ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামের উইকেট নিয়ে হতাশ সাকিব

প্রকাশিত: ০৯:১০, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

চট্টগ্রামের উইকেট নিয়ে হতাশ সাকিব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সাগরিকায় আফগানিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ দলের একমাত্র টেস্টে স্পিনারদের দাপট থাকবে এটাই বলা হচ্ছিল। কিন্তু আফগানরা প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশী স্পিনারদের হতাশায় ডুবিয়ে ৩৪২ রানের বড় সংগ্রহ পেয়ে যায়। সেখানে আফগান স্পিনারদের দাপটে দ্বিতীয়দিন শেষে বাংলাদেশ দলের প্রথম ইনিংসে রান ৮ উইকেটে ১৯৪। ব্যাপারটা যেন উল্টোই হয়ে গেছে। নিজ দেশে পরবাসী হয়ে গেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এই ছন্নছাড়া পরিস্থিতির পেছনে দায়ী রশীদ খানের ভয়ঙ্কর লেগস্পিন। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে উইকেটের এমন আচরণে বিস্মিত বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান হতাশা ব্যক্ত করেছেন। স্পিন সহায়ক উইকেটে বারবারই সফরকারী দলকে নাকানি-চুবানি খাইয়েছে বাংলাদেশ দল। টেস্ট ক্রিকেটের নবীন সদস্য দেশ আফগানদের বিপক্ষেও একই ফর্মূলা নিয়ে নামে স্বাগতিকরা। কোন পেসার ছাড়াই একাদশে চারজন স্বীকৃত ভাল মানের স্পিনারকে নেয়া হয়। এর সঙ্গে অনিয়মিত স্পিনার হিসেবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুমিনুল হক সৌরভ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও ছিলেন। অর্থাৎ ৭ জন স্পিনার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু আফগানরা আগে ব্যাটিংয়ে নেমে এই স্পিন সপ্তর্ষিকে হতাশ করেছেন। সাকিব-তাইজুলের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের স্পিনকে নখ-দন্তহীন প্রমাণ করে বিশাল সংগ্রহ পায় আফগানিস্তান। প্রতিপক্ষ দলের উইকেট তুলে নিতে যেখানে ঘাম ঝরেছে, সেখানে রশীদ খান-মোহাম্মদ নবীদের নেতৃত্বে আফগান স্পিনাররা রীতিমতো ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তাই এখন চট্টগ্রাম টেস্টে দু’দিন শেষ হতেই ধুঁকছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রথমদিন মূলত এই উইকেটে স্পিনারদের জন্য সহায়ক কোন ভূমিকাই রাখেনি উইকেট। সে কারণেই ২ উইকেট নিতে শেষ পর্যন্ত সংগ্রাম করা সাকিব বিস্মিত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই অনেক বিস্মিত। কারণ আমরা এমন আশা করিনি। আমরা যেমন আশা করেছিলাম তার পুরো বিপরীত ছিল উইকেট। তারমানে এই না যে আমরা ভাল কিছু করতে পারব না। কিন্তু অবশ্যই আমাদের প্রত্যাশার বাইরে ছিল।’ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আসলে প্রথমদিনে ব্যাটিংয়ে নামার সুবিধাটাই কাজে লাগিয়েছে আফগানরা। ৫ উইকেটে ২৭১ রান তুলে নেয় তারা প্রাণহীন উইকেটে প্রথমদিন শেষে। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম কিছুটা সমীহ আদায় করতে পেরেছিলেন দারুণ লাইন-লেন্থ ধরে রেখে বোলিং করে। তাইজুল ৪ উইকেট শিকার করলেও তারা শেষ পর্যন্ত ৩৪২ রান করেছে। এ নিয়ে অবশ্য অবাক হননি সাকিব। কিন্তু প্রথমদিন মাত্র ৫ উইকেট তুলতে পারাটাই তার কাছে বিস্ময়কর। তিনি বলেন, ‘আমরা অবাক হয়েছিলাম যখন প্রথমদিন আমরা ৫ উইকেট পেয়েছিলাম। কারণ ফ্ল্যাট উইকেটে অনেকদিন পর আমরা খেলেছি বলে মনে হয়।’ দ্বিতীয়দিনেও উইকেট তেমন পাল্টায়নি। এরপরও দুই আফগান স্পিনার রশীদ-নবীর দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৮ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ দল। যেন নিজেদের গড়া ফাঁদে নিজেরাই আটকা পড়ার মতো ব্যাপার। সাকিব বলেন, ‘খুব একটা কিন্তু ফিঙ্গার স্পিনারদের জন্য বদলেছে বলে মনে হয় না। রিষ্ট স্পিনাররা সবসময় সাহায্য পাবে। কারণ রিষ্ট স্পিনারদের ভেতরও ওদের বৈচিত্র্য আছে। কাজেই ওদের একটু সুবিধা অবশ্যই থাকবে।’ কোন পেসারছাড়া একঝাঁক স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েও কার্যকর না হওয়াতে হতাশ সাকিব। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই হতাশার। এখন এখান থেকে কিভাবে ফিরে আসতে পারি (ভাবতে হবে)। আমরা যেভাবে দল সাজিয়েছি হয়তো আপনারা বুঝবেন কি ধরনের উইকেট আমরা আশা করেছিলাম।’
×