ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এবার দুর্ভোগ কম হবে

প্রকাশিত: ০৯:০৩, ৩০ মে ২০১৯

 এবার দুর্ভোগ কম হবে

আব্দুল্লাহ আল মাছুম ॥ মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর ঈদ আসে স্রষ্টার কাছ থেকে পুরস্কারের বার্তা নিয়ে। এজন্যই ঈদ আনন্দ-উৎসবের দিন। সে উৎসবের ঘণ্টা ইতোমধ্যে বাজতে শুরু করেছে। আর কিছুদিন পরেই ঈদ। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ধর্মপ্রাণ মুসলিম হওয়ায় এদেশে ঈদের আমেজ অনন্য। সবার মাঝেই ভালভাবে ঈদ পালনের তাড়া থাকে। সেইসঙ্গে কর্মজীবীদের জন্য বছরের সেরা ছুটিও মিলে এ সময়। তাই সবাই চায় আনন্দের মুহূর্তটুকু পরিবার, আত্মীয়, কাছের বন্ধুদের সঙ্গে কাটাতে। আনন্দ ভাগাভাগির আশায় জন্মস্থানে ফিরে যাওয়ার টান থেকে খুব কম মানুষই নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারে। তাই রাজধানী ঢাকা ছাড়ার হিড়িক পড়ে যায়। চিরচেনা যানজটের ঢাকাও আয়েশে থাকে কয়েকদিন। এত এত মানুষ একসঙ্গে ঢাকা ছাড়ার কারণে প্রতিবছরই ঈদযাত্রা পরিণত হয় দুর্ভোগে। যানবাহনের অপ্রতুলতা, সড়কে অব্যবস্থা, ফিটনেসবিহীন যানবাহন মেরামত করে সড়কে নামানো, বেপরোয়া গতি ও চালকদের অদক্ষতার জন্য ঘটে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার শিকার মানুষদের ঈদ আনন্দ পরিণত হয় বিষাদে। তবে এবারের ঈদযাত্রায় অন্যান্য বছরের চাইতে দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমবে। সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও তৎপরতা এমনটাই বলছে। গত শনিবার দেশবাসীর ঈদ উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় মেঘনা সেতু ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু উদ্বোধন করেছেন। এর আগে গত ১৬ মার্চ উদ্বোধন করা হয় দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এসব প্রকল্পের কাজ ঈদের আগেই শেষ হওয়ায় এ সড়কপথের যাত্রীরা স্বস্তিতে রয়েছে। এখন মাত্র পৌনে দুই ঘণ্টায় ঢাকা থেকে কুমিল্লা পৌঁছে যাচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থেকে কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুর পর্যন্ত ছিল বিভীষিকার নাম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হতো। ঈদযাত্রার আগেই এ দুর্ভোগের অবসান হয়েছে। এছাড়াও একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনাবাড়ী ও চন্দ্রা ফ্লাইওভার, কালিয়াকৈড়, দেওহাটা, মির্জাপুর ও ঘারিন্দা আন্ডারপাস এবং কড্ডা-১, জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কে সেতু উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজে বাঁশি বাজিয়ে ও সবুজ পতাকা উড়িয়ে ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ নামে স্বল্প বিরতির আন্তঃনগর ট্রেনের উদ্বোধন করেন। এসব উন্নয়ন প্রকল্প এবারের ঈদযাত্রায় দেশের মানুষকে কয়েকটি রুটে স্বস্তি দেবে। মহাসড়কে তিন চাকার নিষিদ্ধ যানবাহন, স্বল্পগতির ও ফিটনেসবিহীন যানবাহনের জন্য অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কে নিষিদ্ধ যান চলাচলে থাকছে কড়াকড়ি। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দৈনিক জনকণ্ঠে ২৩ মে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি থেকে মন্ত্রণালয়ের আরও ৩২টি পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে জানা যায়। ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সড়ক মেরামত, যানজট নিয়ন্ত্রণে যত্রতত্র পার্কিং বন্ধ, মহাসড়কে নিষিদ্ধ যানবাহন বন্ধ, টোল প্লাজার সব বুথ খোলা রাখা, ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি, দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন দ্রুত অপসারণ, রেশনিং পদ্ধতিতে গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ করা, মহাসড়ক থেকে ভাসমান বাজার অপসারণসহ আরও বেশকিছু পদক্ষেপ রয়েছে। এছাড়াও সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ ঠেকাতে নজরদারি বাড়িয়েছে। এসবসহ আরও কিছুদিক বিবেচনায় এবারের ঈদযাত্রা কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক হওয়ার আশা রয়েছে। সরকারের উচ্চপদস্থ দায়িত্বশীলরাও এমন আশ্বাস দিচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা থেকে
×