ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসছেন ওসাকা

প্রকাশিত: ১০:১৫, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯

 উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসছেন ওসাকা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যেখানে ২০১৮ সাল শেষ করেছিলেন ঠিক সেখান থেকেই নতুন বছর শুরু করলেন নাওমি ওসাকা। গত বছর মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেন জিতেছিলেন তিনি। ওটাই ছিল তার ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম। এবার নতুন বছরের শুরুতেই জিতে নিলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। এই নিয়ে দ্বিতীয় গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের স্বাদ পেলেন একুশ বছরের তরুণী। শনিবার মেলবোর্নে মহিলা এককের ফাইনালে টানা তিন ঘণ্টা দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছেন চেক প্রজাতন্ত্রের পেত্রা কেভিতোভার বিপক্ষে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর প্রথম সেট টাইব্রেকারে জিতে নেন তিনি। দ্বিতীয় সেট লড়াই করেও উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন পেত্রা কেভিতোভার কাছে টাইব্রেকারে হেরে যান তিনি। কিন্তু তিন নম্বর সেটে ফের বাজিমাত করেন ওসাাকা। সেই সঙ্গে ব্যাক টু ব্যাক গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের রেকর্ড গড়েন তিনি। মাত্র চার মাসের ব্যবধানে পরপর দুটি গ্র্যান্ডস্লাম জিতে বিশ্ব টেনিসের এক নম্বর স্থানটাও দখল করে নেন ওসাকা। রোমানিয়ার সিমোনা হ্যালেপকে সরিয়ে বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা এখন জাপানের নাওমি ওসাকা। সেই সঙ্গে এশিয়ার প্রথম টেনিস তারকা হিসেবে এক নম্বর টেনিস তারকা হলেন ওসাকা। টানা দ্বিতীয় গ্র্যান্ডস্লাম জিতে উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসছেন জাপানের তরুণ প্রতিভাবান এই খেলোয়াড়। ম্যাচ জয়ের পরই ওসাকা বলেন, ‘আমার কাছে গ্র্যান্ডস্লাম ব্যাপারটা এমন যা শৈশব থেকেই খেলার স্বপ্ন দেখেছি। গ্র্যান্ডস্লামে খেলার সুযোগ তাই কখনই নষ্ট করতে চাইনি। বলতে পারেন এটাই আমার জীবনের সেরা মোটিভেশন। আমার স্বপ্ন ছিল এই টুর্নামেন্ট জয়ের। যখনই আমি এই স্বপ্ন দেখেছি তখনই সেটা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছি। যে কারণেই আমি মনে করি এই গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের মুহূর্তটাই আমার কাছে অদ্ভুত।’ চেক প্রজাতন্ত্রের পেত্রা কেভিতোভা বেশ অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন উইম্বলডনে। তার বিপক্ষে ম্যাচটা মোটেই সহজ ছিল না ওসাকার। কেননা এর আগের ১১টি ম্যাচের কোনটিতে কোন সেট হারেননি চেক তারকা। এমনকি কোন ম্যাচ যায়নি টাইব্রেকারেও। সরাসরি সেটেই টানা ১১টি ম্যাচ উড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রতিপক্ষকে। কিন্তু অশ্বমেধের ঘোড়াকে থামিয়ে দিলেন ওসাকা। সেরেনা উইলিয়ামসের পর ওসাকাই একমাত্র প্রমীলা টেনিস তারকা যিনি পরপর দুটি গ্র্যান্ডস্লাম জিতলেন। গত দেড় দশকে আর এই রেকর্ড রয়েছে কিম ক্লাইস্টার্সের। ২০১০ এবং ২০১১ সালে ইউএস এবং অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছিলেন তিনি। অথচ গত বছর এই টুর্নামেন্টের চতুর্থ রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছিলেন ওসাকা। এবার শিরোপার মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভাসলেন আনন্দ-উল্লাসে। জাপানী তারকার অনুভূতি কেমন? এ বিষয়ে ওসাকার ভাষ্য, ‘হ্যাঁ, এবার আমি এখানকার সময়টা উপভোগ করতে চেয়েছিলাম। গত বছর মেলবোর্নের চতুর্থ রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছিলাম। এবার আমি ফাইনালে। তাই এটা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আমি খুব খুশি ছিলাম।’ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের ফলে বিশ্ব টেনিসের শীর্ষস্থানটা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের নামের পাশে যোগ হবে ওসাকার। এটাতেও গর্বিত তিনি। তবে শিরোপা জয়টা তার কাছে শীর্ষে ওঠার চেয়েও বেশি আনন্দের। এ প্রসঙ্গে ওসাকার অভিমত, ‘পরের কোন টুর্নামেন্টে যখন আমার নামের পাশে এক নম্বর দেখব তখন অবশ্যই কিছু একটা মনে হবে। তবে আমার কাছে বেশি আনন্দ; আমি এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছি।’ গত মৌসুমেই প্রথম বাজিমাত করেন নাওমি ওসাকা। সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে ইউএস ওপেনের শিরোপা জিতে। এবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেও পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে গোটা টেনিস দুনিয়াকেই চমকে দিলেন তিনি। এই টুর্নামেন্টে খেলেছেনও দুর্দান্ত। শিরোপা জয়ের পথে ওসাকা হারিয়েছেন ইউক্রেনের এলিনা সিতলিনা এবং চেক প্রজাতন্ত্রের সাবেক শীর্ষ তারকা ক্যারোলিনা পিসকোভার মতো খেলোয়াড়কেও।
×