ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাটসম্যানদের জন্য ম্যাকেঞ্জির পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৭:২৯, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮

ব্যাটসম্যানদের জন্য ম্যাকেঞ্জির পরামর্শ

মোঃ মামুন রশীদ ॥ সিলেটে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টি২০ ম্যাচে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। স্বাগতিকদের ব্যাটিং বিপর্যয়ের সুযোগ নিয়ে ৮ উইকেটে বিধ্বস্ত করেছে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সব ব্যাটসম্যান ব্যর্থ হলেও সাকিব আল হাসান ছিলেন দারুণ সফল। তিনি ৪৩ বলে ৬১ রানের চমৎকার একটি ইনিংস উপহার দেন। জাতীয় দলের ব্যাটিং উপদেষ্টা নিল ম্যাকেঞ্জি দাবি করলেন সঠিক সময়ে সঠিক মনোভাব দেখাতে পারলেই সফল হওয়া যায় এবং সেটার প্রমাণ সাকিবের ব্যাটিং। কিন্তু প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের টপঅর্ডাররা ব্যর্থ হয়েছেন অধিকমাত্রায় আক্রমণাত্মক মনোভাব ও মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস দেখিয়ে। এ কারণে ম্যাকেঞ্জি দলের ব্যাটসম্যানদের আগের মতোই পরামর্শ দিয়েছেন অধিক আগ্রাসন না দেখিয়ে রান করার দিকে মনোযোগী হতে এবং সে জন্য প্রয়োজনে প্রতিরোধ করাটাও জরুরী বলে জানিয়েছেন তিনি। গত আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে টি২০ সিরিজ জিতে এসেছে বাংলাদেশ দল। এবার ঘরের মাটিতে ক্যারিবীয়দের দুই টেস্ট ও ৩ ওয়ানডের সিরিজে হারিয়ে দেয়ার পর টি২০ সিরিজেও স্বাগতিকদের ফেবারিট মনে করছিল সবাই। দলের সবাই বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম টি২০ ম্যাচেই হারিয়ে দেয়ার ব্যাপারে। আর এই অধিক আত্মবিশ্বাসই ডুবিয়েছে দলকে। এ বিষয়ে ব্যাটিং উপদেষ্টা ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা অধিক আত্মবিশ্বাসের কারণে হয়েছে। সবাই চেষ্টা করেছে আগুনের সঙ্গে আগুনে মনোভাবে লড়াই চালিয়ে যেতে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় মাঝে মাঝে আপনার অবশ্যই আক্রমণ করার চেয়ে কিছুটা পিছু হটাই ভাল দেখায়।’ ম্যাকেঞ্জি উদাহরণ হিসেবে অধিনায়ক সাকিবের ব্যাটিংটাকে সামনে এনেছেন। সাকিব খুব বেশি আগ্রাসী হয়ে ব্যাট চালিয়েছেন এমন নয়। ওশান টমাস ও শেলডন কটরেলের গতি যখন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের বিপদের মুখে ফেলেছে তখন সাকিব বেশ সাবলীলভাবেই ব্যাট চালিয়ে গেছেন সুস্থির থেকে। আর সে কারণেই দারুণ একটা ইনিংস উপহার দিতে পেরেছেন বাংলাদেশী অধিনায়ক। কিন্তু বাকিরা প্রায় প্রতিটি বলকেই আক্রমণের চেষ্টা করতে গিয়ে খেসারত দিয়েছে। ম্যাকেঞ্জি মনে করেন এমনটা কখনই উচিত নয়। এ বিষয়ে এ সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান বলেন, আমার কখনই মনে হয় না যে আমরা দ্রুত কিছু শিখতে পারছি। কটরেল ও টমাসের কিছুটা বাড়তি গতি আছে এবং তারা বোলিং উদ্বোধন করেছেন। আমরা জানতামই যে তারা উভয়ে দ্রুত আঘাত হানার চেষ্টা করবে। সাকিব দেখিয়েছে যে আমরা সেই গতিটাকেই খুব ভালভাবে আরও ব্যবহার করতে পারতাম। কিন্তু আমার মনে হয় আমাদের ব্যাটসম্যানরা শুধু বেশি মাত্রায় আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টাই করে গেছে। যখন আমরা বলের গতিকে কাজে লাগিয়ে দারুণ কিছু করতে পারতাম, তখন তারা সপাটে ব্যাট চালিয়ে গেছে।’ ম্যাকেঞ্জি মনে করেন শর্ট অব লেন্থের বলগুলোকে শুরুর দিকে তাড়া না করাই উচিত। কিন্তু লিটন দাস, তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার সেটাই করেছেন প্রথম থেকে। সাকিব বড় ইনিংস খেললেও তিনিও করেছেন। ম্যাকেঞ্জি মনে করেন আরও পরেই বাউন্সারগুলোকে আঘাত করতে যাওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘যদি আপনি এই তিনটি ডিসমিসালের দিকে তাকান তাহলে দেখবেন যে লিটন ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করা একটা লোকের দিকে ডাউন দ্য ট্র্যাকে গিয়ে আক্রমণ করেছে। এরজন্য প্রচুর সাহসিকতার প্রয়োজন, শক্ত হৃদয় ও বিশ্বাস থাকা দরকার নিজের ওপর। তামিম অনেকদিন ধরেই দারুণ ফর্মে আছে। গতিময় একটি বলকে তিনিও বাইরে ব্যাট চালিয়ে আঘাত করতে চেয়েছেন। সৌম্যও প্রায় একই কাজ করার চেষ্টায় ছিল। আমার মনে হয় এটা এমন এক ধরনের ম্যাচ ছিল যেখানে আক্রমণাত্মক মনোভাবের বিপরীতে সবাই আগ্রাসী ভূমিকায় ছিল। কিন্তু এমনটা চাননি ম্যাকেঞ্জি। সাকিবের মতোই আরেকজন ব্যাটসম্যানের একই মনোভাব দেখিয়ে ব্যাটিং করা প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, এমন উইকেটে গতি ব্যবহার করে বলের দিকে মনোযোগ রেখে সেটাকে স্কয়ার লেগ আম্পায়ারের দিকে ঠেলে দেয়া শটই উপযুক্ত ছিল। আমরা সবসময়ই আস্থা রাখি যে শীর্ষ তিনজন ব্যাটসম্যান অবশ্যই ৬০ কিংবা ৭০ রানের ইনিংস খেলে আসবে। সেটাই আমাদের জেতার মতো প্রয়োজনীয় একটি সংগ্রহ এনে দিতে পারে।’
×