ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

শেয়ারবাজারে সূচকের সঙ্গে লেনদেন কমেছে

প্রকাশিত: ১০:৪৮, ১৪ এপ্রিল ২০১৯

শেয়ারবাজারে সূচকের সঙ্গে লেনদেন কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় নির্বাচন শেয়ারবাজারের সূচক যতটা বেড়েছিল, টানা ১১ সপ্তাহের দরপতনে তার চেয়ে বেশি কমে গেছে। গত সপ্তাহে দরপতন আরও ত্বরান্বিত হয়। বাজার সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন উদ্যোগের পর বৃহস্পতিবার সূচক বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে ২.৪৫ শতাংশ পড়ে গেছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সব মূল্যসূচক। কেনাবেচা কমেছে ১৬ শতাংশের বেশি। বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজারে আস্থা আর তারল্য দুটোরই সঙ্কট চলছে। একসঙ্গে দুটোই বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করছেন তারা। তাদের মতে, বাজারে আস্থা ফেরাতে শুধুমাত্র কথার আশ্বাসে কাজ হবে। দরকার দ্রুত উদ্যোগ বাস্তবায়ন। গত সপ্তাহে স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরু হয়েছে এসক্যোয়ার নিট কম্পোজিট লিমিটেডের। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে বাজারে আসা কোম্পানিটির প্রাথমিক শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কিনেছে ৪৫ টাকা দরে, ১০ শতাংশ ডিসকাউন্টে ব্যক্তি শ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা কিনেছেন ৪০ টাকা দরে। দেশের শেয়ারবাজারে সাধারণত নতুন শেয়ারের অস্বাভাবিক চাহিদা দেখা গেলেও বাজার পরিস্থিতির কারণে বৃহস্পতিবার এসক্যোয়ার নিটের শেয়ারদর ছিল ৪২ টাকার ঘরে। সপ্তাহের বাজারচিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে চলমান পতনে সূচক সবচেয়ে দ্রুত কমেছে গত সপ্তাহে। বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর দরপতনই এর মূল কারণ। তবে ছোট মূলধনী বহু কোম্পানির শেয়ারদরও পতনশীল ছিল। রবিবার সকালে লেনদেন শুরু হওয়ার সময় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রড ইনডেক্স ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৪৫০ পয়েন্টের ওপরে। বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশের আশা ছিল সেখান থেকে সূচক বাড়তে শুরু করবে। তবে এরপর টানা চারদিন সূচক কমে ৫ হাজার ২৬০ পয়েন্টের নিচে নেমে যায়। অনাকাক্সিক্ষত এ দরপতন বাজারে ভীতির সঞ্চার করে। সব পক্ষ তারল্য পরিস্থিতি উন্নয়নের দাবি নিয়ে সোচ্চার হয়। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপর তাদের অনাস্থার প্রকাশ ঘটায়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে স্টেকহোল্ডারদের আলোচনা শেষে সরকারের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ ক্রয়াদেশ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এজন্য বাড়তি তহবিল জোগাড়ে তৎপর হন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। সপ্তাহের শেষ দিন দরপতন থেমেছে, ডিএসইএক্স ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ৩২৬ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। এর সুবাদে ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ পতনের মধ্য দিয়ে সপ্তাহ শেষ করেছে ডিএসইএক্স। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হিসাব করলে ২০১৯ সালে ডিএসইএক্স ১ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। গেল সপ্তাহে ঢাকার বাজারের ব্লু-চিপ সূচক ডিএস ৩০ আগের সপ্তাহের চেয়ে ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমেছে আর শরিয়াহ কমপ্লায়েন্ট কোম্পানিগুলোর সূচক ডিএসইএস ২ দশমিক ৮৫ শতাংশ কমেছে। পতনশীল বাজারে কেনাবেচায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ক্রমেই কমছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর গড় লেনদেন ১৬ শতাংশ কমে ৩৩৫ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে। সপ্তাহ শেষে চামড়া ও পাদুকা শিল্প ছাড়া বাজার মূলধন হারিয়েছে সব খাত। ডিএসইতে ৫২টির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৮০টি সিকিউরিটিজ। সাপ্তাহিক লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো ॥ ইউনাইটেড পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো, গ্রামীণ ফোন, ফরচুন সুজ, মুন্নু সিরামিক, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড, এসক্যোয়ার নিটওয়্যার, ইস্টার্ন ক্যাবল, রেকিট বেনকিসার ও স্কয়ার ফার্মা। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো ॥ ইস্টার্ন ক্যাবল, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, কে এ্যান্ড কিউ, গ্রীন ডেল্টা, গ্লাক্সেমিথক্লাইন, ফরচুন সুজ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ট্রাস্ট ব্যাংক , ইস্টার্ন ব্যাংক ও হা-ওয়েল টেক্সটাইল। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো ॥ ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, আরএন স্পিনিং, তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স ও জেনেক্স ইনফোসিস।
×