ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পোশাক খাতে আরও ৫৬৫০ কোটি টাকা প্রণোদনা দাবি

প্রকাশিত: ০৯:৪২, ১৭ জুন ২০১৯

পোশাক খাতে আরও ৫৬৫০ কোটি টাকা প্রণোদনা দাবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আরও ৫ হাজার ৬৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করেছে তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনটি বলছে, প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাক খাতের জন্য ১ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিয়ে ২ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় আরও ২ শতাংশ প্রণোদনা বাড়িয়ে অতিরিক্ত ৫ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে। কেননা পোশাকখাতকে টিকিয়ে রাখতে বেশ কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ক্রমেই বন্ধ হচ্ছে ছোট ছোট কারখানা। এজন্য প্রণোদনা বাড়ানোর বিকল্প নেই। রবিবার প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজধানীর একটি হোটেলে বিজিএমইএ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিজিএমইএ। এতে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক এই দাবি করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ, সহ-সভাপতি এস.এম. মান্নান (কচি), সহ-সভাপতি (অর্থ) এম. এ রহিম (ফিরোজ) ও সহ-সভাপতি মোঃ মশিউল আজম (সজল)। রুবানা হক বলেন, তৈরি পোশাক খাত দেশের মোট রফতানির ৮৩ শতাংশ অবদান রাখে। এর সঙ্গে প্রত্যাক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে কয়েক কোটি মানুষ। প্রস্তাবিত বাজেটের আগে আমাদের দাবি ছিল ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনার। এতে টাকার পরিমাণ দাঁড়াত ১৮ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। কিন্তু দেয়া হয়েছে এক শতাংশ হারে। এটি যথেষ্ট নয়। এজন্য চূড়ান্ত বাজেটে ৩ শতাংশ হারে বরাদ্দ দাবি করছি। মুদ্রার বিনিময় হারকে প্রণোদনা বাড়ানোর যুক্তি হিসাবে তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব ছিল ডলার প্রতি ৫ টাকা বিনিময় হার প্রদান। কিন্তু তা গৃহীত হয়নি। অথচ মোট রফতানি আয়ের ওপর ডলার প্রতি ১ টাকা অবমূল্যায়ন হলেও পোশাকখাতে বছরে প্রায় ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা পায়, সে হিসাবে ১ শতাংশ প্রণোদনা কম। এক প্রশ্নের জবাবে তৈরি পোশাক খাত একটি বিরাট চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তৈরি পোশাকের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা অন্যতম চ্যালেঞ্জ। একারণে পণ্য বহুমুখীকরণ করা যাচ্ছে না। এছাড়া এখাতে প্রযুক্তির যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। টেকনোলজি না থাকার কারণে প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে পেরে উঠা যাচ্ছে না। রুবানা আরও বলেন, বিশে^র সবচেয়ে বেশি কমপ্লায়েন্স কারখানা এখন বাংলাদেশে। কিন্তু বায়ারদের কাছে পণ্যের দাম বাড়ানো যাচ্ছে না। এটা এখন সাংঘাতিক চ্যালেঞ্জ। এছাড়া ছোট কারখানাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা যাচ্ছে না। প্রতি মাসে কিছু কিছু করে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। রুবানা হক বলেন, প্রতিনিয়ত শুনতে হয়, আমরা ম্যাচিউরড, এস্টাব্লিশড। আর সাহায্য দরকার নেই, তা ঠিক নয়। পোশাকে কিন্তু ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি নেই। গড়ে ৫ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি রয়েছে। গত এক মাসে আমরা ৩০টি ফ্যাক্টরি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। ঈদের আগে অনেকে মেশিন বিক্রি করে হলেও বেতন দিয়েছে। পোশাক খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রণোদনা বাড়ানো দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, বরাদ্দ বেশি থাকলেও বছরে আমরা সর্বোচ্চ ৮০০ কোটি টাকার প্রণোদনা উঠিয়েছি। নানারকম আমলাতান্ত্রিক ঝামেলার কারণে অনেকেই ইনসেন্টিভ পান না, নেনও না। নতুন বাজারের ক্ষেত্রে প্রণোদনা বাড়ানো উচিত। পোশাক খাতকে পরাজিত বনের বিড়াল বানাবেন না। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, কৃষকের সঙ্গে মালিকের তুলনা করা চলে না। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গেলে মনে হয় আমাদের পোশাক খাত শিশু। আসলেই আমরা দুর্বল শিশুর অবস্থানে চলে এসেছি। প্রস্তাবিত বাজেটে পোশাক কারখানায় প্রাকৃতিক গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতে ওপর ভ্যাট অব্যাহতির বিষয়টিকেও স্বাগত জানান বিজিএমইএ।
×