ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আফ্রিকায় স্বাস্থ্য খাতে পরিবর্তনের নায়ক

প্রকাশিত: ১৩:১৬, ২৯ জানুয়ারি ২০১৯

আফ্রিকায় স্বাস্থ্য খাতে পরিবর্তনের নায়ক

সেন্ট্রাল আফ্রিকার দেশ ক্যামেরুনে ২৪ মিলিয়ন মানুষের জন্য বিশেষজ্ঞ হৃদরোগ চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৫০ জন। সেখানে ১২ শতাংশ মানুষের মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ। ক্যামেরুনের রাজধানীর পাশে ছোট্ট শহর ইয়ানদূতে বেড়ে ওঠা আর্থার জাংয়ের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবেন। ডাক্তার না হতে পারলেও সদ্য ৩০এ পা রাখা আর্থারের উদ্ভাবিত কার্ডিও-প্যাড আফ্রিকার দেশগুলোতে হৃদরোগ চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। যে দেশগুলোতে ৩০ বা তদুর্ধ মানুষের মৃত্যুর একটি বড় কারণ হৃদরোগ। মেডিক্যাল স্কুলে ভর্তি হতে ব্যর্থ হয়ে পড়াশোনা করেন কম্পিউটার বিজ্ঞান নিয়ে। ইন্টার্ন অবস্থায় পেশাগত কারণে তার সাক্ষাত হয় একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। তিনি তাকে জানান কেবলমাত্র সঠিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে আসতে হয়। আর তখনই আর্থারের মাথায় আসে সহজে বহনযোগ্য একটি কার্ডিও-প্যাড তৈরির ধারণা। যেটি ব্যবহার করে প্রত্যন্ত আঞ্চলের চিকিৎসকেরা স্ক্যান রিপোর্ট নগরে বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠাতে পারবেন। এর কারণে রোগীরা যেমন বার বার শহরে আসার কষ্টকর যাত্রার হাত থেকে বেঁচে যাবেন তেমনি তাদের অর্থেরও সাশ্রয় ঘটবে। ধারণাটি নিয়ে কাজ করার সময় আর্থারের চাচা মারা যান হার্ট এ্যাটাকে। চাচার মৃত্যু তার মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করার তাগিদ আরও বাড়িয়ে দেয়। কার্ডিও-প্যাডের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় ২০১৬ সালে। বর্তমানে ক্যামেরুনসহ আফ্রিকার আরও চারটি দেশের পাশাপাশি নেপালেও হৃদরোগ চিকিৎসায় কার্ডিও-প্যাড ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এর মূল্য ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ডলার। নামী-দামী হাসপাতালের জন্য এই মূল্য খুব বেশি না হলেও ছোট হাসপাতালগুলোর জন্য এই অর্থের পরিমাণ আনেক বেশিÑ তা বুঝতে খুব বেশি সময় লাগেনি আর্থারের। ২০১৭ সালে আর্থার প্রাথমিকভাবে কোন অর্থ ছাড়াই ক্যার্ডিও-প্যাড বিতরণের সিদ্ধান্ত নেন। রোগীরা প্রতি বছর অল্প পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে ক্যার্ডি-প্যাডের সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। আর্থার জানেন ক্যামেরুন বা অন্যান্য দরিদ্র দেশগুলোতে স্বাস্থ্য সেবায় তার এ আবিষ্কার একটি ছোট্ট পদক্ষেপ। আর্থারের ভাষায়, ‘গরিব মানুষ হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে প্রতিদিন মুখোমুখি হচ্ছেন হাজারও সমস্যার। আমি চেয়েছি রোগীরা যেখানেই থাকুক না কেন তারা যেন কিছুটা হলেও ভাল চিকিৎসা পায় সে ব্যবস্থা করতে।’
×