ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বেনাপোলে ১৩৭ কেজি স্বর্ণ জব্দ

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮

 বেনাপোলে ১৩৭ কেজি স্বর্ণ জব্দ

আবুল হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার, বেনাপোল ॥ যশোরের বোনাপোল সীমান্ত দিয়ে জানুয়ারি থেকে নবেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে ১শ’ ৩৬ কেজি ৮শ’ ৫৮ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করেছে বিজিবিও শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এসব স্বর্ণ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ৪৮টি মামলা দিয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা। এ বিপুল পরিমাণের স্বর্ণের মোট সিজার মূল্য ৬০ কোটি ৫৪ লাখ ২৪ হাজার ১৭০ টাকা। এসব স্বর্ণ জব্দের ক্ষেত্রে যশোর ৪৯ বিজিবির অবদান রয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ ব্যাটেলিয়ন বছরজুড়ে সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জব্দ করেছে ৯৯ কেজি ৮শ’ গ্রাম স্বর্ণ। যার সিজার মূল্য ৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৪৭ হাজার ৭শ’ টাকা। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। শুল্ক গোয়েন্দার এ বিভাগ গত এক বছরে ২৪ কেজি ৮শ’ ৮৪ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করেছে। এসব স্বর্ণের সিজার মূল্য ১২ কোটি ২৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। সংস্থাটি স্বর্ণ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে মামলা করেছে ৩৩টি। তবে ২৪ কেজি স্বর্ণের মধ্যে ১৫ কেজি ৯শ’ ১৪ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ হয়েছে দর্শনা সীমান্তে। সে অনুপাতে বেনাপোল সীমান্তে অভিযান চালিয়ে সংস্থাটি স্বর্ণ জব্দ করেছে ৮ কেজি ৯৭ গ্রাম। একই সময়ের মধ্যে খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের সদস্যরা জব্দ করেছে ১২ কেজি ১শ’ ৭৪ গ্রাম স্বর্ণ। এসব স্বর্ণের সিজার মূল্য ৪ কোটি ৯৯ লাখ ৩৬ হাজার ৪শ’ ৭০ টাকা। তবে এসব স্বর্ণ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে এ বিপুল সংখ্যা মামলা হলেও স্বর্ণ পাচারের মূূল হোতারা সব সময় থেকে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলছে স্বর্ণ ও চোরাচালানিদের ধরার পরে তারা স্বর্ণ পাচারের মামলা দিয়ে স্ব-স্ব পুলিশ স্টেশনে জমা দিয়ে থাকে। তাই স্বর্ণ পাচারের মূল হোতাদের ধরার দায়িত্ব পুলিশের উপরে পড়ে। স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানায়, বেনাপোল সীমান্তগুলো দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার কেজি স্বর্ণ পাচার হয়ে থাকে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে খুব যৎসামান্য স্বর্ণ। যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়ের অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফুল হক বলেন, ‘আমরা এ বছরের প্রথম দিকে বেনাপোল সীমান্তে অভিযান চালিয়ে এক দিনেই ৭২ কেজি সোনা জব্দ করেছি। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে ছোট-বড় বেশ কিছু অভিযান চালিয়ে প্রায় এক শ’ কেজি স্বর্ণ জব্দ করেছি। সোনা চোরাচালানিদের ধরতেও সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি । তবে আগামীতে এ সফলতা আরও বাড়বে বলে জানান এ কর্মকর্তা। খুলনা ২১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, ‘আমাদের সীমান্তে চোরাচালানি রোধে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। সীমান্ত জুড়ে সর্বাত্মক কড়া নজরদারী রাখা হয়েছে। স্বর্ণ পাচারকারীরা বুঝতে পেরে এখন তারা প্রতিনিয়ত রুটও পরিবর্তন করছে। যে কারণে আগের থেকে এখন কম স্বর্ণ ধরা পড়ছে। তার পরে সীমান্ত থেকে আমরা প্রতিবছর বিপুল পরিমাণে চোরাচালানি পণ্যও মাদকদ্রব্যসহ বিপুল পরিমাণে স্বর্ণ জব্দ করেছি। এ বছরেও প্রায় ১২ কেজির বেশি স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, এসব সীমান্ত দিয়ে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাচারকালে ৪১ কেজি ৬শ’ ৪৮ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলারক্ষকারী বাহিনী। খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিভুক্ত সীমান্তগুলো দিয়ে জব্দ হয়েছিল ১৫ কেজি ২শ’ ৭০ গ্রাম স্বর্ণ। যার সিজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি ৮১ লাখ ৬৮ হাজার ৯০৯ টাকা। একই সময়ের মধ্যে যশোর ৪৯ বিজিবির অধিভুক্ত সীমান্তে জব্দ হয়েছিল ১৩ কেজি ১৯ গ্রাম স্বর্ণ। যার সিজার মূল্য পাঁচ কোটি ১১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। এসব স্বর্ণ পাচারের দায়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে ৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। বেনাপোল কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জব্দ করেছিল ১২ কেজি ২শ’ ৩৮ গ্রাম স্বর্ণ। এসব জব্দকৃত স্বর্ণের সিজার মূল্য ছিল ৬ কোটি ৫ হাজার টাকা। ১৯ জন স্বর্ণ পাচারকারী আটক হয়েছিল এবং মামলা হয়েছিল ১২টি। এছাড়া যশোরে ডিবি পুলিশের জব্দ করেছিল ১২টি স্বর্ণ বার।
×