ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবার বাংলাদেশে আসছে মেসির আর্জেন্টিনা?

প্রকাশিত: ১১:৪১, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

 আবার বাংলাদেশে আসছে মেসির আর্জেন্টিনা?

জাহিদুল আলম জয় ॥ আবার বাংলাদেশে আসতে পারেন বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা লিওনেল মেসি। ২০২০ সালে বাংলাদেশে সাড়ম্বরে পালিত হবে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। এ নিয়ে এখন থেকেই জোরেশোরে প্রস্তুতি চলছে। এরই অংশ হিসেবে মেসির আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলকে লাল-সবুজের দেশে আনার পরিকল্পনা আছে বাংলাদেশ সরকারের। আর্জেন্টিনা দলকে প্রীতি ম্যাচ খেলতে এই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতের নয়াদিল্লী কার্যালয়ের আর্জেন্টাইন রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল ডেনিয়েল চোবুরুর বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাত করলে এই প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। মূলত জাতির জনকের ১০০তম জন্মদিনে বিশেষ আয়োজন হিসেবে আর্জেন্টিনা দলকে বাংলাদেশে আনার জন্য মুখিয়ে আছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে এ ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রাথমিক পর্যায়ে আছে বিষয়টি। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খুব করে চাইছে, দর্শকনন্দিত আর্জেন্টিনাকে বাংলাদেশে আনতে। প্রতিবছর মার্চের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত ক্লাব ফুটবলের ব্যস্তসূচীর ফাঁকে দেয়া হয় আন্তর্জাতিক ফুটবলের জন্য বিরতি। তখন নিজ নিজ দেশের হয়ে খেলতে চলে যান ফুটবলাররা। ফলে মার্চের ১৭ তারিখ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের সময়টায় ক্লাব ফুটবলের ব্যস্ততা থাকবে না মেসি তথা আর্জেন্টিনার তারকা ফুটবলারদের। এ কারণে ওই সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনেপ্রাণে চাচ্ছে কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনার দেশ আর্জেন্টিনাকে লাল-সবুজের দেশে নিয়ে আসতে। এমন হলে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলার মাটিতে পা পড়তে পারে পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা মেসির। বার্সিলোনার এ তারকা বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয় জয় করেছেন অনেক আগেই। টেলিভিশনে তার খেলা দেখতে সবসময়ই হুমড়ি খেয়ে পড়েন সবধরনের ফুটবলপ্রেমী। সেই মেসি আরেকবার বাংলাদেশে আসলে নিশ্চিত করেই দেশে হৈহুল্লোড় পড়ে যাবে। এর আগে ২০১১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসেন মেসি। এরপর ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর নাইজিরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলে তারা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হওয়া ওই ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। ওই ম্যাচে গোল না পেলেও দলের দু’টি গোলে সরাসরি এ্যাসিস্ট করেছিলেন মেসি। তবে এবার যদি মেসি বাংলাদেশে আসেন তাহলে সেটি আরও বড় পাওয়া হবে। কারণ তখনকার চেয়ে মেসি এখন আরও বেশি পরিণত। আট বছর আগে মেসি অনেক কিছুই জিততে পারেননি। কিন্তু এই সময়ে তার শোকেসে অনেক অর্জন শোভা পেয়েছে। বিশেষ করে আর্জেন্টিনাকে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলে সেরা খেলোয়াড় হন। শুধু তাই নয়, দুর্ভাগ্যবশত টানা দুই বছর কোপা আমেরিকাতে রানার্সআপ হয় তার দেশ আর্জেন্টিনা। দেশের হয়ে অল্পের জন্য আফসোস করতে হলেও বার্সিলোনার হয়ে ট্রফির পর ট্রফি জিতেছেন। এবার তাই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মেসিরা আসলে সেটা বাংলাদেশের জন্য আরও বড় গৌরবের বিষয় হবে। পেলে-ম্যারাডোনার শ্রেষ্ঠত্বের অবসান ঘটিয়েছেন মেসি- এমনটাই মেসিভক্তদের ধারণা। আসলেই কী তাই? মেসির প্রতিভা এবং তার শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু পেলে-ম্যারাডোনাকে কি সত্যি সত্যি তিনি তার শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে পেছনে ফেলতে পেরেছেন? বিশ্বকাপ ফুটবলকে যদি মানদন্ড ধরা হয়, তাহলে তার উত্তর হবে কোনভাবেই না। পেলে জিতেছেন তিনটি বিশ্বকাপ। ম্যারাডোনা একা একবার বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন তার দেশকে। আরেকবার তুলেছিলেন ফাইনালে। সে হিসেবে মেসির অর্জন কী? একবার শুধু বিশ্বকাপের ফাইনালে নিজ দেশকে তোলা! ২০০৪-২০০৫ সাল থেকে ক্যারিয়ার শুরু করা মেসির সাফল্য শুধুই ক্লাব ফুটবলে। জাতীয় দলের হয়ে এখনও পর্যন্ত কোন শিরোপাই জিততে পারেননি। শুধু ২০০৮ বেজিং অলিম্পিকের ফুটবলে স্বর্ণ জিতেছিলেন অনুর্ধ-২৩ দলের হয়ে। দুইবার কোপা আমেরিকার ফাইনাল খেলেও পারেননি একটি শিরোপা জিততে। একবার তো খেলেছিলেন বিশ্বকাপের ফাইনাল। এরপরও মেসির যা অর্জন তাতে বাংলাদেশে তার আসাটা অনেক বড় ঘটনা।
×