ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের গানে মন্থরগতি!

প্রকাশিত: ০৮:৩৫, ১১ আগস্ট ২০১৯

 ঈদের গানে মন্থরগতি!

গৌতম পান্ডে ॥ ঈদ মানেই আনন্দ। এই আনন্দের অন্যতম অনুষঙ্গ নতুন নতুন গান। একটা সময় ছিল বছরের দুই ঈদে গানের বাজার সবচেয়ে বেশি জমে উঠত। দুই ঈদকে উপলক্ষ করে সিনিয়র ও চলতি প্রজন্মের তারকা ও সঙ্গীত সংশ্লিষ্টরা ব্যস্ত হয়ে পড়তেন গান নিয়ে। বিভিন্ন কোম্পানি শিল্পীদের একক, দ্বৈত ও মিশ্র এ্যালবাম প্রকাশ করত। শ্রোতারাও অপেক্ষায় থাকতেন ঈদে প্রিয় শিল্পীর এ্যালবাম কেনার জন্য। সব মিলিয়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করত। এখন আর সেই দিন নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে গানের বাজার। সিডির বদলে ডিজিটালি গান প্রকাশ হচ্ছে। এ্যালবামের বদলে জায়গা করে নিয়েছে সিঙ্গেল। আর এই কারণে গানের সংখ্যাও কমে এসেছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই স্থবির অবস্থা বিরাজ করছে সঙ্গীতাঙ্গনে। হাতে গোনা দু-একটি বাদে গেল রোজার ঈদেও তেমন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি কোন গান। এবার কোরবানির উপলক্ষে এখন ঢিমেতালে চলছে গানের বাজারের প্রস্তুতি। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো এবারের ঈদে কম গান প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছে। আসছে কোরবানি ঈদে ফাহমিদা নবী, এসডি রুবেল, আসিফ আকবর, কনা, আরফিন রুমি, ইমরান, পূজা, মিনার, কাজী শুভ, তানজীব সারোয়ারসহ বেশ কিছু শিল্পীর গান প্রকাশের কথা রয়েছে। ঢিমেতালে গানের বাজারের প্রস্তুতির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এমআইবি সভাপতি ও লেজার ভিশনের চেয়ারম্যান এ কে এম আরিফুর রহমান বলেন, এখন আসলে অবস্থা ভাল নয়। কারণ গানের বিনিয়োগ উঠিয়ে আনাই সম্ভব হচ্ছে না। আর মুনাফা তো দূরেই থাক। আমরা অফিস চালাতেও হিমশিম খাচ্ছি। কারণ ওয়েলকামটিউন থেকে আয় কমে গেছে। পাশাপাশি ইউটিউবের মাধ্যমে গান থেকে যে আয় আসে সেটায় দীর্ঘসূত্রিতা থাকে। সব মিলিয়ে এমন স্থবির অবস্থা বিরাজ করছে। এ কারণে আমরাও নতুন গান প্রকাশ কমিয়ে দিয়েছি। আসছে কোরবানি ঈদেও খুব বেশি গান হয়তো আমরা প্রকাশ করবো না। তবে আমরা এমআইবির তরফ থেকে চেষ্টা করছি এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের। আমরা আশা করি দ্রুতই এ অবস্থা কেটে যাবে। চলতি অবস্থা প্রসঙ্গে কণ্ঠশিল্পী এসডি রুবেল বলেন, আগের মতো অবস্থা নেই সেটা ঠিক। তবে এখন কিন্তু শিল্পীরা কোম্পানির ওপরও পুরোপুরি নির্ভর নয়। কারণ আমি নিজে আমার ইউটিউব চ্যানেলে গান প্রকাশ করছি। এমন আরও অনেক শিল্পী রয়েছেন যারা নিজস্ব চ্যানেলে গান প্রকাশ করছেন। এক্ষেত্রে স্বত্বটাও নিজের কাছে থাকছে, আবার আয়ের সঠিক হিসাবটাও পাওয়া যাচ্ছে। আমি মনে করি এভাবেই এখন শিল্পীদের এগুতে হবে। সময়ের সঙ্গে চলতে হবে। না হয় পিছিয়ে পড়তে হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, ভাল মানের গান দিতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে শিল্পী রবি চৌধুরী বলেন, আগের মতো এখন গানের বাজার নেই। এটা মেনে নিতে হবে। সময়ের সঙ্গে এখন ডিজিটালি গান প্রকাশ হচ্ছে। সারা বিশ্বেই তাই হচ্ছে। সুতরাং আমরা কেন পিছিয়ে থাকব। আমি মনে করি সিডি হোক আর ডিজিটালি ভাল মানের গান দিতে পারলে শ্রোতারা অবশ্যই সেটা গ্রহণ করবেন। ইতোমধ্যে ঈদ-উল-আজহাকে সামনে রেখে বরাবরের মতো লেজার ভিশন এবারও বেশকিছু অডিও গান, মিউজিক ভিডিও এবং নতুন নাটক প্রকাশ করতে যাচ্ছে। বর্তমান মন্দা বাজার থাকা সত্ত্বেও লেজার ভিশনের এবারের আয়োজনেও থাকছে বৈচিত্র্যতা। জানা যায়, তারা প্রকাশ করছে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এফএ সুমনের কণ্ঠে গাওয়া ‘জানরে আয়’। এ সময়ের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সুমি মির্জার কণ্ঠে গাওয়া ‘বিনোদিনী রাই’। জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ইমরানের কণ্ঠে গাওয়া ‘হয়েছি শুধু তোমার’, কণ্ঠশিল্পী বেলাল খান ও সানিয়া রমার দ্বৈত কণ্ঠে গাওয়া ‘তোর পিরিতে’, অয়ন চাকলাদার ও ইলমার দ্বৈত কণ্ঠে গাওয়া গান ‘এক ঠিকানায় রবো’, জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আরফিন রুমি ও সাবরিনার দ্বৈত কণ্ঠে গাওয়া ‘বাঁচি কি করে’, কাজী শরীফের কণ্ঠে গাওয়া ‘মন পাহারায়’, কণ্ঠশিল্পী মোল্লা আজাদ হোসেনের কণ্ঠে গাওয়া ‘শূন্য ফেরিওয়ালা’, বিশ্বাসের কণ্ঠে গাওয়া ‘এক প্রেমেতে কয়বার মারবা’। এ ছাড়াও লেজার ভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশের অপেক্ষায় আছে আরও বেশকিছু মিউজিক ভিডিও ও নাটক।
×