ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ ষোলোতে পিএসজি ও লিভারপুল

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

 শেষ ষোলোতে পিএসজি ও লিভারপুল

জাহিদুল আলম জয় ॥ শুরু থেকেই ছিল শঙ্কা। শেষ দুই রাউন্ডের আগে তো ফরাসী জায়ান্টদের বাদ পড়ার সম্ভাবনাই বেশি ছিল। আর গ্রুপের শেষ ম্যাচের আগে দ্য রেডসরা ছিল সবচেয়ে বেশি বিপাকে। কিন্তু গ্রুপপর্বের শেষ রাউন্ডে সব শঙ্কা আর অনিশ্চয়তা দূর করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের নকআউট রাউন্ড (শেষ ষোলো) নিশ্চিত করেছে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন (পিএসজি) ও লিভারপুল। মঙ্গলবার রাতে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে স্বাগতিক সার্বিয়ার ক্লাব রেড স্টার বেলগ্রেডকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে পিএসজি। এর ফলে গ্রুপসেরা হয়েই নকআউটে পা রেখেছেন নেইমার, এমবাপেরা। গ্রুপের আরেক ম্যাচে লিভারপুল-নেপোলি দু’দলের জন্যই ছিল বাঁচামরার। এতে মোহাম্মদ সালাহর লক্ষ্যভেদে এ্যানফিল্ডে ১-০ গোলে জিতেছে স্বাগতিক লিভারপুল। ম্যাচটি ড্র হলেই পরের রাউন্ডে চলে যেত দিয়াগো ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাব নেপোলি। কিন্তু হেরে যাওয়ায় লিভারপুলের সমান পয়েন্ট পেয়েও বিদায় নিতে হয়েছে ইতালিয়ান ক্লাবটিকে। গ্রুপে ছয়টি করে ম্যাচ শেষে তিন জয় ও দুই ড্রয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া পিএসজির পয়েন্ট ১১। আর তিনটি করে জয় ও হারে গ্রুপ রানার্সআপ লিভারপুলের পয়েন্ট ৯। নেপোলির পয়েন্টও লিভারপুলের সমান ৯। মুখোমুখি লড়াইয়ে দু’দলই নিজেদের মাঠে সমান ব্যবধানে জিতেছে। তাদের গোল ব্যবধানও সমান। কিন্তু সবমিলিয়ে কম গোল করায় বাদ পড়তে হয়েছে নেপোলিকে। তারা করেছে ৭ আর লিভারপুল করেছে ৯ গোল। আগেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়া সার্বিয়ার ক্লাব রেড স্টার বেলগ্রেডের পয়েন্ট ৪। আগের ম্যাচে লিভারপুলকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় এক পা দিয়ে রেখেছিল পিএসজি। বেলগ্রেডের বিরুদ্ধে ড্র করলেও চলতো তাদের। কিন্তু ড্র নয়, দুর্দান্ত জয় নিয়েই পরের রাউন্ডের টিকেট কেটেছে টমাস টাচেলের দল। ম্যাচের ১০ মিনিটে পিএসজিকে এগিয়ে দেয়া এডিনসন কাভানির গোলটিতে মূল কৃতিত্ব এমবাপের। রাশিয়া বিশ্বকাপে গতিতে আলো ছড়ানো ফরাসী ফরোয়ার্ড বাঁদিক দিয়ে দ্রুত এগিয়ে এক ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে ডি বক্সে পাস দেন। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে লক্ষ্যভেদ করেন উরুগুইয়ান তারকা। ৪০ মিনিটে দারুণ গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নেইমার। এবারও এমবাপের সহযোগিতায় গোলটি পায় ফরাসী জায়ান্টরা। খেলার ধারার বিপরীতে ৫৬ মিনিটে গোল খেয়ে বসে পিএসজি। ভলিতে বল ঠিকানায় পাঠান সার্বিয়ান ডিফেন্ডার মার্কো গোবেলিচ। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে মারকুইনহোসের গোলে নকআউট পর্বের টিকেট প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় পিএসজির। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে নেইমারের বাড়ানো বলে গোল করেন দু’টিতে অবদান রাখা এমবাপে। ম্যাচ শেষে পিএসজির ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা বলেন, আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এ বছর আমি একটু ভয় পেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল যে এবার আমরা শেষ ষোলোয় উঠতে পারব না। কারণ এটা কঠিন ছিল। তবে কঠিন পরিস্থিতির মাঝে ইতিবাচক কিছু ছিল। শেষ ম্যাচগুলোয় আমরা যা করেছি তাতে আমি খুশি। আমার মনে হয়, নাপোলিতে হওয়া ম্যাচের পর মানসিকভাবে আমরা অনেক বদলেছি। তিনি আরও বলেন, নেপোলিতে ড্র করায় আমার ভুল ছিল। লিভারপুল ম্যাচের জন্য আমি খেলোয়াড়দের অনেক উজ্জীবিত করেছি কারণ আমার মনে হয়েছিল তাদের এটা দরকার। আমরা যদি লিভারপুলের সঙ্গে ড্র করতাম তাহলে প্রায় বাদ পড়ে যেতাম। কিন্তু আমরা এমন একটা দলের বিপক্ষে জিতি যারা এ মৌসুমে ফাইনালে উঠতে পারে। আমরা তাদের হারাই। এদিকে নেপোলির বিরুদ্ধে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের শুরুতেই দলকে এগিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন সালাহ। কিন্তু ডি বক্সে ফাঁকায় পেয়েও ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। তবে এই হতাশা মিসরীয় তারকা দূর করেন ৩৪ মিনিটে। জেমস মিলনারের পাস পেয়ে ডি বক্সে দ্রুত এগিয়ে একজনের বাধা এড়িয়ে দুরূহ কোণ থেকে দুর্দান্ত গোল করেন ইপিএলে দিনকয়েক আগে হ্যাটট্রিক করা সালাহ। শেষ পর্যন্ত তার করা এই গোলে ভর করেই শেষ ষোলোর টিকেট কাটে লিভারপুল। আর তল্পিতল্পা গোছানো নেপোলিকে এখন খেলতে হবে দ্বিতীয় সারির আসর ইউরোপা লীগে।
×