ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

তানভীর আহমেদ

সুস্থ জীবনযাপন

প্রকাশিত: ০৭:১৬, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮

  সুস্থ জীবনযাপন

সুস্থতার চেয়ে বড় আশীর্বাদ জীবনে আর কিছু নয়। বাকি যা সব ভাল, সবকিছুই ভরপুর উপভোগ করা সম্ভব যদি সুস্থ শরীর আর মন থাকে। কোন একটা না থাকলেই জীবন দুর্বিষহ হতে আর বেশিকিছু লাগে না। আর শরীর-মনের সুস্থতার অনেক নিয়মকানুন, কৌশল জানা আছে সবারই। এই লেখায় আপনার সার্বিক সুস্থতার সেই সব টুকিটাকি বিষয়গুলোই সাজানো হয়েছে। মিলিয়ে নিন তো, কোন বিষয়গুলো মানছেন আপনি আর কোনগুলো একেবারেই নয়? সকাল থেকেই শুরু করা যাক। সকালের খাবারটা কত জরুরী তা নিশ্চয় নতুন করে বলার কিছু নেই, তাই না? ব্যস্ততা, বাসার ব্যবস্থাপনা, সব মিলিয়ে নিত্যদিন ভাল মতো নাস্তা খাওয়া নেই হতে পারে কিন্তু সেটা যেন প্রতিদিনের অভ্যাস না হয়ে যায়। দুটো টোস্ট আর দুধ বা এক কাপ চা, একটা ফল, ডিম পোচ, কিছু না কিছু খেয়ে ঘর থেকে বের হওয়া চাই। কয়েক মিনিট টেবিলে বসে একটু শান্তি নিয়ে যদি নাস্তা করে দিনটা শুরু করা যায়, তবে আপনি নিজের সুস্বাস্থ্য ভালভাবেই নিশ্চিত করছেন। আজকে খুব কাজের চাপ, কেমন করে সামাল দেবেন ভাবতে বসেই মাথা ধরে যাচ্ছে। চাপ পড়ছে শরীরের সঙ্গে মনেও। অনবরত অত্যধিক কাজ মানসিক বিপর্যয়ের কারণ হতেও সময় নেয় না। কাজেই বিপর্যস্ত হওয়ার আগেই নিজেকে ঠেকানো চাই। কাজের চাপ এতটুক থাকবেই, সেটা মাথায় হিসাব কষে নিন ভাল করে। বড় কাজকে ছোট ছোট ভাগে সাজিয়ে নিন। একেক ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পর একটু জিরিয়ে নিন। কাজের ফাঁকে বিশ্রাম দিন মগজকে, আর খানিক পরপর চোখগুলোকেও। ঘাড় এবং হাত-পা নাড়াচাড়া করুন। স্থবির হয়ে সেঁটে বসবেন না চেয়ারে। নিজেকে চাঙ্গা রাখার যত কৌশল আছে অবলম্বন করুন। তাতে আপনারই তো ভাল। ব্যায়াম করার চর্চা রাখতে পারেন সকালবেলায়। নাস্তার আগে মিনিট বিশেক ব্যায়াম, কিংবা বাইরে হেঁটে আসা, এই সবই আপনার সুস্থ থাকার কারণ হতে পারে। দূষণের নগরেও ভোরবেলার বাতাসটা খানিক শুদ্ধ হয় বটে, আর সেটা প্রাণীদেহের বড় বন্ধু। দুপুর আর রাতের খাবারে সমতা আনুন। প্রতিবেলায় আমিষ আর নিরামিষের সঠিক সমন্বয় সম্ভব নাও হতে পারে, সেক্ষেত্রে এক বেলায় বেশি খেলে অন্য বেলায় স্বল্পাহারি হওয়াই শ্রেয়। মাছ, মাংস সবকিছু সবসময় একসঙ্গে নয়। এই নিয়ম মানা উচিত আগেভাগেই। সবজিটা দুপুরে খাওয়া না হলে রাতে একটু বেশি করেই সবজি খাওয়া যায়। শাক আর ভর্তায় পেট ভরে ভাত খেয়ে নেয়া সম্ভব। এ রকমই তো হওয়া ভাল, তাই না? অতিরিক্ত মাছ-মাংস, মিষ্টি আর লবণ, এমনকি ঝালও আপনাকে কোন না কোনভাবে অসুস্থ করে তুলবে। বিভিন্ন জটিল শারীরিক সমস্যার পিছে অতিরিক্ত খাওয়াই দায়ী, এই কথাটা অন্তত মাথায় রাখুন! এবং অবশ্যই পরিমিত মাত্রায় পানি পান করুন। শরীরে পানির ঘাটতি মানেই খুব বাজে কিছু, তাই কখনও মন না চাইলেও পানি পান করা চাই নিয়মিত। প্রতিদিন ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় গ্রহণে হিসেবি হতে হবে। কয়েক কাপ চা আপনাকে চাঙ্গা হয়ত রাখছে, কিন্তু সারাদিন ধরে কাপের পর কাপ চা বা কফি আপনার শরীরে অসুখের বীজ বুনে চলেছে। তাই রাশ টানুন এইসব পানীয় গ্রহণে। টানা অনেকদিন ব্যস্ততায় ডুবে ক্লান্ত হয়ে গেলে অবশ্যই নিজেকে খানিক ছুটি দিন। প্রিয়জনদের নিয়ে সময় কাটানো, ভ্রমণে যাওয়া, বাইরে খেতে যাওয়া, এই জিনিসগুলো আপনাকে মন থেকে সুস্থ রাখতে পারে। তাই যতটাই সম্ভব এসব আনন্দের উপলক্ষ খুঁজে নিন নিজের জন্য। মাস তিনেক কোন সময় নেই, পুরোদমে কাজ করবেন, এই পরিকল্পনা করে কাজ করতে করতে তিন মাস পর দেখা যাবে ডিপ্রেশনেই পড়ে গেছেন! তাই অবসরের মুহূর্তগুলো হেলায় হারাবেন না। একটা দিনের জন্যও যদি দারুণ কিছু একটা পরিকল্পনা করা যায়, করে ফেলুন। সপ্তাহব্যাপী আনন্দ ভ্রমণ সামনে তুলে রেখে মাসের পর মাস নিজেকে বিপর্যস্ত করা বোকামি।
×