ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাচ্যনাট স্কুলের ৩৬তম ব্যাচের সমাপনী ও নাটক মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৯:০৮, ১৫ জুলাই ২০১৯

 প্রাচ্যনাট স্কুলের ৩৬তম ব্যাচের সমাপনী ও নাটক মঞ্চায়ন

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের থিয়েটারের বিস্তারে এবং দক্ষ থিয়েটারকর্মী তৈরিতে সুদীর্ঘ ১৮ বছর ধরে কাজ করে চলেছে প্রাচ্যনাট স্কুল অব এ্যাকটিং এ্যান্ড ডিজাইন। এই স্কুলের ৬ মাসের পাঠ্যসূচীতে একজন প্রশিক্ষণার্থী থিয়েটারের সকল আনুষঙ্গিক বিষয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা পায়। এরই মধ্যে এই স্কুলের ৩৫টি ব্যাচ সফলভাবে তাদের কোর্স সম্পন্ন করেছেন। এবার ৩৬তম ব্যাচেরও পরিসমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। আজ সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রাচ্যনাট স্কুল অব এ্যাকটিং এ্যান্ড ডিজাইনের ৩৬তম ব্যাচের সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠান। ৩৬তম ব্যাচ তাদের সমাপনী প্রযোজনা হিসেবে লুইজি পিরানদেল্লোর ‘নাট্যকারের সন্ধানে ছয় চরিত্র’ নাটকটি উপস্থাপন করবে। নাটকটি অনুবাদ করেছেন খাইরুল আলম সবুজ এবং নির্দেশনা দিয়েছেন মিতুল রহমান। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অধ্যাপক আজফার হোসেন এবং অভিনেত্রী মুনিরা ইউসুফ মেমি। নাট্য প্রদর্শনী ছাড়াও ঐদিন মিলনায়তনের বাইরে উন্মুক্ত পোস্টার প্রদর্শনী হবে। ‘নাট্যকারের সন্ধানে ছয় চরিত্র’ নাটকটি লুইজি পিরানদেল্লোর। অনুবাদ করেছেন খায়রুল আলম সবুজ। নির্দেশনা, মঞ্চ ও পোস্টার ভাবনা মিতুল রহমান। সঙ্গীত এবি এস জেম, কোরিওগ্রাফি স্নাতা শাহরিন, আলোক ভাবনা ও প্রয়োগ মোঃ শওকত হোসেন সজিব, নাসিম ঐশ্বর্য আহমেদ, মোঃ সামিউল হক খন্দকার, আফসানা ফেরদৌসী, সানজিদা আনোয়ার প্রীতি, রাকিব আহমেদ তমাল, তাসনুভা আন্দালিব মাহাবুব, নিজামউদ্দিন তামুর, সৌমিক সরকার, অর্ঘ্যমিত্রা তরফদার, মোঃ নাইমুর রহমান (নাভিল), মোঃ নাসিমুল হাসান শোভন, অনিরুদ্ধ অনু, সাদ-উর-রশিদ (ধ্রুব), পংকজ বর্মন, তামান্না সিদ্দিক ঐশী, আমিন খান নিরব, শুভ্র সরখেল, আসিফুর রহমান রেজা, মোঃ শরিফুল হক ভুঁইয়া (সাকিব), মোঃ মেহেদী হাসান, ইভা সাহা লোচন, সেমন্তী ডি’ কস্তা । ‘নাট্যকারের সন্ধানে ছয় চরিত্র’ নাটকের গল্পে দেখা যাবে- নতুন নাটকের মহড়া চলছে। এমন সময় বিনা অনুমতিতে আগমন ঘটে এক ভদ্রলোকের। সঙ্গে তার পরিবার। তিনি বলেন, আমরা আপনাদের জন্য একটি নাটক নিয়ে এসেছি, এখানে মঞ্চস্থ করতে চাই। এ যেন মামা বাড়ির আবদার! ঘোর প্রতিবাদ করেন স্বয়ং নির্দেশক এবং তার কলা-কুশলীবৃন্দ। কিন্তু পরস্পরের ওপর দোষ চাপাতে ব্যস্ত এই সাংঘর্ষিক চরিত্ররা তাদের গল্প দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই দর্শক সারিতে বসে যেতে বাধ্য করল ক্ষুব্ধ মঞ্চকর্মীদের। তারপর? থিয়েটারের খেয়ায় চড়ে বাস্তবতার সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে বারবার যেন তারা ডুবে চলছিল রূপকথার ঘূর্ণিতে! ইতালিয়ান নাট্যকার লুইজি পিরানদেল্লোর এই নাটকটি ১৯২১ সালে প্রথম প্রকাশ হয় বলে জানা যায়। এটিকে এ্যাবসার্ড মেটাথিয়েটার নাটক হিসেবে গণ্য করা হয়। এই নাটকে বারংবার বলা হচ্ছে- চরিত্রের বাস্তবতাই বাস্তব, অভিনয়শিল্পীরা নয়। অন্যভাবে বলতে গেলে চরিত্রই সত্য, মানুষ কেবল ধারক ও বাহক। নাটকটি প্রসঙ্গে নির্দেশক মিতুল রহমান বলেন, ‘ওরা যতটা বাস্তব নয় ততটাই সত্য’। নাটকটি পড়ে এটাই আমার প্রথম অনুভূতি। আমি নির্দেশক নই বরং অভিনয়শিল্পীর দৃষ্টি দিয়ে মঞ্চে পাগলা ঘোড়া ছোটাতে ইচ্ছে করে সুযোগ পেলেই। নাটকটিকে নাট্যকার কোন সময় বা স্থানে বেঁধে দেননি। হাতে পাওয়া নাটকটির একাধিক অনুবাদ এবং দস্যিপনায় সিদ্ধহস্ত শিক্ষার্থীদের একটি ছাঁচে ফেলতে শুরুতে কিছুটা বেগ পেতে হলেও পরে তা মায়ায় বেঁধেছে। স্কুলের প্রতিটি ব্যাচের মূল প্রযোজনা নির্দেশনা দেয়া আমাদের একটি নিয়মিত কাজ। নির্দেশনার মুন্সীয়ানা নয় বরং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নাটক নির্মাণের প্রতিটি ধাপের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়াটাই আমাদের কাছে বেশি গুরুত্ব পায়। আমাকে সহ্য করার জন্য ধন্যবাদ শ্রাবণ শামীম ও ডায়না মেরিলীন কে। কিভাবে ভুলব বন্ধু স্নাতা শাহরিন আর এ বি এস জেম এবং মোঃ শওকত হোসেন সজিবকে- যারা এক ডাকেই সাড়া দিলেন অতীতের মতোই। ধন্যবাদ স্কুল কর্তৃপক্ষকে আবারও আমার ওপর ভরসা করবার জন্য। পাভেল ভাইকে যিনি এই পা-ুলিপিটি আমার হাতে তুলে দিয়েছেন। পরিশেষে অনেক শুভ কামনা রইল বেশ সম্ভাবনাময় এই শিক্ষার্থীদের জন্য।
×