ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম বন্দরে সব ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ

প্রকাশিত: ১২:১৩, ৩ মে ২০১৯

 চট্টগ্রাম বন্দরে সব ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণির কারণে ৬ নম্বর বিপদসঙ্কেত জারির পর চট্টগ্রাম সুমদ্রবন্দরে সব ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বন্দরের জেটি ও বহির্নোঙ্গরের জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। কর্ণফুলী থেকে কোন লাইটারেজ জাহাজও বঙ্গোপসাগরে বহির্নোঙ্গরে যাচ্ছে না। ঝুঁকি এড়াতে বন্দরের জেটি থেকে সব জাহাজকে বহির্নোঙ্গরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। জেটিতে ক্রেনসহ কনটেইনার ও পণ্য ওঠানামায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম শক্তভাবে বেঁধে রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানিয়েছেন, আবহাওয়া বিভাগের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর বিপদসঙ্কেত জারির পর বন্দরের নিজস্ব এ্যালার্ট-থ্রি জারি করা হয়েছে। জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামা তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জাহাজগুলোকে জেটি ছাড়তে বলা হয়েছে। আর জেটিতে বন্দরের যেসব ইক্যুইপমেন্ট আছে সেগুলোকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর ও বহির্নোঙ্গর মিলিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মোট জাহাজ ছিল ১৬৮টি। এর মধ্যে পণ্যবোঝাই জাহাজ ছিল ৮০টি। আবার এর মধ্যে ১৬টি জাহাজ জেটিতে পণ্য খালাসের জন্য নোঙ্গর করা ছিল। বাকি ৬৪টি জাহাজ ছিল বহির্নোঙ্গরে। ৬ নম্বর বিপদসঙ্কেত জারির পর জেটি থেকে ১৬টি জাহাজকে সরানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন্দরের সচিব ওমর ফারুক। এছাড়া বন্দরের জেটিতে ও সংলগ্ন ইয়ার্ডে কনটেইনার থেকে পণ্য খালাস ও বোঝাইয়ে নিয়োজিত ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান, কনটেইনার মুভারগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে বলা হয়েছে। সচিব বলেন, ‘যেসব ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান বন্দরে ঢুকে গেছে, তাদের কাজ আমরা বন্ধ করিনি। তাদের সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে বলেছি। যদি ঘূর্ণিঝড় আরও তীব্র হয়, তখন তাদের কাজও বন্ধ করে দেয়া হবে। তবে নতুন করে কোন ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান বন্দরে এই মুহূর্তে না ঢোকানোর সিদ্ধান্ত আছে।’ নগরীর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাগর এই মুহূর্তে খুবই উত্তাল আছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ উপকূলবর্তী ১৪টি জেলার চরসংলগ্ন সাগরে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হতে পারে। এতে জেলাগুলো প্লাবিত হতে পারে। সাগর উত্তাল থাকায় লাইটারেজ জাহাজ, মাছ ধরার ট্রলার-ছোট জাহাজ, সাধারণ নৌকাসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কর্ণফুলী নদীতেও চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। লাইটারেজ জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেলের যুগ্ম পরিচালক হাজী শফিক আহমেদ জানিয়েছেন, বুধবার রাত থেকেই বন্দরের বহির্নোঙ্গরে কোন লাইটারেজ জাহাজ যাচ্ছে না। বহির্নোঙ্গরে মাদার ভ্যাসেল (বড় জাহাজ) থেকে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য ওঠানামা বন্ধ আছে। কর্ণফুলী নদীতে এবং বিভিন্ন ঘাটে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত একশ’রও বেশি লাইটারেজ জাহাজ অবস্থান করছে বলে শফিক আহমেদ জানিয়েছেন। এছাড়া কর্ণফুলী নদীতে মাছ ধরার নৌযানগুলোকে তীরে এনে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। প্রায় ২০০ মাছ ধরার নৌযান এখন কর্ণফুলী নদীতে অবস্থান করছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
×