ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘ভার্জিলের পুরস্কার আমাদের সবার’

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

‘ভার্জিলের পুরস্কার আমাদের সবার’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লিওনেল মেসি কিংবা ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর কেউ নয়। সময়ের দুই মহাতারকাকে পেছনে ফেলে উয়েফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জিতলেন লিভারপুলের ভার্জিল ভ্যান ডাইক। বৃহস্পতিবার রাতে মোনাকোয় চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ড্র অনুষ্ঠানে ইউরোপের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ভ্যান ডাইকের নাম ঘোষণা করা হয়। প্রিয় শিষ্যের এমন অর্জনে গর্বিত কোচ জার্গেন ক্লপও। ২৮ বছর বয়সী এই সেন্টার ব্যাকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অলরেডদের অভিজ্ঞ কোচ। ক্লপের মতে, এই অর্জনের অংশীদার পুরো লিভারপুল। সকলের সহায়তায় এই অর্জন ভ্যান ডাইকের। এ প্রসঙ্গে জার্গেন ক্লপ বলেন, ‘গৌরাবন্বিত অর্জন। সত্যিই এটা অনেক বড় অর্জন। তার (ভার্জিল) জন্য খুব আনন্দ হচ্ছে আমার। দলের অন্য সবার জন্যও আনন্দ হচ্ছে আমার। কেননা সে নিশ্চয়ই জানে যে, তার চারপাশে থাকা খেলোয়াড়দের ছাড়া এটা জয় করতে পারতো না। যে কারণেই এই পুরস্কার আমাদের সবার। কিন্তু এটা গ্রহণ করার জন্য মঞ্চে শুধু আমাদের বড় মানুষকেই পাঠিয়েছি।’ গত মৌসুমটা স্বপ্নের মতো কেটেছে ভার্জিলের। ২০১৮-১৯ মৌসুমে ইংল্যান্ডে খেলা ফুটবলারদের ভোটে প্রফেশনাল ফুটবলার্স এ্যাসোসিয়েশনের (পিএফএ) বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি প্রিমিয়ার লীগের মৌসুম সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন তিনি। এরপর উয়েফার সেরা! ২০১০-১১ মৌসুমে এই পুরস্কার চালু হওয়ার পর ভার্জিল ভ্যান ডাইকই প্রথম ডিফেন্ডার যিনি এই পুরস্কার জয়ের অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়েন। এতে জার্গেন ক্লপও বিস্মিত। তার মতে ‘একজন ডিফেন্ডারের জন্য এই পুরস্কার বিরল। ফুটবলে যা দারুণ একটা বার্তা দিচ্ছে। আমরা সবাই গোল দেখতে ভালবাসি। গোল করতে ভালবাসি। কিন্তু ডিফেন্স নিয়েও এখন লোক উচ্ছ্বসিত। ভার্জিল অবিশ্বাস্য ডিফেন্ডার। এই মুহূর্তে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে বিশ্বের সেরা ডিফেন্ডার ভার্জিলই। তাই এই পুরস্কার ওর প্রাপ্যই ছিল।’ ক্লপের কথার সঙ্গে ভার্জিলও সুর মিলিয়েছেন। সবার প্রতিই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অলরেডদের এই ডাচ ডিফেন্ডার। পাশাপাশি ভবিষ্যত পরিকল্পনাও করে ফেলেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ডাইক বলেন, ‘আমাকে আরও কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। এখন পর্যন্ত যা করেছি তাতে আমি খুশি। এই ট্রফি জিতেও খুশি। আমার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সবার জন্য এই পুরস্কার।’ ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে সাউদাম্পটন থেকে লিভারপুলে যোগ দেন ভ্যান ডাইক। এনফিল্ডে এসে খুব অল্প সময়েই সাফল্যের শিখরে পৌঁছে যান তিনি। গত মৌসুমে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে মোট ৫৯টি ম্যাচ খেলেন তিনি। লিভারপুলের চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়ে তার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শুধু তাই নয়, ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের গত আসরে সবচেয়ে কম (মাত্র ২২) গোল হজম করেছিল লিভারপুল। সেই জমাট রক্ষণের স্তম্ভ ছিলেন ভ্যান ডাইক। পাশাপাশি আক্রমণেও সমান দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে এই মৌসুমে ৯ গোল করার পাশাপাশি আরও চার গোলের পেছনেও তার অবদান ছিল। এছাড়া ইউরোপা নেশন্স লীগের অভিষেক আসরে হল্যান্ডের ফাইনালে ওঠার পেছনেও বড় অবদান ছিল ভ্যান ডাইকের। যদিওবা শেষ পর্যন্ত পর্তুগালের কাছে ফাইনালে হেরে যায় ডাচরা। গতবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতার পর এবার লিভারপুলের লক্ষ্য প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা পুনরুদ্ধার। শুরুর ইঙ্গিতটাও ঠিক সে রকম। এখন পর্যন্ত খেলা প্রথম তিন ম্যাচের সবকটিতেই জয় পেয়েছে তারা। লীগে এই তিন সপ্তাহে একমাত্র অপরাজিত দল লিভারপুল। শনিবার আবারও মাঠে নামে অলরেডরা। প্রতিপক্ষ বার্নলি। ভ্যান ডাইকের পুরস্কার নিঃসন্দেহে দলকে আরও তাতিয়ে দিচ্ছে। মোহাম্মদ সালাহ, রবার্তো ফিরমিনোরা নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা জেতার জন্য।
×