ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পিটার আসলাম

পরিবেশ রক্ষার লড়াইয়ে ক্রিস্টেন ফিগেনার

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ২২ জানুয়ারি ২০১৯

পরিবেশ রক্ষার লড়াইয়ে ক্রিস্টেন ফিগেনার

ক্রিস্টেন ফিগেনার এটা কখনও ভাবতেই পারেননি যে মাত্র ৮ মিনিটের একটি ভিডিও বদলে দেবে তার ক্যারিয়ারের গতিপথ। আগস্ট ২০১৫-তে এই মেরিন বায়োলজিস্ট কোস্টারিকায় নাকে প্লাস্টিক স্ট্র আটকে থাকা একটি সামুদ্রিক কচ্ছপ খুঁজে পান। স্বাভাবিক কারণে কচ্ছপটি কষ্ট পাচ্ছিল। ফিগেনার তার গবেষণা সহযোগীদের নিয়ে কচ্ছপের নাক থেকে স্ট্র বের করার দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, স্ট্র বের করার পর কচ্ছপের নাক থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। হৃদয়স্পর্শী ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয় ইউটিউবে। একটি সামাণ্য প্লাস্টিক স্ট্র সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য কতটা বিপর্যয়ের কারণ হতে পরে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকৃষ্ট হয় সবার। ৩২ মিলিয়নের বেশি ভিউ নিয়ে ভিডিওটি চলে আসে আলোচনার কেন্দ্রে। ফিগেনারের ভাষায়, আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তা ভিডিওতে পরিষ্কার। কেবলমাত্র আমেরিকানরাই প্রতিদিন ৩৯০ মিলিয়ন প্লাস্টিক স্ট্র ব্যবহার করে। রক্ষণশীল হিসেবেও প্রতি বছর সমুদ্রে নিক্ষিপ্ত হয় ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাস্টিক। সামুদ্রিক পরিবেশ বিপর্যয়ে এর প্রভাব সহজেই অনুমেয়। ভিডিওটি ৩ বছরের পুরনো হলেও প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে ফিগেনারের যুদ্ধ থেমে নেই। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্টারবাকস্, আমেরিকান এয়ারলাইন্সের মতো কোম্পানিগুলো এই যুদ্ধে নাম লিখিয়েছে। এ লড়াইয়ে আমাদের সবারই কিছু করার আছে বলে ৩৪-এ পা রাখা ফিগেনারের বিশ্বাস। ফিগেনারের বেড়ে ওঠা জার্মানিতে। অতঃপর পড়ালেখার জন্য কোস্টারিকা গমন। টেকসাসের এ এ্যান্ড এম ইউসিভার্সিটিতে পিএইচ শুরু করার পূর্বে সেখানে কাজ করেছেন অনেক দিন। এখন গবেষণার পাশাপাশি নিয়মিত বিভিন্ন স্কুলে নতুন প্রজন্মের মাঝে সামুদ্রিক পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির কাজ করছেন। এ ছাড়াও ইন্ডিয়ানাতে মেয়েদের একটি দল নিয়ে বিভিন্ন কাফেটারিয়াতে প্লাস্টিক সামগ্রিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন। তার ভাষায় পরিবেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনা এই প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবহার আমাদের রোধ করতেই হবে। লেখালেখিতেও সমান আগ্রহ ফিগেনারের। নিয়মিত আংশগ্রহণ করেন পেন-পল প্রোগ্রামে। একজন প্রকৃত বিজ্ঞানী কেমন হবেন তা নিয়ে তিনি লিখতে চান। তার ভাষায়, অনেকেরই এখনও ধারণা কেবল শেতাঙ্গ পুরুষেরাই ভাল বিজ্ঞানী হতে পারেন। আমি আগামী প্রজন্মকে এটা জানাতে চাই তারা যে ধর্ম-বর্ণ-গোত্রেরই হোক না কেন চাইলে তারাও বিজ্ঞানী হতে পারেন।
×