলেন, শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি ও অভিনেতা ডিপজাল বলেন, ‘আমাদের দেশের মতো মুসলিম দেশে কেন এ রকম গান হবে? কেনই বা এখনকার মেয়েরা এ রকম ড্রেস পরে! আপনার ছবিতেও এ রকম খোলামেলা গান ছিল। তবে তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে এ রকম গান ছিল না।’ সুতরাং এখনই সময়, আইটেম গানের জাদুর মায়া থেকে বের হয়ে আসার। না হলে এটিও কাটপিসের মতো চলচ্চিত্রের বিষফোঁড়ার রূপ ধারণ করতে পারে। হৃদয়স্পর্শ গান দর্শক মনে রাখে। মানুষের মনে গেঁথে থাকে। তাই অনেকেই মনে করছেন গানে অশ্লীলতার সুযোগ না খুঁজে সিনেমার সুদিন ফেরাতে ভাল গান ব্যবহার করতে হবে।
×