ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সোহাগ চন্দ্র দাস;###;হেড অফ কর্পোরেট এ্যাফেয়ার্স, পাঠাও

নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা

প্রকাশিত: ০৭:৪৬, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯

নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা

একটি দেশের জন্য সরকারের সঠিক পরিকল্পনার উপর সেই দেশের ভবিষ্যত উন্নয়ন অনেকটা নির্ভর করে। জনগণের কল্যাণে নির্বাচনের সময়কার প্রদত্ত সকল প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া দরকার। জনগণের কল্যাণে সরকার কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু সেই কাজের অগ্রগতি কতটা গতিশীল সেটা তার কার্যক্রম বাস্তবায়নের উপর নির্ভর করে। তাই এই অগ্রগতির যথা নিয়মে মূল্যায়ন করাটা যেন সময় ক্ষেপণ না হয় সেটার প্রতি নিয়মিত লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে শিক্ষা ক্ষেত্রে সঠিক শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা হোক-এটা আমাদের তরুণদের প্রত্যাশা। শিক্ষাক্ষেত্রে-বাস্তবজীবনের এবং চাকরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যোগ্যতাগুলোর বিষয়টা অন্তর্ভুক্ত রাখা উচিত। দেশের মধ্যে প্রাইভেট এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের বৈষম্যমূলক ও ভিন্ন চোখে দেখা হয়।যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করছে তাদের অনেক ক্ষেত্রেই ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা হয় এবং তাদের শিক্ষা মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।এমন অবস্থায় তরুণ হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা, তরুণদের এমন আচরণের মধ্যে যেন না পরতে হয় সেই জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তি এবং আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্বমানের বাস্তবভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা সৃষ্টি ও নিশ্চিত করতে হবে। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে সিলেবাস-কারিকুলাম, নম্বর বণ্টন, পরীক্ষা পদ্ধতি, মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় ঘনঘন পরিবর্তন যেন না হয় এবং একই সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মতো আচরণ না করে সেই বিষয়ে কড়া নজরদারিতে আনা প্রয়োজন। পাশাপাশি নিম্নোক্ত বিষয়গুলোতেও সরকারের বিশেষ নজর প্রত্যাশা করি। সরকারী বিভিন্ন পলিসি বা উন্নয়নমূলক প্রকল্প বা সম্ভাব্য ক্ষেত্রে তরুণদের মতামত গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি এবং স্টার্টআপগুলোর পূর্ণাঙ্গরূপ লাভের আগ পর্যন্ত হলেও ভ্যাট-ট্যাক্সের ক্ষেত্রে শিথিলতা আনয়ন করে ব্যবসাবান্ধব সুযোগ সৃষ্টি। অস্বাভাবিকভাবে বাড়িভাড়া বৃদ্ধি, ব্যাচেলরদের থাকার ব্যবস্থা সহজীকরণ, নারীদের চলাচলের জন্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি। তরুণদের সুষ্ঠু ও সুস্থ রাজনীতিতে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি। প্রয়োজনে জনগণের কাছ থেকে জরিপের মাধ্যমে উন্নয়নের মাধ্যম এবং জায়গাগুলো খুঁজে বের করে তার সমাধানের লক্ষ্যে দেশের নাগরিকদের পাশে নিয়ে দেশের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করাটা একজন তরুণ হিসেবে এটাই প্রত্যাশা করি। ফাহাদ ইবনে ওয়াহাব সিইও, মুভ দিনের পর দিন বৈদেশিক সাহায্যে যে সুদের নিচে আমরা তলিয়ে যাচ্ছি, তা থেকে দেশকে উদ্ধার। দেশের ৬৫% তরুণ জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করা। শেয়ারবাজারে লেনদেনের পূর্বে ন্যূনতম কিছু যোগ্যতা নির্ধারণ করা। তথাকথিত ক্ষুদ্র ঋণের হাত থেকে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উদ্ধার করা। পাবলিক ট্রান্সপোর্টগুলোকে নির্দিষ্ট কিছু এজেন্সির আওতায় আনা। দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স। কৃষিখাতে ভর্তুকি কমিয়ে দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করা। এডিপিতে উল্লিখিত বড় প্রোজেক্টগুলো সঠিক সময়ে নিখুঁতভাবে বাস্তবায়ন করা। সিলভীয়া পারভীন লেনি ডিরেক্টর ও সিইও রেডিও ঢোল একাদশ সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটারের ২২ শতাংশই ছিল তরুণ, যাদের বয়স ছিল ১৮ থেকে ২৮ এর মধ্যে। প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভোটার এবারই প্রথম ভোট দেয়। আওয়ামী লীগের বিশাল জয়ে ভূমিকা ছিল এই তরুণদের তাই সরকারের কাছে তাদের চাওয়াটাও থাকবে বেশি। মাত্রই গঠিত হলো নতুন মন্ত্রিসভা। গত মন্ত্রিসভার হেভিওয়েট অনেক মন্ত্রিকে এবার দায়িত্ব না দিয়ে তরুণ নেতাদের উপর আস্থা রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হয়ত ইঙ্গিত দিয়েই রাখল এবার তার সরকার তরুণদের জন্যই কাজ করবে। তরুণ প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি হিসেবে আমার চাওয়া থাকবে অবশ্যই ‘সুশাসন’। প্রতিটা সেক্টরেই সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার কাজ করছে তার স্পষ্ট ছাপ দেখতে চাই। গত বছরই আমাদের তরুণরা সড়ক নিরাপত্তার জন্য একটা অসাধারণ আন্দোলনের সূচনা করেছিল যদিও কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর কারণে আন্দোলনের পরিণত পরিসমাপ্তি আমরা পাইনি। আমি আশা করব নতুন সরকার এবার তরুণদের এই চাওয়াটাকে অগ্রাধিকার দেবে। এছাড়াও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধের যে ঘোষণা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিয়েছিলেন, তা পূরণ করলেই তরুণ ভোটারের নৌকায় ভোট দেয়া সার্থক হবে বলে আমি মনে করি।
×