ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

একাদশ সংসদ ॥ বিশ্ব যা বলছে

প্রকাশিত: ০৪:১২, ৮ জানুয়ারি ২০১৯

একাদশ সংসদ ॥ বিশ্ব যা বলছে

দেশের নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে মত দিয়েছে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংস্থা। গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ ছিল বলে জানান তারা। ৪০ হাজার ১৮৩টি নির্বাচন কেন্দ্রের মধ্যে ২২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত হওয়া আনুপাতিক হারে খুবই কম বলে মনে করছে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের তিন সদস্যের নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলও। তারা বলেন, বাংলাদেশের অনুষ্ঠিত নির্বাচন অনেক উৎসবভাব দৃশ্যমান ছিল। নির্বাচনকে নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে নেপাল, সার্ক ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করার পর একে একে বহু দেশ তাঁকে সমর্থন ও অভিনন্দন জানিয়েছে। প্রথমে ভারত আর চীনের অভিনন্দন বার্তা পরিস্থিতি বদলে দেয়। অভিনন্দন জানান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী জাপানও। একাদশ সংসদ নির্বাচন সব বড় দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হওয়ায় বাংলাদেশ সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে তারা। জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার সময় থেকে ঐতিহ্যবাহী বন্ধু জাপান বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উন্নয়ন অব্যাহত দেখতে চায়। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাওয়ার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কও জোরদার করবে বলেও জানায় দেশটি। এরপর একে একে বার্তা পাঠায় সৌদি আরব, রাশিয়া, কাতার, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটান ও পাকিস্তান। অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আহ্বান জানালেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। সকলের অভিমত- নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনের খুব নিখুঁত পরিকল্পনা ও আয়োজন ছিল। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন এবং ভারতের নির্বাচন কমিশনের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী এবং আন্তরিক সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। বলা যায়, বিশাল ব্যবধানে পুনর্নির্বাচিত হয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভিনন্দন জোয়ারে ভাসছেন শেখ হাসিনা। নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের ব্যাপারে খুব একটা ভাবতে হচ্ছে না তাকে। গত ১০ বছরে অর্থনৈতিক অগ্রগতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন এবং নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় তার সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে প্রতিবেশী ভারতসহ বড় বড় দেশ। তবে বিরোধী পক্ষের আনা নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। উল্লেখ্য, এবারের সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮টিতে বিজয়ী হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট। প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে মাত্র সাতটি আসন। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর সতর্কতার সঙ্গে ভারত, চীন, রাশিয়া, জাপান ও সৌদি আরবের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কের সফল সূচনা ঘটান শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় ফিরে তা অব্যাহত রাখেন। নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের সঙ্গে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তা আরও এগিয়ে নিতে সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেটা জোরালো চাপ বলা যাবে না। কারণ, নির্বাচনী সহিংসার সবচেয়ে বড় শিকার আওয়ামী লীগই। তাই প্রত্যাশিত আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়ায় এ নিয়ে নির্ভার থাকতে পারছেন শেখ হাসিনা।
×