ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

কাতারে জালমে খলিলজাদ

তালেবানের সঙ্গে যে কোন সময় শান্তি চুক্তি

প্রকাশিত: ০৯:০৩, ১০ আগস্ট ২০১৯

 তালেবানের সঙ্গে যে কোন  সময় শান্তি চুক্তি

আফগানিস্তানের তালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তির দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। আর তালেবানও বিষয়টি স্বীকার করেছে। ১৮ বছর ধরে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে আসছে তালেবান। তবে কাতারের দোহায় বিলাসবহুল হোটেলে তালেবান কমান্ডার ও কূটনীতিকদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে চা-চক্র এবং শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাতারের ওই হোটেলে আলোচনায় অংশ নেন মার্কিন প্রতিনিধি জালমে খলিলজাদ এবং তালেবান কমান্ডাররা। জীবনের সবচেয়ে কঠিন চুক্তির সমাপ্তি টানতে কঠোর পরিশ্রম করছেন খলিলজাদ। ৩০ বছর আগে এই তালেবান বাহিনী আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত বাহিনীকে হটিয়ে দেয়। আর এখন আফগান বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তারা। সমঝোতা বৈঠক চলার সময়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে তারা। গত ৭ আগস্ট কাবুলের একটি পুলিশ স্টেশনে তালেবানের আত্মঘাতী হামলায় ১৪ জন নিহত এবং কমপক্ষে ১৪৫ জন আহত হন। খবর টাইমের। মার্কিন প্রতিনিধি খলিলজাদ আর তালেবানের প্রধান আলোচক মোল্লাহ আব্দুল গনি বরোদার ব্যক্তিগতভাবে মিত্রদের বোঝাচ্ছেন যে, তারা একটি সমঝোতায় উপনীত হয়েছেন। এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন মার্কিন, আফগান ও পাকিস্তানী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে বলে টাইমকে জানানো হয়। এজন্য আফগানিস্তান থেকে অধিকাংশ মার্কিন সেনাকে আগামী বছরের নবেম্বরের মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। তবে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে খলিলজাদের একটি দাবি। তিনি দাবি করেন, যতদিন সন্ত্রাসবাদী হুমকি থাকবে ততদিন মার্কিন সন্ত্রাসবাদবিরোধী বাহিনী আফগানিস্তানে অবস্থান করবে। আফগানিস্তান ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা জানান, আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক কমান্ডার জেনারেল অস্টিন স্কট মিলার আন্তর্জাতিক কর্মকর্তাদের বলেছেন যে, আল-কায়েদা ও আইসিস-খোরাসান যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তার অভিযানকে যদি বাধাগ্রস্ত করা হয়, তাহলে তিনি এলিট স্পেশাল অপারেশন ইউনিট ও বিমানবাহিনীর প্রত্যক্ষ সমর্থনে তিনি এটা চালিয়ে যেতে পারেন। তালেবানের পাকিস্তানভিত্তিক কোয়েটা শূরা নেতা বরোদারকে আফগানিস্তান থেকে সন্ত্রাসবাদবিরোধী ও গোয়েন্দা যন্ত্রপাতিসহ সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারে এক বছরের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। এছাড়া আরও কিছু বাধা অতিক্রম করতে হবে। যদি আগামী মাসে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হয়, তাহলে ২০২০ সালের নবেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা অনুযায়ী ১৪ মাস সময় পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যা তালেবানের দাবির চেয়ে দুই মাস বেশি। আর তালেবানের দখলে যেসব এলাকা রয়েছে, সেখানে কোন বিদেশী যোদ্ধা থাকবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছে। তবে খলিলজাদের দাবি অনুযায়ী তারা আল-কায়েদাকে প্রত্যাখ্যান করবে, সে বিষয়টি বলেনি তালেবান। আর তারা শুধু মার্কিন সৈন্যদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে, আফগান সরকারের বাহিনীর সঙ্গে নয়। খলিলজাদের এই প্রচেষ্টায় রাগান্বিত আফগান কর্মকর্তারা এবং ক্ষুব্ধ হয়েছে মার্কিন কূটনীতিক, গোয়েন্দা ও সামরিক কর্মকর্তারা। তবে খলিলজাদ আফগান, জাতিসংঘ ও ন্যাটো কর্মকর্তাদের বলেছেন দোহার আলোচনা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও দ্রুত মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করে নিতে পারেন।
×