ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রমিকের অধিকার রক্ষা

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

শ্রমিকের অধিকার রক্ষা

শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে স্বীকৃত অনেক ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো অনেক দেশেই এখনও শ্রমিকদের অধিকার ব্যাপকভাবে উপেক্ষিত হয়। বাংলাদেশে প্রতিবছর ২০ লাখের মতো তরুণ কর্মক্ষম হয়। কিন্তু তাদের ক্ষুদ্র একটি অংশের কর্মসংস্থান হয়। বাকিরা হয় বেকার থাকে, না হয় অতি সামান্য মজুরির বিনিময়ে কাজ করতে বাধ্য হয়। কয়েকটি পেশা ছাড়া বাকি পেশাগুলোর শ্রমিকরা এখনও কোন হিসাবে আসে না। এর মধ্যে আছে কৃষি, মাছ ধরা, নির্মাণশিল্প, কুটির শিল্প, গ্রামগঞ্জে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা ছোটখাটো কারখানা, দোকান, ইটভাটা ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে না আছে নিয়োগপত্র, না আছে কর্মঘণ্টা, না আছে উপযুক্ত মজুরি। স্বীকৃত পেশাগুলোতেও রয়েছে নানামুখী বঞ্চনা, কথায় কথায় ছাঁটাই, এমনকি নির্যাতনের নজির। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানামুখী চাপের কারণে পোশাকশিল্পে নারী শ্রমিকদের শ্রম-অধিকার ও কর্মপরিবেশের কিছুটা উন্নতি হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নারী শ্রমিকরা এখনও ব্যাপক বঞ্চনার শিকার। অনেক কাজেই পুরুষ শ্রমিকদের তুলনায় তাদের কম মজুরি দেওয়া হয়। নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত মর্যাদা ক্ষুণœ হয়। গৃহস্থালি কাজে সবচেয়ে বেশি নারী শ্রমিক নিয়োজিত থাকলেও এ ক্ষেত্রে এখনো ন্যূনতম শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শ্রমিকদের ঠকিয়ে কিংবা তাদের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে পুঁজির সুষ্ঠু বিকাশ যে সম্ভব নয় তা এখন ধনবাদীরাও স্বীকার করেন। নারীমুক্তির ক্ষেত্রেও মে দিবসের চেতনা অনন্য ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকে পুঁজির দ্রুত বিকাশ ঘটছে। পোশাকশিল্পে বেশ গতিতে এগিয়েছে আমাদের দেশ। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে ৪০ লাখ শ্রমিকের ভাগ্য; যার অধিকাংশই নারী। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের আরেকটি প্রধান খাত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স; যার সিংহভাগই বিদেশ-বিভুঁইয়ে শ্রম দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছেন। দেশের অর্থনীতির বিকাশে যারা অনন্য অবদান রাখছেন তাদের মর্যাদা আমাদের সমাজে প্রশ্নবিদ্ধ। শ্রমিকদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের একাংশের মধ্যেও রয়েছে অনুদার মনোভাব। দেশের অগ্রগতির স্বার্থে উৎপাদন ক্ষেত্রে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সুষ্ঠু সম্পর্কের প্রয়োজন। এ সুষ্ঠু সম্পর্কের মধ্যেই শিল্পব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার স্বার্থ নিহিত। স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধুর বিশেষ আগ্রহে তাঁর সরকার মে দিবসকে সরকারী ছুটির দিন ঘোষণা করেছিল। একইভাবে সীমিত সাধ্যের মধ্যে শ্রমিকস্বার্থ রক্ষা এবং শ্রমিকদের কল্যাণে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, স্বাধীনতার সাড়ে চার দশক পরে এসেও সেই উদ্যোগ গতি পায়নি। বরং অনেক ক্ষেত্রে পশ্চাৎমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। কলকলিয়াপাড়া, মাগুরা থেকে
×